সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক
বেআইনিভাবে নিয়োগ পাওয়া ৫৭৯ কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডে (এসআইবিএল) এস আলম গ্রুপের দখলদারিত্বের সময় নিয়োগ দেওয়া ৫৭৯ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করেছে ব্যাংকটির বর্তমান পর্ষদ। ব্যাংকের এ সিদ্ধান্ত ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর করা হয়েছে। এই কর্মকর্তাদের বেশিরভাগই চট্টগ্রামের পটিয়া এলাকার। এস আলম গ্রুপের কর্ণধার সাইফুল আলম মাসুদের গ্রামের বাড়ি পটিয়া হওয়ায় ওই অঞ্চল থেকে ব্যাংকটিতে অনেক কর্মকর্তাকে বেআইনিভাবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
এসআইবিএলের আগের পর্ষদ বাতিল করে নতুন পর্ষদ পুনর্গঠন করার পর ব্যাংকটি বেআইনিভাবে নিয়োগ দেওয়া কর্মীদের শনাক্ত করা শুরু করে। প্রক্রিয়াটি শেষ হলে বৃহস্পতিবার ব্যাংকটির মানবসম্পদ বিভাগ থেকে ওইসব কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার চিঠি দেওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, ব্যাংকটিতে বর্তমানে ৪ হাজার ৭০০ কর্মকর্তা কর্মচারীর মধ্যে প্রায় ২ হাজার চট্টগ্রামের পটিয়া অঞ্চলের। এর মধ্যে ২০২৪ সালে ৫৭৯ কর্মকর্তাকে শিক্ষানবিশ হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এসব নিয়োগে কোনো ধরনের সার্কুলার, পরীক্ষা, সার্টিফিকেট যাচাই-বাছাই করা হয়নি। পরীক্ষা ছাড়াই তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। ফলে পুরো প্রক্রিয়াটি আইনসম্মত ছিল না।
জানা যায়, নিয়োগপত্রের শর্তের ১০ ধারা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যুতি করা হয়েছে। চাকরিকালে কোনো ভুল বা অবহেলায় ভবিষ্যতে ব্যাংক ক্ষতির মুখে পড়লে তার দায় চাকরিচ্যুত কর্মকর্তাকে নিতে হবে। এমন শর্ত দেওয়া হয়েছে চাকরিচ্যুতির চিঠিতে।
২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে অনুষ্ঠিত বিশেষ সভায় এস আলম গ্রুপ সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয়। আগের দিন রাতে ব্যাংকটির তৎকালীন চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও কোম্পানি সচিবকে তুলে নিয়ে যান প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার কতিপয় কর্মকর্তা। ব্যাংকটি দখলের পর চেয়ারম্যান করা হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আনোয়ারুল আজিম আরিফকে।
এসআইবিএলের মালিকানা পরিবর্তনের সময়ই এস আলম গ্রুপ কয়েকজন উদ্যোক্তা ও পরিচালককে বাদ দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করে। এরপর তারা ব্যাংকটি থেকে নামে বেনামে ঋণের আড়ালে বিপুল পরিমাণ টাকা বের করে নেয়। যে কারণে ব্যাংকটি ইতিমধ্যে আর্থিক সংকটে পড়ে।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে এসআইবিএলকে এস আলম গ্রুপের দখল মুক্ত করতে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে নতুন পর্ষদ গঠন করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সেই পর্ষদ এখন ব্যাংকটি পরিচালনা করছে।