Logo
Logo
×

শেষ পাতা

চট্টগ্রামে নিত্যপণ্যে অস্থিরতা

নানা উদ্যোগের পরও স্বাভাবিক হচ্ছে না দাম

ডিমের দাম কমলেও বেড়েছে পেঁয়াজ, চাল ও ভোজ্যতেলের

Icon

আহমেদ মুসা, চট্টগ্রাম

প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

নানা উদ্যোগের পরও স্বাভাবিক হচ্ছে না দাম

শুল্কছাড়, খোলা বাজারে পণ্য বিক্রিসহ নানা উদ্যোগ নেওয়ার পরও চট্টগ্রামে নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক হচ্ছে না। চাল, পেঁয়াজ ও ভোজ্যতেলসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম উলটো বাড়ছে। কোনো কারণ ছাড়াই গত দুদিনে কেজিপ্রতি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০-১২ টাকা পর্যন্ত। ভোজ্যতেলে দাম বেড়েছে লিটার প্রতি ৩-৪ টাকা। প্রতি বস্তা চালে দাম বেড়েছে ১০০-১৫০ টাকা পর্যন্ত। বেড়েছে মাছের দাম। তবে কিছুটা কমেছে ডিমের দাম। সবজির দামও কিছুটা কমতির দিকে।

বাজারে বিভিন্ন পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে গত দুই মাসে ৬টি পণ্য-চাল, তেল, চিনি, পেঁয়াজ, আলু ও ডিম আমদানিতে শুল্ক ছাড় করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। পাশাপাশি জোরদার করা হয়েছে তদারকি। গঠন করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে টাস্কফোর্স। এরপরও বাড়তি দামে এসব পণ্য কিনতে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠছে। এ অবস্থায় অনেকেই পণ্য না কিনে ফিরে যাচ্ছেন। নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে জেলা প্রশাসনের নেতৃত্বে গঠিত টাস্কফোর্স কমিটি বাজার মনিটরিং জোরদার করেছে। উপজেলা পর্যায়েও টাস্কফোর্স কমিটি ব্যাপকভিত্তিক বাজার মনিটরিং চালাচ্ছে। পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালতও পরিচালনা করছে জেলা প্রশাসন।

এদিকে বৃহস্পতিবার থেকে নগরীর ছয়টি স্পটে সুলভমূল্যে পেঁয়াজ, সয়াবিন তেল, আলু, পটোল, লাউ, কাঁচা পেঁপে ও ডিম বিক্রি করা হচ্ছে। তারপরও দাম স্বাভাবিক হচ্ছে না।

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানি হওয়ার পরও বাজারে পেঁয়াজের দাম আবার বেড়েছে। আমদানিকারকরা কোনো কারণ ছাড়াই পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে নগরীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১০ থেকে ১৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি মানভেদে ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় এবং আমদানি করা পেঁয়াজ মানভেদে ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চালের দামও বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত নতুন করে বেড়েছে। পাহাড়তলী ও চাক্তাই পাইকারি চালের বাজারে অসাধু মিল মালিক ও আড়তদাররা সব ধরনের চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। বেশি বেড়েছে মোটা চাল। চালের দাম বাড়ানোর কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। কোটি টাকার অতিরিক্ত মুনাফা হাতিয়ে নিতে চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। প্রশাসনের উচিত চালের বাজার কঠোরভাবে মনিটরিং করা।

ভোজ্যতেলের বাজারেও নেই স্বস্তি। প্রতি লিটারে ৩ টাকার বেশি বেড়েছে। একাধিক বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা, যা সাত দিন আগেও ১৫৫ টাকা ছিল। পাশাপাশি প্রতি লিটার খোলা পাম তেল বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকা, ক্রেতা সাধারণ সাত দিন আগেও এই তেল ১৪৫ টাকা দিয়ে কিনতে পেরেছে। পাম তেল সুপার প্রতি লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৫২ টাকা করে। এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৪৬ টাকা। আমদানি করা আদা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ ২৮০ টাকা, যা সাত দিন আগে ২৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয়েছে ১৩৫ টাকায়, যা পাঁচ দিন আগেও ১৩২ টাকা ছিল। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি বড় দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা। সপ্তাহ আগে ১০০-১০৫ টাকা ছিল।

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী কামরুল হাছান জানান, পেঁয়াজের আমদানিকারকরা পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। ভোজ্যতেলের দামও কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী। পাশাপাশি উত্তরবঙ্গের মোকামগুলোতে মিলাররা চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এ কারণে আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

বাজারদর : সাগরে মাছ ধরা বন্ধ থাকায় মাছের দাম বেড়েছে। পাঙাশ-তেলাপিয়া ছাড়া বাকি সব মাছ প্রকারভেদে ১৮০ থেকে ৩০০ টাকায় কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে পাঙাশ ১৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৬০ টাকা, লইট্যা ১৭০-১৮০ টাকা, কই মাছ ২০০ টাকা এবং রুই ২৫০-৩০০ টাকা। এছাড়া চিংড়ি মাছ প্রকারভেদে কেজিতে ৬৫০ থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হচ্ছে।

গত সপ্তাহের চেয়ে সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে। প্রতি কেজি গোল বেগুন মানভেদে ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচামরিচ ২৫০ টাকা, টমেটো মানভেদে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, শিম ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, পটোল, ঝিঙ্গা, চিচিঙ্গা, ঢ্যাঁড়শ ও ধুন্দল ৭০ থেকে ৮০ টাকা, শসা মানভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কচুমুখী ৭০ থেকে ৮০ টাকা, আলু ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৭৫ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, প্রতি পিস লম্বা লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম