খালেদা জিয়ার বাসার সামনে বালুর ‘ট্রাক’
গুলশান থানার সাবেক ওসি ৪ দিনের রিমান্ডে
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাসভবনের সামনে ২০১৩ সালে বালুর ট্রাক রাখার মামলায় গুলশান থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলামের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শুক্রবার শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম ফারজানা শাকিলা সুমু চৌধুরী এ আদেশ দেন।
এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার সাব-ইন্সপেক্টর রায়হানুল ইসলাম সৈকত তাকে আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত রিমান্ডের আদেশ দেন।
এর আগে ২০১৩ সালের ২৮ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার বাড়ির সামনে ট্রাক রাখা ও অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি ও নাগরিক অধিকার হরণের দায়ে শেখ হাসিনাসহ ১১৩ জনকে আসামি করে ৪ অক্টোবর গুলশান থানায় মামলাটি করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) লতিফ হল শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য শরিফুল ইসলাম শাওন।
মামলায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে এক নম্বর এবং দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও এ মামলার উল্লেখযোগ্য আসামির মধ্যে রয়েছেন-সাবেক আইজিপি একেএম শহিদুল হক, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া ও সাবেক এসবি প্রধান মনিরুল ইসলাম।
মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অবৈধ নির্বাচন কমিশন দিয়ে সংসদ নির্বাচনের ঘোষণা দেয় তখনকার আ.লীগ সরকার। নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে বিএনপি আন্দোলন শুরু করে। আন্দোলনের রূপরেখা হিসাবে ২৯ ডিসেম্বর ২০১৩ ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ বিএনপি সমাবেশের ডাক দেয়। যেখানে খালেদা জিয়ার বক্তব্য দেওয়ার কথা। এর আগেই ২৮ ডিসেম্বর গভীর রাতে বালু ভর্তি পাঁচ-ছয়টি ট্রাক খালেদা জিয়ার ফিরোজা বাসভবনের গেটের সামনেসহ আশপাশে অবৈধভাবে এলোমেলো করে রেখে আসামিরা রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে এবং খালেদা জিয়ার গুলশান-২ এর ফিরোজা বাসভবনের গেট বন্ধ করে দেয়। খালেদা জিয়া যেন সমাবেশে যোগ দিতে না পারেন সেজন্য রাস্তার ওপরে ত্রাস সৃষ্টি করে গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে।
এজাহারে আরও বলা হয়, মামলার আসামিরা গোপন বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেন, ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর যে কোনোভাবে খালেদা জিয়াকে বাসা থেকে বের হয়ে সমাবেশে অংশ নিতে দেওয়া যাবে না। পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসাবে আসামিরা মারণাস্ত্র, লাঠি, বন্দুক, টিয়ারশেলসহ যুদ্ধক্ষেত্রের মতো সজ্জিত হয়ে গুলশান-১ ও ২, বনানী, বারিধারা ডিওএইচএস ও আমেরিকান দূতাবাসসহ আশপাশের এলাকায় র্যাব, পুলিশ ও ডিবিসহ ২৮ ডিসেম্বর থেকে অবস্থান নেয়। সঙ্গে অস্ত্রের মহড়া দেয় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। সে সময় আশপাশের বিএনপি নেতাকর্মীদের মারধর ও গণহারে গ্রেফতার করা হয়।