সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বৈঠক
নির্বাচনি কর্মকর্তাদের সুরক্ষা চায় ইসি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের ভোটের পর সরকার বা রাজনৈতিক দল যেন হয়রানি করতে না পারে, সেজন্য তাদের সুরক্ষা দেওয়ার প্রস্তাব করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়। বুধবার নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে ইসির কর্মকর্তারা এ প্রস্তাব দেন। নির্বাচন কমিশনের প্রশাসনিক ও আর্থিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা এবং নির্বাচনে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর এখতিয়ারের বাইরে হস্তক্ষেপ বন্ধেরও তারা দাবি জানান। নির্বাচনি অনিয়মে অভিযুক্তদের ইসি যে সাজা দিয়ে থাকে, তা বাস্তবায়নের ওপর তারা জোর দেন। এসব বিষয় অন্তর্ভুক্তের প্রস্তাব করেন তারা। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
অংশীজনদের সঙ্গে সংলাপের অংশ হিসাবে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্যরা। এতে ইসি সচিব শফিউল আজিমের নেতৃত্বে কমিশনের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়।
বৈঠকে আলোচনার বিষয়ে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, নির্বাচন কমিশনের অগাধ ক্ষমতা থাকলেও বিগত দিনে তা প্রয়োগে সমস্যা ছিল। এ সমস্যা দূরীভূত করতে হবে। তিনি বলেন, ইসি কর্মকর্তারা অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। কী বিষয়ে আমাদের মনোযোগ দেওয়া দরকার এবং অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার, সে মতামত নিয়েছি। তাদের লিখিত মতামত দিতে বলা হয়েছে।
নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি সম্পর্কে ইসি কর্মকর্তাদের অগাধ অভিজ্ঞতা রয়েছে উল্লেখ করে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমাদের আইনকানুন, বিধিবিধানকে আরও শক্তিশালী, কার্যকর করা দরকার। কমিশনের ক্ষমতা এবং কার্যকারিতা কীভাবে বাড়ানো যায়, সেগুলোর ব্যাপারে অভিজ্ঞতার আলোকে তারা পরামর্শ দিয়েছেন। মাঠ প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ যারাই নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করেন, তারা যেন আরও সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারেন, সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো যথাযথভাবে বিধিবিধানে প্রয়োগ করার বিষয়। নির্বাচন কমিশনকে সংবিধান ও আদালতের মাধ্যমে অগাধ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। আপিল বিভাগের একটা রায়ে বলা হয়েছে, নির্বাচন কমিশনের অন্তর্নিহিত ক্ষমতা আছে। সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের খাতিরে তারা বিধিবিধানের সঙ্গে নতুন বিধান সংযোজনও করতে পারে।
বৈঠকের পর ইসি সচিব শফিউল আজিম বলেন, সংবিধানে নির্বাচন কমিশনকে যে ক্ষমতা দেওয়া আছে, সেটি কীভাবে আইনের মাধ্যমে আরও সুনির্দিষ্ট করা যায়, সেই প্রস্তাব দিয়েছি। আরেকটা হলো নির্বাচন ব্যয় ও নির্বাচনি অপরাধের বিচার যাতে আরও সুনির্দিষ্ট করা যায় এবং নির্বাচনের সময় কোনো কুকর্ম করে থাকলে পরবর্তী সময়েও যেন বিচার করা যায়, সেই ক্ষমতা যেন ইসির থাকে, সেই সুপারিশও করেছি। তিনি আরও বলেন, আমাদের মিডিয়া যাতে নিরপেক্ষ আচরণ করে। ভালোকে ভালো, মন্দকে মন্দ বলবে, সেটা আমরা আশা করি। সবাই নিরপেক্ষ থাকলে সুন্দর নির্বাচন করা সম্ভব। তিনি বলেন, নির্বাচনে হস্তক্ষেপ কোত্থেকে কীভাবে হয় এবং আইনগত কর্তৃত্বের বাইরে নির্বাচনকে কেউ কীভাবে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করে, এগুলো নিয়ে আমরা খোলামেলা আলোচনা করেছি যাতে সংস্কার কার্যক্রম ফলপ্রসূ হয়।