Logo
Logo
×

শেষ পাতা

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির শাটডাউন কর্মসূচি

সারা দেশে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন লাখ লাখ গ্রাহক

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সারা দেশে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন লাখ লাখ গ্রাহক

ফাইল ছবি

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ২০ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করার প্রতিবাদ ও বিভিন্ন দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার জেলায়-জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে সারা দেশের কোথাও কোথাও সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ‘বিদ্যুৎ শাটডাউন’ ছিল। পরে জেলা-উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারা বিদ্যুৎ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে বিদ্যুৎ চালু করেন। কোথাও কোথাও এখনো ‘ব্ল্যাক আউট’। এদিকে দেশের বড় এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় কঠিন ভোগান্তিতে পড়েছেন লাখ লাখ গ্রাহক। আরইবি-পল্লী বিদ্যুৎ একীভূতকরণ, অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। নেত্রকোনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম তাপস দেবনাথ যুগান্তরকে বলেন, যেসব কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত এবং মামলা দেওয়া হয়েছে তাদেরকে চাকরিতে পুনঃবহাল করা না পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। যুগান্তর ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:

নেত্রকোনা : বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে জেলার ১০টি উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের সংযোগ বন্ধ রয়েছে। ফলে হাসপাতালের রোগীসহ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে গ্রাহকদের। পল্লী বিদ্যুতের আওতাধীন জেলার অন্তত ৬ লাখ ৩৫ হাজার গ্রাহক ভোগান্তিতে পড়েছেন। দুর্গাপুরে হঠাৎ বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন ৬৩ হাজার গ্রাহক। পল্লী বিদ্যুতের অফিসের গেটে তালা দিয়ে চলে গেছেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। পূর্ব ঘোষণা ছাড়া বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন গ্রাহকরা। খালিয়াজুরী উপজেলা সদরের বাসিন্দা মহসিন মিয়া বলেন, সকাল থেকে বিদ্যুৎ নেই। ফ্রিজের মাছ তরকারি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বিদ্যুৎ না এলে খুব সমস্যায় পড়ে যাব। কেন্দুয়া উপজেলার গণমাধ্যমকর্মী জিয়াউর রহমান বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় আমরা ভোগান্তিতে পড়েছি। কম্পিউটার খুলতে পারছি না। নিউজ পাঠাতে পারছি না। কলমাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, প্রায় আট ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ বন্ধ রয়েছে। রোগীদের অনেক কষ্ট হচ্ছে।

রাজশাহী : পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সচিব হাসিনা বেগম বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ শাটডাউন করে দেওয়া হচ্ছে বলে খবর পাচ্ছি। বিদ্যুৎ চালুর ব্যাপারে আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। মাঠপর্যায়ের সমিতির অফিসগুলো এ নিয়ে কাজ করছে। বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টার দিকে রাজশাহীর কয়েকটি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রাজশাহী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তানোর জোনাল অফিসের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) কামাল হোসেন জানিয়েছেন, তারা বিকাল ৩টা ১৫ মিনিটে গোটা উপজেলায় বিদ্যুৎ বন্ধ করে দিয়েছেন। দাবি আদায়ে সারা দেশের কর্মীরা ঢাকায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। রাজশাহী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জ্যেষ্ঠ মহাব্যবস্থাপক রমেন্দ্র চন্দ্র রায় বলেন, ইতোমধ্যে কয়েকটি উপজেলায় বিদ্যুৎ বন্ধ করা হয়েছে। বিদ্যুৎ চালুর চেষ্টা চলছে, তবে এখন পর্যন্ত কোথাও চালু করতে পারিনি।

মানিকগঞ্জ : বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। তিন ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর চালু হলেও আবারও একযোগে শাটডাউন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

মুন্সীগঞ্জ : মুন্সীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ব্ল্যাক আউট কর্মসূচির কারণে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিলেন মুন্সীগঞ্জবাসী। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ১০ কর্মকর্তার নামে মামলা এবং চাকরি থেকে স্থায়ী বরখাস্ত করার প্রতিবাদে বিভিন্ন জেলায় ব্ল্যাক আউট কর্মসূচি পালন করা হয়।

দাউদকান্দি (কুমিল্লা) : বৃহস্পতিবার ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ৭টি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। পরে দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে বিদ্যুৎ অফিসে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া : বেলা ১১টা থেকে ব্ল্যাক আউট কর্মসূচির কারণে জেলার প্রায় চার লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এদিকে বিদ্যুৎ না থাকায় স্থানীয় গ্রাহকদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। তারা সমিতির প্রধান ফটকে এসে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে আলোচনার মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করার চেষ্টা করলেও আন্দোলনকারীরা বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তাদের পুনর্বহালের আগ পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন।

বন্দর (নারায়ণগঞ্জ) : কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে নারায়ণগঞ্জের বন্দরে বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টা থেকে বন্দরের ৩৬০ মেগাওয়াট ও ১১০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রসহ হরিপুরের ১০টি উৎপাদন কেন্দ্রের কার্যক্রম বন্ধ করে দেন পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীরা। বিকাল ৩টার পর থেকে বন্দরের কোথাও বিদ্যুৎ নেই। বন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এ মুহাইমিল আল জিহান জানান, বন্দরের হরিপুরের কিছু বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। তবে সেগুলো চালুর চেষ্টা চলছে।

সুনামগঞ্জ : বৃহস্পতিবার বিকাল সোয়া ৪টা থেকে পল্লী বিদ্যুতের আওতাধীন পুরো জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের এজিএম ইয়াসিন মাহমুদ। তিনি বলেন, সারা দেশে ৮০টি সমিতির মধ্যে ইতোমধ্যে সুনামগঞ্জসহ ৬০টি সমিতি বিদ্যুৎ বন্ধ রেখেছে। দাবি পূরণ না হলে বিদ্যুৎ বিতরণ বন্ধ থাকবে।

শেরপুর : দুপুরে এক মানববন্ধনে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চেয়ারম্যানের অপসারণ ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ সময় দাবি না মানলে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির ঘোষণা দেন তারা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম