আজ জানাজা ও দাফন
‘অগ্নিকন্যা’ মতিয়া চৌধুরী আর নেই
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ও জাতীয় সংসদের সাবেক উপনেতা মতিয়া চৌধুরী ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি...রাজিউন)। রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার দুপুরে তার মৃত্যু হয়। মতিয়া চৌধুরীর সাবেক একান্ত সচিব মো. শাহজালাল যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। ৮২ বছর বয়সি মতিয়া চৌধুরী বেশ কয়েকদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, আজ সকালে তার লাশ মগবাজরের বাসায় আনা হবে। বাদ জোহর গুলশান আজাদ মসজিদে জানাজা হবে। এরপর শহিদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তার লাশ দাফন করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রয়াত মতিয়া চৌধুরীর ভাই মাসুদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে নতুন জায়গা চাওয়া হয়েছে সিটি করপোরেশনের কাছে। জায়গা পেলে সেখানে দাফন করা হবে, না পেলে তার স্বামী বজলুর রহমানের কবরে দাফন হবে। এলাকার মানুষের দাবি থাকলেও দেশের বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় মতিয়া চৌধুরীকে নিজের নির্বাচনি এলাকায় নেওয়া হবে না।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘অগ্নিকন্যা’ হিসাবে পরিচিত মতিয়া চৌধুরীর জন্ম পিরোজপুরে ১৯৪২ সালের ৩০ জুন। তার বাবা মহিউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা এবং মা নুরজাহান বেগম ছিলেন গৃহিণী। ১৯৬৪ সালের ১৮ জুন খ্যাতিমান সাংবাদিক বজলুর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন মতিয়া চৌধুরী। মতিয়া চৌধুরী শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসন থেকে ছয়বার সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯৬, ২০০৯ ও ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের কৃষিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন মতিয়া চৌধুরী। ২০২৩ সালের ১২ জানুয়ারি তিনি জাতীয় সংসদের সংসদ উপনেতার দায়িত্ব পান। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরও তিনি এই দায়িত্বে ছিলেন।
মতিয়া চৌধুরীর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় বামপন্থি রাজনীতি দিয়ে। তিনি ইডেন কলেজে অধ্যয়নকালে ছাত্ররাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ষাটের দশকে পাকিস্তানের সামরিক স্বৈরশাসক আইয়ুব খানের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার যে আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু হয়, তাতে মতিয়া চৌধুরী সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। আইয়ুব খানের আমলে চারবার কারাবরণ করেন। ১৯৬৫ সালে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। স্বাধীনতার পর মতিয়া চৌধুরী আওয়ামী লীগে যোগ দেন। এরপর তিনি দলটির হয়ে বিভিন্ন আন্দোলনে রাজপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি বিভিন্ন সামরিক সরকারের সময় কারাবরণ করেন।
বর্ষীয়ান রাজনীতিকের মৃত্যুতে আওয়ামী লীগ শোক প্রকাশ করেছে। পৃথক শোকবার্তায় আওয়ামী লীগের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম তার আত্মার শান্তি কামনা করেন। এছাড়াও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ও বাংলাদেশ জাসদের পক্ষ থেকেও শোক প্রকাশ করা হয়েছে।