সুনামগঞ্জ শহরে নিজের বাসায় মা-ছেলে খুন
রহস্য উদ্ঘাটনে ডিবি ও পিবিআই’র তদন্ত শুরু
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের হাছননগরে নিজের বাসায় নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন মা ও ছেলে। তারা হলেন ফরিদা বেগম (৫০) ও তার ছেলে মিনহাজুল ইসলাম (২০)। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কাজের মহিলা এসে ঘরের মেঝেতে দুজনের রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখে আশপাশের মানুষকে জানান। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। খুনের রহস্য উদ্ঘাটন করতে ডিবি পুলিশ ও সিলেট থেকে পিবিআই এসে কাজ শুরু করেছে বলে জানান সদর থানার ওসি নাজমুল হক। একই সঙ্গে পুলিশও তদন্ত শুরু করেছে। সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
প্রতিবেশী ও স্বজনরা জানান, চার বছর আগে ফরিদা বেগমের স্বামী জাহেদুল ইসলাম মারা যান। তার এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়েকে যুক্তরাজ্য প্রবাসী ছেলের কাছে বিয়ে দেওয়ার পর তিনি এখানেই থাকছেন। বাসায় থাকতেন ফরিদা বেগম ও তার কলেজপড়ুয়া ছেলে মিনহাজুল ইসলাম। সম্প্রতি তার খালাতো বোন নার্গিস বেগম ও তার মাদ্রাসাপড়ুয়া ছেলে ফাহমিদও এই বাসাতেই থাকত। তিনদিন আগে ঢাকা থেকে এই বাসায় আসে নার্গিস বেগমের আরেক ছেলে ফয়সল আহমদ (৩০)। সে মাদকাসক্ত ছিল বলে জানিয়েছেন স্বজন ও প্রতিবেশীরা।
ঘটনার পর ফয়সল ও ফাহমিদ দুই ভাইকে পাওয়া যাচ্ছে না। ফয়সলকে ফোনেও পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্বজনরা। তাদের মা নার্গিস বেগমকে অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ফরিদা বেগমের বোন একই মহল্লার বাসিন্দা ছুফিয়া আক্তার বলেন, রাত ১০টার পরও বোন ফরিদা বেগমের সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে তার। তিনি ফোনের চার্জারের জন্য কল দিয়েছিলেন। ওই সময় বাসায় তার ছেলে মিনহাজুলও ছিল। সকালে আত্মীয়স্বজনরা দুর্ঘটনার খবর জানান। তিনি দেখতে এসে এই অবস্থা দেখেন। নার্গিস বেগমের দুই ছেলেকেই পাওয়া যাচ্ছে না। নার্গিস এখন কিছুই বলতে পারছেন না। নিহত ফরিদা বেগমের চাচাতো ভাই সাজন মিয়া বলেন, সকালে খবর পেয়েই আমরা এখানে এসেছি। মা-ছেলের সঙ্গে একই বাসায় আরও একটি পরিবার থাকত। ওই পরিবারে দুই ছেলে ছিল। ঘটনার পর থেকে তাদের পাওয়া যাচ্ছে না।
সদর থানার ওসি নাজমুল হক বলেন, সকালে খবর পেয়ে তারাও এ বাসায় এসেছেন। নিহতদের আত্মীয় ফয়সল মাদকাসক্ত ছিল। আমরা নিবিড়ভাবে ঘটনা তদন্ত করছি। পিবিআই’র একটি দলও আসছে। তারাও তদন্ত করবেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সুনামগঞ্জের জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ড. মো. ইলিয়াস মিয়া ও পুলিশ সুপার আ ফ ম আনোয়ার হোসেন ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন যুগান্তরকে বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে এমন নৃশংস ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। আশা করছি দ্রুতই রহস্য উদ্ঘাটিত হবে।