প্রতি বিভাগে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের অফিস হবে: সারজিস আলম
এ মাসে শহিদ পরিবারকে ফের ৩০ লাখ টাকা সহযোগিতা
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সম্পাদক ও নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশনের জন্য প্রত্যেক বিভাগে একটি করে অফিস নেওয়া হবে। যাতে অর্থের জন্য নিহত ও আহতদের পরিবারের সদস্যদের ঢাকায় আসতে না হয়। আবার তাদের পরিবারের সদস্যদের কেউ ফাউন্ডেশনে এসে যেন খারাপ ব্যবহার না পান, তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ খারাপ ব্যবহার করলে তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বুধবার ঢাকায় জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
জুলাই আন্দোলনে শহিদের সংখ্যা সরকারি হিসাবে ৮২৬ জন, তার মধ্যে ৬২৮ জনের পরিবারকে সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। বাকি আছে ১৯৮ জনের শহিদ পরিবার। এমনটি জানিয়ে সারজিস আলম বলেন, ব্যাংকে ফাউন্ডেশনের হিসাবে জমা ছিল ১০৯ কোটি ২০ লাখ ২৩ হাজার টাকা। তা থেকে এখন পর্যন্ত সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে ৪৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা। বর্তমানে অ্যাকাউন্টে জমা আছে ৬১ কোটি টাকার মতো। এ আন্দোলনে আহত ১১ হাজার ৩০৬ জনের মধ্যে মাত্র ১৬০১ জনকে সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। কারণ, আমরা সরকারের কাছে আহতদের একটা লিস্ট চেয়েছিলাম, তারা এটি দিয়েছেন। আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসাপত্রে চিকিৎসকদের সত্যায়ন লাগবে জানিয়ে সারজিস বলেন, কারণ অনেকে চিকিৎসাপত্র জালিয়াতি করে সুযোগ সুবিধা নিতে চেয়েছিলেন। এ মাসে শহিদ পরিবারকে আবারও সরকার ঘোষিত বড় অঙ্কের (৩০ লাখ) টাকা আর্থিক সহযোগিতা করা হবে। আহত অনেকে এ আন্দোলনে সম্পৃক্ত নন, কিন্তু তিনিও সুযোগ-সুবিধা নিতে এসেছেন।
সারজিস আলম আরও বলেন, ফাউন্ডেশনের কার্যালয় গোছানো, তালিকা যাচাইসহ এমআইএসের কাজের ধরনের কারণে সহায়তা দেওয়ার গতি ধীর ছিল। তবে তা কাটিয়ে উঠছি আমরা। এ ছাড়া শহিদ পরিবারে সহায়তার টাকা কে গ্রহণ করবেন তা নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। যিনি শহিদ, তার মা-বাবা ও স্ত্রী-সন্তানের মধ্যে সহায়তার টাকার কে কত শতাংশ পাবেন, তা নিয়েও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। আবার প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও সবাই নিয়ে আসতে পারছেন না।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শহিদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের জন্য অর্থ সহায়তার পরিমাণ বাড়ানো হবে। এ মাসেই এসংক্রান্ত ঘোষণা দেওয়া হবে। পাশাপাশি শহিদ পরিবারের সদস্য ও আহত ব্যক্তিদের কর্মসংস্থান, প্রয়োজন অনুযায়ী সম্মানি ভাতা, আহতদের আজীবন চিকিৎসা সুবিধার ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া আহত ব্যক্তিদের আঘাতের মাত্রা অনুযায়ী ক্যাটাগরি করে সহায়তা দেওয়া হবে। অর্থ সহায়তা পাওয়ার ক্ষেত্রে যেসব কাগজপত্র লাগবে, সেটিও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। শহিদদের ক্ষেত্রে মৃত্যুসনদ লাগবে। যদি তা না থাকে, তাহলে স্থানীয় প্রশাসনের একটি প্রত্যয়নপত্র লাগবে। শহিদের জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদের কপি লাগবে। যিনি নমিনি হবেন, তার পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধনের কপি লাগবে। সন্তানের ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধনের কপি লাগবে। যদি স্ত্রী থাকেন, তাহলে তার পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদের কপি লাগবে।
আহত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ফাউন্ডেশনের একটি ফরম পূরণ করতে হবে। যে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন, সেখানকার চিকিৎসকের সত্যায়িত কপি লাগবে। হাসপাতালে ভর্তির ফরম বা ছাড়পত্র চিকিৎসকের সত্যায়নসহ লাগবে। আহত ব্যক্তি বা নমিনির পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদের কপি লাগবে।