রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ দাবিতে বঙ্গভবনের সামনে বিক্ষোভ
থমকে যায় মতিঝিল, চরম ক্ষোভ জনতার
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে টানা তৃতীয় দিনের মতো বঙ্গভবনের সামনের সড়কে বিক্ষোভ করেছে একদল মানুষ। বৃহস্পতিবার বিকালে ১৫ থেকে ২০ জনের মতো তরুণ-কিশোর সেখানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন।
তবে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কোনো সমন্বয়ক বা স্বীকৃত কোন সংগঠনের পরিচিত কোনো নেতাকর্মীকে সেখানে দেখা যায়নি। বিকাল ৫টার দিকে বঙ্গবভবনের সামনের সব পয়েন্ট বেরিকেড দিয়ে বন্ধ করে দেন আন্দোলনকারীরা। এতে অফিস শেষে ঘরে ফেরা এবং ঢাকার বাইরে যাওয়া লোকজন চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে আন্দোলনকারীরা শুক্রবার (আজ) বেলা ১১টার মধ্যে রাষ্ট্রপতিকে পদত্যাগের আলটিমেটাম দেন। এরপর অবরোধ তুলে নিয়ে রাস্তা ছেড়ে দিলে প্রায় দেড় ঘণ্টা পর যান চলাচল শুরু হয়। এদিকে, বুধবারের আন্দোলনের পর থেকে বঙ্গভবনের আশপাশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কয়েকগুণ জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। বঙ্গভবনের প্রবেশ মুখে কংক্রিটের ব্লক ও কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকাল ৪টার দিকে কিছু ব্যক্তি বঙ্গভবনের সামনে এসে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের দাবিতে নানা স্লোগান দিতে থাকেন। উৎসুক জনতাও সেখানে এসে ভিড় করতে থাকেন। এরই মধ্যে বঙ্গবভবনের সামনের সব পয়েন্টে ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তা বন্ধ করে দেন বিক্ষোভকারীরা।
সরেজমিন দেখা যায়, ১৫-২০ জনের মতো আন্দোলনকারী কয়েকটি হ্যান্ড মাইক নিয়ে স্লোগান দেন। মাইকে স্লোগানসহ নানা নির্দেশনা দেন আল আমিন আতিয়া নামে এক তরুণ। তিনি নিজেকে তিতুমীর কলেজের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র-জনতা নামের একটি সংগঠনের সদস্য সচিব বলে দাবি করেন।
তিনি বলেন, বুধবার বিপ্লবী ছাত্র-জনতা নামের সংগঠনটি তৈরি করার পর বৃহস্পতিবার অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় বিকালে বঙ্গভবনের সামনে হাজির হন তারা। আল আমিন ছাড়াও এক তরুণীকে হ্যান্ড মাইকে যান চলাচল বন্ধ রাখতে নির্দেশনা দিতে দেখা যায়।
সরেজমিন দেখা যায়, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গাড়ি নিয়ে বের হতে চাইলেও বাধা দেন ওই তরুণীর নেতৃত্বে একদল কিশোর। এ সময় তারা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন। রাজউকের কয়েকজন কর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাস্তা বন্ধে হরতাল বা কোনো ব্লকেড ঘোষণা করা হয়নি। অফিস শেষে বের হওয়ার সময়ই হঠাৎ করে রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। মুহূর্তেই পুরো এলাকা স্থবির হয়ে পড়ে। রোগীবাহী একটি অ্যাম্বুলেন্সের চালক অনুমতি চাইলেও তাকে যেতে দেওয়া হয়নি। সন্ধ্যায় সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন আন্দোলনকারীরা। (আজ) শুক্রবার বেলা ১১টার মধ্যে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগের আলটিমেটাম দেন।
তারা বলেন, এই সময়ের মধ্যে রাষ্ট্রপতি পদত্যাগ না করলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে বিএনপি, জামায়াত, গণঅধিকারসহ সব রাজনৈতিক সংগঠনকে মিছিল নিয়ে বঙ্গভবনের সামনে আসতে বলেন।
এদিকে বুধবারের আন্দোলনের পর থেকে বঙ্গভবনের সামনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে দেখা যায়, বঙ্গভবনের সামনের রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন পুলিশ, র্যাব, সেনাবাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা। এছাড়া আর্মড পুলিশের সদস্যদেরও দেখা গেছে। পাশাপাশি রাস্তার ওপর কংক্রিটের ডিভাইডারও দেওয়া হয়।