হাসিনা ফ্যাসিবাদের রাজত্ব কায়েম করেছিল : রিজভী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
শেখ হাসিনা দেশের গণতন্ত্রকে পুলিশের বুটের তলায় পিষে ফ্যাসিবাদের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ লুটপাট করায় দেশকে নতুন ভাবে তৈরি করতে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।
শেখ হাসিনা এ দেশের ব্যাংক লুটপাট করেছে, সেই লুটপাটের টাকা শেখ পরিবার লন্ডন-কানাডায় পাচার করেছে। তার লুটপাটের বিরুদ্ধে কেউ যাতে কথা না বলতে পারে, সেজন্যে তিনি গুম, খুন ও ক্রসফায়ারের পদ্ধতি চালু করেছিলেন। প্রায় ৬০০ জন তরুণকে ক্রসফায়ার দিয়ে হত্যা করা হয়েছিল। কত লোককে গুম করেছিল, খুন করেছিল তার কোনো ইয়ত্তা নেই। শনিবার বিকালে তেজগাঁও এলাকায় ডেঙ্গু সচেতনতায় লিফলেট বিতরণকালে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা এ দেশে কোনো হাসপাতাল, প্রাইমারি স্কুল, কলেজ করেননি। যেখান থেকে টাকা মারা যাবে, লুট করা যাবে সেটা করেছেন, লোক দেখানো ফ্লাইওভার, মেট্রোরেল করেছেন। কারণ এগুলো থেকে কাঁচা টাকা লুট করে বিদেশে পালিয়ে যাওয়া যায়, বিদেশে পাচার করা যায়। অথচ তিনি (শেখ হাসিনা) উন্নত হাসপাতাল, প্রাইমারি স্কুল করেননি। যদি করতেন তাহলে হাসপাতালের বারান্দায় রোগী শুয়ে থাকত না।
লিফলেট বিতরণকালে বিএনপির স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, ডা. জাহিদুল কবির, যুবদল নেতা মেহেবুব মাসুম শান্তসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রুহুল কবির রিজভীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ২০ জন সাবেক সামরিক কর্মকর্তা। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এসব সাবেক সামরিক কর্মকর্তা বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলেন।
সাক্ষাৎকালে রিজভী বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলে বিচারকরা অনেকেই রাজনীতিবিদদের মতো কথা বলেছেন। সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিকের কথা শুনে মনে হতো তিনি আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য। সাবেক প্রধান বিচারপতিকে তরবারি উপহার দিয়েছেন সাবেক গোয়েন্দা বাহিনীর প্রধান। ছাত্রলীগের ছেলেরা গিয়ে ফুল দিয়েছেন। পৃথিবীর কোথাও এমন নজির নেই। কর্তৃত্ববাদী সরকার তার কর্তৃত্ব নিশ্চিত করতে গিয়ে আইন, বিচার, প্রশাসন সবকিছুকে একাকার করেছিল। তিনি বলেন, ‘একদিকে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে, অন্যদিকে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে নিশ্চিত করতে হবে। এই দুটি বিষয়কে সামনে রেখেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।’ ভারতের সঙ্গে সীমান্ত নিয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘সীমান্তে হত্যা হচ্ছে প্রতিদিন। এক দিন দুই দিন পরপর ঠাকুরগাঁয়ের সীমান্ত, লালমনিরহাটের সীমান্ত, হবিগঞ্জের সীমান্ত রক্তাক্ত হচ্ছে। ফেলানীর মতো অনেক কিশোরীর লাশ কাঁটাতারের ওপর ঝুলেছে। কিন্তু গত সরকার তার একটা প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে পারেনি।’ দলীয় সূত্র জানায়, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. জহুরুল আলম, কর্নেল (অব.) আব্দুল হক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) আইয়ুব, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) হাসিনুর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) নওরোজ, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মুস্তাফিজ, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) রাশেদ, মেজর (অব.) কোরবান আলী, মেজর (অব.) ছাব্বিরসহ ২০ জন সাবেক সামরিক কর্মকর্তা বৈঠকে অংশ নেন।