Logo
Logo
×

শেষ পাতা

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধ

প্রস্তুত হচ্ছে দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল

আলমগীর মিয়া

আলমগীর মিয়া

প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

প্রস্তুত হচ্ছে দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যা, গণহত্যা, গুমসহ মানবতাবিরোধী নানা অপরাধের বিচারে আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠিত হচ্ছে। এ লক্ষ্যে কাজ করছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। পুরাতন হাইকোর্ট ভবনে অবস্থিত ট্রাইব্যুনালের পাশে দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালের অবকাঠামোগত কাজ শুরু হয়েছে। তবে কবে নাগাদ ট্রাইব্যুনাল গঠন হবে-এখনো তা ঠিক হয়নি। মূলত বিচারকাজ সুষ্ঠু ও দ্রুত সম্পন্ন করার লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রোববার দুপুরে প্রসিকিউটর বিএম সুলতান মাহমুদের নেতৃত্বে প্রসিকিউশনের একটি টিম দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনালের স্থান পরিদর্শনে যান। প্রথম ট্রাইব্যুনালের স্থানও ঘুরে দেখে ওই টিম। এ সময় সুলতান মাহমুদ বলেন, দ্বিতীয় ট্রাইব্যুনাল গঠিত হতে পারে। এর কাজের অগ্রগতি দেখতে এসেছি। ট্রাইব্যুনাল-২ কেন প্রয়োজন-জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা জানেন, সারা দেশে মানবতাবিরোধী অপরাধ হয়েছে। এটার ব্যাপকতা বিস্তৃত। এজন্য একটা ট্রাইব্যুনাল যথেষ্ট নয়। সেই জন্য প্রসিকিউশন, প্রশাসনিক দপ্তরের জন্য জায়গার প্রয়োজন আছে। সে হিসাবে আমরা সব কিছু প্রস্তুত করে রাখছি। ভবিষ্যতে যখন প্রয়োজন পড়বে, তখন এখানে চলে আসব। পুরাতন ভবন, যেখানে সংস্কার কাজ হয়েছে, সেখানে কবে নাগাদ প্রথম ট্রাইব্যুনাল স্থানান্তর হচ্ছে-জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটি পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে, যে কোনো সময় স্থানান্তর হতে পারে।

এদিকে প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ রোববার রাতে এক খুদে বার্তায় জানান, ‘আজকে পুরাতন ভবন ঘুরে দেখেছি। সেগুলোর নির্মাণ কাজ চলছে। কোথায় ট্রাইব্যুনাল বসতে পারে, বিচারকদের কক্ষ, প্রসিকিউশনের কক্ষ কোথায় দেওয়া যেতে পারে-এগুলো আলোচনা করেছি।’

প্রসিকিউশন জানায়, এ পর্যন্ত ৩০০টির বেশি অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে জমা পড়েছে। এর মধ্যে ১৬৮টি অভিযোগ যাচাই-বাছাই করে তদন্ত সংস্থায় পাঠানো হয়েছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। তার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ জমা পড়লেও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধে এখন পর্যন্ত একটি মামলা হয়েছে। তাকে গ্রেফতার করতে ইন্টারপোলে রেড নোটিশ (লাল সতর্কতা) জারি করার জন্য বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবি) কাছে ১৩ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়। অন্য মামলায় ১৭ অক্টোবর সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।

মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য ২০১০ সালে গঠন করা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। যার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ওই বছরের ২৫ মার্চ। ২০১২ সালের ২২ মার্চ আরেকটি ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়, যা ট্রাইব্যুনাল-২ নামে পরিচিতি পায়। এরপর ২০১৫ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর দুই ট্রাইব্যুনালকে একীভূত করে একটি ট্রাইব্যুনাল করা হয়।

পরে ২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যা-গণহত্যা, গুমসহ নানা ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হয়। ১৪ অক্টোবর হাইকোর্টের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন, ১৯৭৩ (১৯৭৩ সালের আইন নং ২১)-এর ধারা ৬-এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান এবং হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি শফিউল আলম মাহমুদ ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীকে ওই ট্রাইব্যুনালের সদস্য হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হলো। এর আগে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর হিসাবে ৭ সেপ্টেম্বর নিয়োগ দেওয়া হয়। আইনজীবী তাজুল ইসলাম ছাড়া ট্রাইব্যুনালে আরও পাঁচ আইনজীবীকে প্রসিকিউটর পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর আগে ১৮ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা পুনর্গঠন করা হয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম