Logo
Logo
×

শেষ পাতা

তাপস ও শমী কায়সার রিমান্ডে

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

তাপস ও শমী কায়সার রিমান্ডে

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানায় ব্যবসায়ী ইসতিয়াক হত্যাচেষ্টা মামলায় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল গান বাংলার চেয়ারম্যান কৌশিক হোসেন তাপস ও অভিনেত্রী শমী কায়সারকে ৩ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে পুলিশ। বুধবার শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান এ আদেশ দেন। এদিন তাদের আদালতে হাজির করে তাপস ও শমী কায়সারের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উত্তরা পূর্ব থানার এসআই মৃত্যুঞ্জয় পন্ডিত মিঠুন।

রাষ্ট্রপক্ষে জামিন নামঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক ফারুকী। অপরদিকে আসামিদের রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন অ্যাডভোকেট মাহবুবুল আলম। 

শুনানিতে যা হলো : এদিন বিকালে রিমান্ড শুনানিকালে তাদের এজলাসে তোলা হয়। শুনানিতে ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, তাপস একজন তবলাবাদক। ক্ষমতার অপব্যবহার করে গান বাংলা চ্যানেল সৈয়দ শামসুদ্দিন আহমেদের মালিকানা থেকে ছিনিয়ে নিয়ে দখলে নেন। ভাবতাম, ওই চ্যানেল চলে কিভাবে। বিজ্ঞাপন নেই। কয়েকজন বিদেশি নারী দোতারা বাজান আর গান গান। তাপসের স্ত্রী বিউটিশিয়ান। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিউটিশিয়ানের কাজ করতেন। সরকারি কনসার্টগুলো তাপস একতরফা নিয়ে নিতেন। তাকে সাহায্য করতেন আশরাফুল আলম খোকন। মাঝে মাঝে তাপস গণভবনে গিয়ে শেখ হাসিনাকে গান শোনাতেন। ওমর ফারুক বলেন, ভারতীয় নায়িকা সানি লিওনের দেশে আসা নিষেধ ছিল। তাকে মেয়ের বিয়েতে বাংলাদেশে আনেন তাপস। এ সময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা কাঠগড়ায় দাঁড়ানো তাপসের মুখের মাস্ক খুলতে বলেন। তখন বিচারক বলেন, কোর্টের কাজ কোর্ট করবে। 

তাপসের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। তিনি বলেন, তাপসের চ্যানেল গান গাওয়ার। জনমত গঠন করে বিভ্রান্ত করার সুযোগ নেই। আর আসামি ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন। তাকে ভিকটিমাইজড করা হয়েছে। এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন গান বাংলার আগের মালিক দাবি করা শামসুদ্দিন আহমেদ। তিনি আদালতকে বলেন, তাপস ও আমানউল্লাহ খান চঞ্চল চৌধুরী বন্দুকের ভয় দেখিয়ে গুলশানে নিয়ে জোর করে সই করিয়ে গান বাংলার মালিকানা লিখে নেয়।

শমী কায়সারের বিষয়ে শুনানিতে ফারুকী বলেন, এ আসামি কোনোভাবে ভাবেননি আজ এখানে এভাবে দাঁড়াবেন। এরা ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখতে সাহায্য করেছেন। হাসিনাকে বাঁচাতে মাঝেমধ্যে নাটক করতেন। আওয়ামী সাংস্কৃতিক জোটের মাধ্যমে বিভিন্ন অনুষ্ঠান, নাটক মঞ্চস্থ করেছেন। কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন চলছিল। তারা বিভিন্ন ব্যানার নিয়ে সেখানে দাঁড়ান। বাঁধনসহ যারা আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন তারা এদের বিরুদ্ধে দাঁড়ান। আন্দোলনকারীদের ওপর গরম পানি ঢালার পরামর্শ দেন। হাসিনাকে খুশি করতে জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে বাজে ভাষায় বক্তৃতা করতেন। শমী কায়সারের আইনজীবী বলেন, স্বনামধন্য অভিনেত্রী। বুদ্ধিজীবী শহিদুল্লাহ কায়সারের মেয়ে। তার রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন প্রার্থনা করেন আইনজীবী। এরপর আদালত শমী কায়সার ও তাপসের বক্তব্য শোনেন। তাপস বলেন, আন্দোলন দমাতে আমি সহযোগিতা করিনি। বলা হচ্ছে, গরম পানি ঢালার জন্য বলেছি। যে অন্যায় আমি করিনি, জোর করে আমার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এ সময় বিচারক জানতে চান, আপনি পলাতক ছিলেন? জবাবে তাপস বলেন, আমি প্রতিদিন গান বাংলার অফিসে গিয়েছি। বাসায়ও অবস্থান করেছি। লোকেশন ট্র্যাকিং করলে পাওয়া যাবে। আমি পলাতক ছিলাম না। শমী কায়সার আদালতকে বলেন, আমার বিরুদ্ধে বলা হচ্ছে আন্দোলন নস্যাৎ করার জন্য ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে সাহায্য করেছি। অর্থ সহায়তা করেছি। অর্থ সহায়তা তো দূরের কথা। তখন ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। নেট চালু করতে ই-কমার্স ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ১৮ জুলাই বৈঠক করেছি। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ অন্যায্যভাবে আনা হয়েছে। জিয়াউর রহমানের বিষয়ে তিনি বলেন, আমি জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে কিছু বলিনি। ব্যক্তিগত আক্রমণ করিনি। একজন সচেতন নাগরিক হিসাবে বলেছি, এত মানুষ মারা গেছেন। পরে আদালত তাদের ৩ দিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন।


Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম