জাহাজে আগুন প্রসঙ্গে নৌপরিবহণ উপদেষ্টা
তদন্তে প্রকৃত তথ্য জানা যাবে
চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের (বিএসসি) দুটি জাহাজ দুর্ঘটনার ঘটনায় গঠিত অনুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন হাতে পেলে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে মন্তব্য করেছেন নৌপরিবহণ এবং পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। রোববার দুপুরে চট্টগ্রামে বিএসসি কার্যালয়ে ব্রিফিংকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। এর আগে তিনি বিএসসি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
ব্রিফিংয়ে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, পরপর বিএসসির দুটি জাহাজ দুর্ঘটনার পর সন্দেহ যাতে দূর হয়, সেজন্য মন্ত্রণালয়ের অ্যাডিশনাল সেক্রেটারিকে প্রধান করে একটি উচ্চপর্যায়ের পৃথক তদন্ত কমিটি করা হবে। ৯-১০ সদস্যের এ তদন্ত কমিটিতে বিশেষজ্ঞরা থাকবেন। তারা এখানে আসবেন, তদন্ত শুরু হবে, জাহাজগুলো দেখবেন। সন্দেহজনক কিছু আছে কি না, কী হয়েছে, সে বিষয়ে অনুমানভিত্তিক কথা বলতে চাই না। আপনারা অনুসন্ধান পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। অনুসন্ধান প্রতিবেদন হাতে পেলে দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, দুটি জাহাজে অগ্নিকাণ্ডে চারজন মারা গেছেন। যে কোনো প্রাণহানি দুঃখজনক। উপদেষ্টা আরও বলেন, বিএসসির দুটি জাহাজ দুর্ঘটনার কবলে পড়ার পর বর্তমানে বহরে জাহাজ আছে মাত্র পাঁচটি। এ পাঁচটি জাহাজ প্রচুর লাভ করছে। একটিও বাংলাদেশে নেই। জ্যামাইকাসহ বিভিন্ন দেশে এসব জাহাজ আছে। বিএসসিতে জাহাজের বহর আরও বড় হবে ইনশাআল্লাহ। আমরা যতদিন আছি, একটা কাজ করতে পারি সেটা হচ্ছে, দুর্নীতি কমানো।
বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ দলের ঘটনাস্থল পরিদর্শন : বিএসসি মালিকানাধীন জাহাজ ‘এমটি বাংলার সৌরভ’-এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। রোববার দুপুরে ঘটনাস্থল (জাহাজ) পরিদর্শন করেছে বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ দল। তদন্ত কমিটিও ধারণা করছে, নাশকতার অংশ হিসাবে কে বা কারা জাহাজে অগ্নিসংযোগ করে থাকতে পারে। তদন্ত কমিটির সদস্য সচিব ও বিএসসির মহাব্যবস্থাপক (ডিপিএ অ্যান্ড সিএসও) মঈন উদ্দিন আহাম্মদ মজুমদার তদন্ত শুরুর বিষয়টি যুগান্তরকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আমরা তদন্ত শুরু করেছি। প্রতিটি জিনিস বিচার-বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। আমরা হয়তো ৭-৮ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়ে দিতে পারব। তদন্ত কমিটিতে বিএসসির নির্বাহী পরিচালক (প্রযুক্তি) ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ ইউসুফকে সভাপতি করা হয়েছে। সদস্য সচিব করা হয়েছে বিএসসির মহাব্যবস্থাপক (ডিপিএ অ্যান্ড সিএসও) মঈন উদ্দিন আহাম্মদ মজুমদারকে।
এদিকে আইএসপিআর জানায়, নৌবাহিনী প্রধানের নির্দেশনায় কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চলসহ চট্টগ্রামের নৌবাহিনী কর্মকর্তারা সঙ্গেসঙ্গে ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং আগুন নিয়ন্ত্রণের দিকনির্দেশনা দেন। নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, ফায়ার সার্ভিস, চট্টগ্রাম বন্দর ও বিএসসির তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পাশাপাশি অন্য নাবিকদের জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ায় বড় রকমের ক্ষতি ও প্রাণহানি থেকে রক্ষা পেয়েছে দেশ। ‘এমটি বাংলার জ্যোতি’ জাহাজটির আগুন নিয়ন্ত্রণ ও বড় ধরনের বিস্ফোরণ প্রতিরোধ করা না গেলে হুমকির মুখে পড়ত দুর্ঘটনাস্থলের কাছাকাছি থাকা রাষ্ট্রীয় তেল বিপণনকারী সংস্থা পদ্মা, মেঘনা, যমুনা ও তেল পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠান ইস্টার্ন রিফাইনারি, চট্টগ্রাম শাহ্ আমানত বিমানবন্দর।