ছাত্রলীগ কোনো মিছিল-মিটিং করতে পারবে না: আইজিপি
রংপুর ব্যুরো
প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
পুলিশ প্রধান (আইজিপি) ময়নুল ইসলাম বলেছেন, ছাত্রলীগ এখন নিষিদ্ধ সংগঠন। তাদের কোনো রাজনৈতিক অধিকার নেই। তারা কোনো মিছিল-মিটিং করতে পারবে না। করলে নিষিদ্ধ সংগঠনের বিরুদ্ধে যে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয় তাদের বিরুদ্ধেও সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরই মধ্যে যারা মিছিল করেছেন তাদেরকেও খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে। শনিবার বিকালে রংপুর পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ মিলনায়তনে মেট্রোপলিটন পুলিশের ৬ষ্ঠ প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, নিষিদ্ধ সংগঠন নিষিদ্ধই সত্তা। তাদের অতীত কর্মকাণ্ড দেখে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাদের যে অন্যায় অপকর্ম রয়েছে অবশ্যই সে কর্মকাণ্ডের বিচার করা হবে, তদন্ত হবে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপনাদের সে ব্যাপারে আশ্বস্ত করছি।
বিগত সরকার আমলের শাসন ব্যবস্থাকে স্বৈরাচারী উল্লেখ তিনি বলেন ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে পুলিশ জনগণের কাক্সিক্ষত সেবা দিতে পারেনি। পুলিশ স্বাধীনতা যুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। করোনার সময় পুলিশের মানবিক কার্যক্রম প্রশংসিত হয়েছিল। বর্তমানে আমরা জনগণের আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন করতে পারিনি। তাই আমরা জনগণের আকাঙ্ক্ষার পুলিশ গঠন করতে চাই।’
আইজিপি বলেন, পুলিশের তাদের দায়িত্ব অনুযায়ী কাজ করবে। আমি পুলিশকে বলতে চাই, আপনারা কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাদের মাধ্যমে ব্যবহার হবেন না, আর রাজনীতিবিদদের বলতে চাই আপনারা দলীয় কাজে পুলিশকে ব্যবহার করবেন না।
আইজিপি ময়নুল ইসলাম বলেন, পুলিশে ধারাবাহিকভাবে অনেক পরিবর্তন সূচনা হয়েছে। ব্যাপক হারে কর্মকর্তাদের বদলি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে যোগ্য ও বঞ্চিত পুলিশ কর্মকর্তাদের পদায়ন করা হয়েছে।
পুলিশ প্রধান বলেন, ‘নতুন করে অস্ত্র নীতিমালা করা হচ্ছে। গত ১৫ বছরে যাদের অস্ত্রের লাইসেন্স পাওয়ার কথা ছিল না, তারা অস্ত্রের লাইসেন্স নিয়েছিলেন এবং এই অস্ত্র গণ-অভ্যুত্থানে নিরীহ জনগণের বুকে ব্যবহার করা হয়।
আবু সাঈদসহ অন্যান্য মামলার বিষয়ে আইজিপি বলেন, গণ-অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা আহত-নিহতের ঘটনায় করা মামলাগুলো আমরা সুষ্ঠুভাবে তদন্তের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। আবু সাঈদের মামলাটি পিবিআইয়ের এসপি পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা তদন্ত করছে। এ মামলায় দুই পুলিশসহ ২১ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আব্দুল মজিদের সভাপতিত্বে সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেন রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আমিনুল ইসলাম, রংপুরের ভারপ্রাপ্ত বিভাগীয় কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আজমল হোসেন, পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ট বাসুদেব বণিক, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল, জেলা পুলিশ সুপার শরীফ উদ্দিন, সেনা কর্মকর্তা লে. কর্নেল মাসুদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক সারজিস আলম, রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, কেন্দ্রীয় জামায়াতে ইসলামীর শূরা সদস্য মাহবুবার রহমান বেলাল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুরের সমন্বয়ক ডা. জামিল হোসেন, ইমরান আহমেদ, আবু সাঈদের বড় ভাই আবু হোসেন প্রমুখ। সমাবেশ শেষে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত-নিহত পরিবারের সদস্যদের আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়।