আড়াইদিনে হেরে বাংলাদেশ হোয়াইটওয়াশ
বাংলাদেশ ২৩৩ ও ১৪৬ * ভারত ২৮৫/৯ ডি. ও ৯৮/৩ * ফল : ভারত ৭ উইকেটে জয়ী
ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বাংলাদেশ-ভারত টেস্ট
প্রথমদিন মাত্র ৩৫ ওভার খেলা হওয়ার পর টানা দুদিন বৃষ্টি। শেষ দুদিনে ভারত যা করে দেখাল, তা আগে কখনো করেনি তারা। ১০০ রানে অলআউট হলেও জেতার জন্য ঝাঁপাতেন, রোহিত শর্মার কথায় স্পষ্ট যে, কতটা মরিয়া ছিল ভারত। শেষদিনে ৯৫ রানের লক্ষ্য তারা টপকে যায় মাত্র এক ঘণ্টার কিছু বেশি সময়ে। মঙ্গলবার কানপুর টেস্টের পঞ্চমদিন গ্রিন পার্ক স্টেডিয়ামে দুই সেশনে ভারতকে করতে হতো ৯৫ রান। সিরিজে জয়সওয়ালের তৃতীয় ফিফটির (৫১) হাত ধরে সাত উইকেটের জয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ভারত হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশকে। জয়সওয়াল হন ম্যাচসেরা। সিরিজ জয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিলে নিজেদের শীর্ষস্থান সুসংহত করল ভারত। ১১ ম্যাচ শেষে আট জয় ও দুই হারে ৭৪.২৪ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে ফাইনালের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেলেন রোহিতরা। বাংলাদেশ নেমে এলো সাতে। আট ম্যাচে তিন জয় ও পাঁচ হার তাদের।
কানপুর টেস্ট এক অর্থে নাজমুল-মুমিনুলদের কান ধরে দেখিয়ে দিয়েছে, ক্রিকেটের আদি ফরম্যাটে কীভাবে পরিস্থিতির চাহিদা অনুযায়ী নিজেদের মেলে ধরতে হয়। রোহিতদের স্মার্ট ক্রিকেটের সামনে নাজমুলদের জীর্ণশীর্ণ ব্যাটিং আড়াইদিনেরও কম সময়ে হারার প্রধান কারণ। এই টেস্ট জিততে ভারত দুই ইনিংসে খেলেছে মাত্র ৩১২ বল, যা তাদের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বনিু এবং সব মিলিয়ে চতুর্থ সর্বনিু। এ বছরের শুরুতে তারা দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জিতেছিল ২৮১ বল খেলে।
কাল বাংলাদেশ ২৬/২ এ দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে ১৪৬ রানে তল্পিতল্পা গুটিয়ে নেয়। ব্যাটারদের প্রতিটি বলে শট খেলার বিলাসিতায় মনে হচ্ছিল, তাদের যেন বিমান ধরার তাড়া ছিল। ২৬/২ থেকে ৯৪/৭ হতে সময় লাগেনি। নাজমুল হোসেন শান্ত (১৯) ও সাদমান ইসলামের (৫০) ৫৫ রানের জুটি ভাঙেন জাদেজা। টানা তিন ওভারে তিন উইকেট পাওয়া জাদেজার অপর দুই শিকার লিটন দাস (১) ও সাকিব আল হাসান (০)। মিরপুরে যদি জীবনের শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলার সুযোগ না পান, তাহলে শূন্য দিয়ে শেষ হলো সাকিবের টেস্ট ক্যারিয়ার। বাংলাদেশ একপর্যায়ে ৯১/৩ থেকে ৯৪/৭। এরপর বুমরা টেলএন্ডারদের গুটিয়ে দেন। অথচ উইকেটে কোনো জুজুর ভয় ছিল না। তেমন টার্নও পাওয়া যায়নি। জাদেজার আঁটোসাঁটো বোলিংয়ে মুমিনুল-মুশফিকরা চাপের পাহাড়ের নিচে পড়ে চিড়েচ্যাপ্টা হয়ে যান।
কাল ৯৮ ওভারের দিনের খেলা যখন শুরু হয়, বাংলাদেশ তখন পিছিয়ে ২৬ রানে। প্রথম আঘাত হানেন সিরিজসেরা অশ্বিন। প্রথম ইনিংসে সুইপ-সমৃদ্ধ হার না-মানা সেঞ্চুরি করা মুমিনুল একই শট খেলতে গিয়ে দুই রানে স্লিপে ক্যাচ দেন। সাদমান ইনিংসটা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। অশ্বিনকে তিনটি কভার ড্রাইভ এবং ব্যাক-ফুট কাটে চার মারেন সাদমান সাত বলে। ১০১ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পর বাংলাদেশের ওপেনার শিকার হন আকাশ দীপের। জাদেজা নিজের তৃতীয় ওভারে সাকিবকে ফেরান। মেহেদী হাসান মিরাজকে (৯) তুলে নেওয়ার পর বুমরা লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন তাইজুলকে (০)। মুশফিকুর রহিম (৩৭) খানিকটা বিলম্ব ঘটান স্বাগতিকদের জয়ে। লাঞ্চের আগে বুমরা ফিরে এসে শেষ ব্যাটার হিসাবে মুশফিককে ফেরালে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস থামে ১৪৬ রানে। তিনটি করে উইকেট নেন বুমরা, অশ্বিন ও জাদেজা।
(স্কোর কার্ড খেলার পাতায়)