অ্যান্টিগা টেস্ট
রান পাহাড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ক্রীড়া প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
হাসান মাহমুদের কাল দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে ফ্লিক করে চার মারেন আলজারি জোসেফ। পরের বলে মধুর প্রতিশোধ নিয়ে জোসেফকে গালিতে ক্যাচ বানিয়ে ফেরান হাসান। তার আগে তিনি প্রথম ওভারে জশুয়া ডি সিলভাকে এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলেন। শুরুর দুই ওভারে হাসান দারুণ সম্ভাবনা দেখালেও স্বাগতিকদের হতাশায় পোড়ান জাস্টিন গ্রিভস ও কেমার রোচ। অষ্টম উইকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে রেকর্ড ১৪০ রানের জুটি গড়ে তারা দলকে রান পাহাড়ে তোলেন। রোচ ৪৭ করে আউট হলেও তিন অঙ্কের জাদুকরি ফিগারে পৌঁছান গ্রিভস। অ্যান্টিগায় স্যার ভিভ রিচার্ডস স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্টের দ্বিতীয়দিনের দ্বিতীয় সেশন শেষে ক্যারিবীয়রা প্রথম ইনিংসে করতে পারে আট উইকেটে ৪১৫ রান। দুই সেশন মিলে তিন উইকেট নেন হাসান। গ্রিভস ১০৯ এবং জেডেন সিলস এক রানে ব্যাট করছিলেন। প্রথমদিন শেষে স্বাগতিকরা পাঁচ উইকেট হারিয়ে করতে পারে ২৫০ রান।
কাল সকালে দুই উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের পেসারদের মধ্যে রেকর্ড গড়েছেন হাসান। টেস্ট অভিষেকের বছরেই বাংলাদেশের পেসারদের মধ্যে এক পঞ্জিকাবর্ষে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড এখন তারই। গত মে মাসে শ্রীলংকার বিপক্ষে যাত্রা শুরু করে আলজারি জোসেফকে ফেরানো পর্যন্ত ১৩ ইনিংসে হাসানের শিকার ছিল ২৫টি। ইনিংসে দুবার পেয়েছেন পাঁচ বা এর বেশি উইকেট। ২০০৮ সালে ১৪ ইনিংসে ২৩ উইকেট নিয়েছিলেন শাহাদাত হোসেন।
কাল হাসানের প্রথম ওভারে ভেতরে ঢোকা ডেলিভারি ব্যাটে খেলতে পারেননি জশুয়া ডি সিলভা। জোরাল আবেদনে সাড়া দিয়ে এলবিডব্লু দেন আম্পায়ার। এরপর অফ স্টাম্প ঘেঁষে হাসানের গুড লেংথ ডেলিভারি ভেতরে ঢোকার মুখে লেগে খেলার চেষ্টা করেন জোসেফ। একটু আগেভাগে শট খেলার মাশুল দেন ক্যাচ দিয়ে। ব্যাটের কানায় লেগে গালি দিয়ে তীব্র গতিতে বেরিয়ে যাওয়া বল লাফিয়ে মুঠোয় নেন জাকির। এরপর দ্বিতীয় সেশনের খেলা শেষ হওয়ার আগে তিনি ফেরান রোচকেও। তবে তার আগেই অষ্টম উইকেটে বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বোচ্চ ১৪০ রান তুলে ফেলেন। এই ইনিংসেও যৌথভাবে এটাই সর্বোচ্চ রানের জুটি। রোচ আউট হওয়ার পরই ১০ মাস পর টেস্টে ফেরা গ্রিভস স্বপ্নের সেঞ্চুরি পেয়ে যান বাউন্ডারি মেরে। ক্যারিয়ারের তৃতীয় টেস্টেই প্রথমবারের মতো সেঞ্চুরি তুলে নেন গ্রিভস।
এর আগে প্রথম দিনের খেলা শেষে বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা হাসতে হাসতেই মাঠ ছেড়েছিলেন। আগের দুই টেস্টের প্রথমদিনটা যে বাংলাদেশের জন্য ছিল বিভীষিকাময়। এবার একটু ভিন্ন হাওয়ার ছোঁয়া পেয়েছে অবশ্য বাংলাদেশ। যদিও যেভাবে শুরু করেছিল বাংলাদেশ সেভাবে তাদের চেপে ধরে রাখতে পারেনি। প্রথমদিন শেষে খানিকটা এগিয়ে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজই।
টেস্ট নেতৃত্বের অভিষেকে মিরাজ টস জিতলে গোটা দলই যেন হাফ ছেড়ে বাঁচে। আগের দুবার এই মাঠে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বিধ্বস্ত হয়েছিল বাংলাদেশ। একবার প্রথম ইনিংসে ৪৩, আরেকবার ১০৩ রানে গুটিয়ে যাওয়া দলের ব্যাটসম্যানদের এবার শুরুর পরীক্ষায় নামতে হয়নি টস জিতে বোলিং নেওয়ায়। তবে বোলিংয়ে যেভাবে আরও ভালোর প্রত্যাশা ছিল দলের সেটা করতে পারেনি সফরকারীরা। তবে ক্যারিবীয়দের দুই ব্যাটারকে নব্বইয়ের ঘরে আউট করে কিছুটা খুশিই ছিলেন বাংলাদেশ দলের বোলাররা। দারুণ ব্যাটিং করে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির আশা জাগিয়েছিলেন মিকাইল লুই ও আলিক আথানেজ। কিন্তু সুবাস পেয়েও দুজনই হারিয়ে ফেলেন তা। ৯০ রানে তাইজুল ইসলামের বলে স্লিপে মিরাজকে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যাওয়া লুই শেষ পর্যন্ত আউট হন ২১৮ বল খেলে ৯৭ রানে। আথানেজ আউট হতে পারতেন পাঁচ রানে। কিন্তু ক্যাচ নেওয়ার চেষ্টায় ঠিকমতো বলের নিচে যেতে পারেননি তাসকিন আহমেদ। বাঁ-হাতি এই ব্যাটসম্যান আউট হন ১৩০ বল খেলে ৯০ রান করে। সব মিলে প্রথমদিনে প্রথম ও শেষ সেশনে দুটি করে এবং দ্বিতীয় সেশনে একটি উইকেট নিতে পারে সফরকারীরা।