Logo
Logo
×

শেষ পাতা

রামুতে বিজয়মেলা

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রতিনিধি জুয়ায় যুক্ত!

Icon

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রতিনিধি জুয়ায় যুক্ত!

প্রতীকী ছবি

কক্সবাজারের রামুতে বিজয়মেলায় র‌্যাফেল ড্র আয়োজনের নামে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি জুয়াড়িচক্র। আর তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরাও। বৃহস্পতিবার থেকে রামু খিজারী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ‘মুক্তিযুদ্ধের বিজয় উৎসব’ নামে সপ্তাহব্যাপী এ মেলা শুরু হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রতিনিধিদের দাবি, আন্দোলনের সময় খরচ হওয়া টাকা তুলতে তারা জুয়াড়িদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। তবে সবকিছু দেখেও কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

জানা গেছে, বিজয়মেলার শুরুর দিন থেকে ‘মায়ের দোয়া লাকি কুপন’ নামে র‌্যাফেল ড্রর টিকিট বিক্রি শুরু করে জুয়াড়িচক্র। আবদুল করিম, ইসমাইল ও বাবুলের নেতৃত্বে উপজেলার আনাচে-কানাচে প্রতিদিন অর্ধশত গাড়িতে মাইকিং করে বিক্রি করা হচ্ছে এই টিকিট। আকর্ষণীয় পুরস্কারের ঘোষণা দিয়ে সারাদিন টিকিট বিক্রি শেষে রাত ১২টার পর অনুষ্ঠিত হয় ড্র অনুষ্ঠান। মধ্যরাত পর্যন্ত চলমান ড্রতে নগদ টাকা, মোটরসাইকেল, স্বর্ণালংকার, টিভি, ফ্রিজসহ লোভনীয় পুরস্কার দেওয়া হয়। এর লোভে পড়ে প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ হুমড়ি খেয়ে কিনছেন লটারির টিকিট। সর্বোচ্চ এক থেকে দেড় লাখ টাকার পুরস্কার দিয়ে জুয়াড়িরা এভাবে প্রতি রাতে হাতিয়ে নিচ্ছে পাঁচ লক্ষাধিক টাকা। এ কাজে সহযোগিতা করছে রাব্বি আমিন, জসিম, পারভেজসহ বেশ কয়েকজন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি।

রামু খিজারী উচ্চবিদ্যালয়সংলগ্ন স্থানীয় নুরুল আমিন বলেন, ‘লটারিতে প্রথমদিন বড় পুরস্কার ছিল একটি ফ্রিজ, দ্বিতীয় দিন নগদ ৫০ হাজার টাকা এবং তৃতীয় দিন ছিল মোটরসাইকেল। এই পুরস্কারের আসায় প্রতিদিনই টিকিট কিনেছি। কিন্তু এখনো একটি ছোট পুরস্কারও পাইনি।’

মায়ের দোয়া লাকি কুপনের আবদুল করিম বলেন, ‘লটারির কার্যক্রম বৈধ না অবৈধ, এ ব্যাপারে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। আমরা কেবল লটারি পরিচালনার বিষয়টি দেখি।’

রামু উপজেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি মো. জসিম বলেন, ‘আমি চট্টগ্রাম কলেজে পড়ি। আন্দোলনের সময় সব টাকা ঘর থেকে এনে খরচ করেছি। আমরা এখন তাদের সঙ্গে (জুয়াড়িদের) যুক্ত রয়েছি অর্ধেক-অর্ধেক শেয়ারে। আমরা যখন অনুমতি নেওয়ার জন্য ডিসির সঙ্গে দেখা করেছি, তখনও লটারি আয়োজনের কথা বলেছি। এটা ওইরকম কোনো জুয়া নয়। সবখানেই চলে।’

রামু কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী ও উপজেলা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রতিনিধি রাব্বি আমিন বলেন, ‘মেলা ও লটারি আয়োজনের ক্ষেত্রে আমরা আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে রয়েছি। এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা সমন্বয়করা অবগত রয়েছেন।’

কক্সবাজার জেলার সমন্বয়ক সাহিদুল ওয়াহিদ সাহেদ বলেন, ‘মেলায় যাওয়ার জন্য জসিম ও রাব্বি আমাকে দাওয়াত দিয়েছে। কিন্তু সেখানে কী হচ্ছে, এ বিষয়ে আমি অবগত নই।’

সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি বলেন, ‘আমরা কোনো অন্যায় কাজ, ইলজিক্যাল কাজ সমর্থন করি না। সেটা যে নামেই করুক। আমাদের অবস্থান এর বিপক্ষেই থাকবে।’

তবে কক্সবাজার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ বলেন, ‘পুলিশ কোনো মেলার অনুমতি দেয় না। অনুমোদন দেওয়া কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে পারেন।’

কক্সবাাজার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, ‘রামুতে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে লটারি চললে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Jamuna Electronics
wholesaleclub

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম