Logo
Logo
×

শেষ পাতা

সাত দিনের মধ্যে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে: মাহমুদুর রহমান

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সাত দিনের মধ্যে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে: মাহমুদুর রহমান

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আগামী ৭ দিনের মধ্যে ছাত্রলীগকে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান। সরকারের কাছে তিনি এই দাবিসহ সাতটি দাবি জানিয়েছেন।

জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব দাবি জানান।

মতবিনিময় সভায় বক্তৃতা করেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি এম আব্দুল্লাহ, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব এমএ আজিজ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন ডিইউজের সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক খুরশিদ আলম, ডিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. বাকের হোসেন, সরদার ফরিদ আহমেদ, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান প্রমুখ। মতিবিনিময় সভা সঞ্চালনা করেন আমার দেশের বার্তা সম্পাদক জাহেদ চৌধুরী।

মতবিনিময় সভায় মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে আসার পর যে ৫ দিন আমি কারাগারে ছিলাম, আমার জন্য যে পরিমাণ ভালোবাসা দেশের মানুষ ও দেশের বাইরে থেকে মানুষ দেখিয়েছে তার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। আমি এর যোগ্য নই। আমি বিশিষ্ট ব্যক্তি নই, রাজনৈতিক ব্যক্তি নই। এ রকম কোনো আকাঙ্ক্ষাও আমার নেই। আমি এ দেশের আমজনতার বর্ষীয়ান একজন প্রতিনিধি মাত্র।

তিনি বলেন, বাঙালি মুসলমান তাড়াতাড়ি স্মৃতিভ্রষ্ট হয়ে যায়। এমনকি নিকট-অতীতও খুব তাড়াতাড়ি ভুলে যায়। দানব ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার জুলুম নিয়ে আলোচনা ইতোমধ্যে কমে গেছে। আমরা অনেক বেশি আলোচনা করছি, বর্তমান সরকারের ভালো-খারাপ বিষয় নিয়ে। দানব হাসিনা এ দেশটাকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছেন। কিন্তু সেই আলোচনা আমি কম শুনতে পাচ্ছি, এটাই বাঙালি মুসলমানের স্মৃতিশক্তি কম হওয়ার একটা নমুনা।

তিনি বলেন, আমার দেশ স্বাধীনতার কথা বলে, এই বার্তা আমরা পত্রিকা থেকে দিতাম। এই কথাটা ছিল আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতের আধিপত্যবাদের বিরোধী কথা। এটি তারা বুঝতে পেরেছিল। বাংলাদেশের অধিকাংশ গণমাধ্যম এখনো ভারতীয় ফ্যাসিবাদীরা দখল করে বসে আছে। এটিই সত্য।

তিনি আরও বলেন, বিচার বিভাগ আওয়ামী নিয়ন্ত্রণে ছিল। স্কাইপি কেলেঙ্কারির বিষয়টি আমার দেশ তুলে এনেছিল। এর দায়ে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিমের গ্রেফতার হওয়া উচিত ছিল।

মৌলবাদ শব্দ ব্যবহার না করতে সরকারকে সতর্ক করে আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক বলেন, অতি ইসলামিক ও মৌলবাদ ট্যাগ ব্যবহারকারীদের প্রতিহত করতে হবে।

সাধারণ মানুষের উদ্দেশে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদের সময় আপনারা কিছু করতে পারেননি। এখন স্বাধীনতা পেয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না। এ কারণে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। যারা বাড়াবাড়ি করছেন আস্তিক আর নাস্তিক, হিন্দুধর্ম এসব নিয়ে বাড়াবাড়ি করছেন, এতে ভারতীয় যে কৌশল তা আপনারা বাস্তবায়ন করছেন।

তিনি আরও বলেন, যে দলই ক্ষমতায় আসুক, বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জামায়াত যারাই আসুক, দিল্লির পক্ষে যারা কথা বলবে তাদের সঙ্গে আমাদের লড়াই চলবে। আমি যতদিন জীবিত আছি, ততদিন আমার লড়াই চলবে। আমি সবাইকে কথা দিচ্ছি জনগণের কাতারে থেকে জনগণের জন্য মৃত্যু পর্যন্ত লড়াই করব।

মতবিনিময় সভায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে মাহমুদুর রহমানের সাত দফা হলো-ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের জন্য স্বাস্থ্য উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টা, শিল্প ও গণপূর্ত উপদেষ্টা এবং প্রধান উপদেষ্টার রাজনৈতিক সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করতে হবে; বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে এক সপ্তাহের মধ্যে সন্ত্রাসী সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে; যমুনা সেতুকে শহিদ আবু সাইদের নামে নামকরণ করতে হবে। যাতে মানুষ সেখান দিয়ে পার হওয়ার সময় শতাব্দীর পর শতাব্দী আবু সাইদকে দেখতে পাবে; ২০০৯ সালের পর থেকে ভারতের সঙ্গে যতগুলো চুক্তি হয়েছে তার প্রত্যেকটা ধারা-উপধারা জনসম্মুখ্যে প্রকাশ করতে হবে। জনগণকে জানতে হবে ভারতের সঙ্গে কী কী চুক্তি হয়েছে। এবং এগুলো পুনর্বিবেচনার জন্য একটি কমিটি গঠন করতে হবে। যেখানে ভারতের ও ফ্যাসিবাদের দোসর থাকতে পারবে না; বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউকে শহিদ আবরারের নামে নামকরণ করতে হবে। কারণ শহিদ আবরার এই ফ্যাসিবাদ আন্দোলনের প্রথম শহিদ। আপনাদের মনে রাখতে হবে শেখ মুজিব বাংলাদেশের প্রথম স্বৈরাচার নেতা। আর শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের আইকন হচ্ছে শেখ মুজিব; বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে ফ্যাসিস্ট হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নমিনেশন অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। কারণ এই পুতুলকে নমিনেশন দেওয়া হয়েছিল জালিয়াতির মাধ্যমে এবং আপিল বিভাগের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে একটা বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে জেলে হত্যাকাণ্ডের শিকার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুর রহিম ও বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন পিন্টুর হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তদন্ত করতে হবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম