দেশ সংস্কার করবে নির্বাচিত প্রতিনিধি: হাফিজ উদ্দিন
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
অল্পসময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশন সংস্কার করে জাতীয় নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ভোটের পর নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি দেশ সংস্কার করবে। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সোমবার ‘৭ নভেম্বর আকাঙ্ক্ষা ও আজকের রাজনীতির প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল এ সভার আয়োজন করে।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। এরপর দেশের কৃতীসন্তান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে। এই সরকারের প্রধান কাজ হচ্ছে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। কিন্তু যে যায় লঙ্কা, সেই হয় রাবণ। তারা (অন্তর্বর্তী সরকার) এখন ১০-২০ বছর ক্ষমতায় থাকতে চায়। ইতোমধ্যে আওয়ামী ঘরানার অনেক লোক অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে ঢুকে গেছে।’
বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, যারা আওয়ামী লীগের কুশীলব ছিল, ১৬ বছর ধরে হালুয়া-রুটি খেয়েছে, সুবিধা নিয়েছে, তারা এখনো বহাল আছে। তাদের সরাতে হবে। এটি শুধু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব নয়, রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্বও বটে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের কর্মকাণ্ড এবং তাদের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘ছাত্ররা আমাদের সন্তান সমতুল্য, তাদের কর্মকাণ্ড দেখলে মনে হয় দেশটা তারাই স্বাধীন করেছে, আর কেউ জীবন দেয়নি। ১৫ বছরে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর হাজারো নেতাকর্মী জীবন দিল, তাদের হিসাবনিকাশ কে করবে?’
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে বিএনপি ও বিরোধী দলের অকুণ্ঠ সমর্থন-অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখ করে হাফিজ উদ্দিন বলেন, এই আন্দোলনে বিএনপিরই ৪২২ জন শহিদ হয়েছেন। আমার ভোলায় ১০ জন শহিদ হয়েছেন। কিন্তু তারা কেউ ছাত্র না।
‘শুধু নির্বাচনের জন্য দুই হাজার মানুষ জীবন দেয়নি’-বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক সমন্বয়কের এ বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে হাফিজ বলেন, ‘ভোট কি এত সোজা? ভোট তো গণতন্ত্রের প্রতীক। ভোটের জন্যই তো ‘৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করেছি। ২৪-এর লড়াই তো হয়েছে বাকস্বাধীনতা, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রধান উপাদান। আর তারা বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য দেশ স্বাধীন হয়নি’। তাহলে কীসের জন্য যুদ্ধ, এত আত্মত্যাগ? ভোট কি এতই হেলাফেলার বস্তু? অর্থাৎ তারা (বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন) গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণে বিশ্বাসী নয়। তারা হয়তো ভাবে দু-একটা মিছিল করলে দেশ ঠিক হয়ে যাবে, এগুলো তাদের গুরুরা হয়তো শেখায়।’
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক খানের পরিচালনায় সভায় আরও বক্তৃতা করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক কর্নেল (অব.) জয়নুল আবেদীন প্রমুখ।