Logo
Logo
×

শেষ পাতা

চসিক নির্বাচন

সাড়ে ৩ বছর পর শাহাদাতকে মেয়র ঘোষণা

Icon

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশ: ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সাড়ে ৩ বছর পর শাহাদাতকে মেয়র ঘোষণা

শাহাদাত হোসেন

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনের প্রায় সাড়ে তিন বছর পর ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করেছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত। সেই সঙ্গে আদালত ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারির জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের বিচারক খাইরুল আমিন এ রায় দেন।

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী মফিজুল হক ভুঁইয়া। তিনি যুগান্তরকে বলেন, নির্বাচনে অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে ফল বাতিল এবং নিজেকে মেয়র ঘোষণার জন্য বিএনপির মেয়রপ্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন আদালতে মামলা করেছিলেন। আদালত সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে শাহাদাতের পক্ষে রায় দিয়েছেন।

সূত্র জানায়, রায়ে ২০২১ সালে নির্বাচনের পর নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মো. রেজাউল করিম চৌধুরীকে নির্বাচিত ঘোষণার গেজেট বাতিল করা হয়েছে। এদিকে রায় ঘোষণার পর আদালত প্রাঙ্গণে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, এ রায়ের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এতে বিচার বিভাগের ওপর মানুষের আস্থা বাড়বে। রায় ঘোষণার পর বিএনপি নেতাকর্মীরা আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হয়ে আনন্দ মিছিল বের করেন। তাদের প্রিয় নেতাকে নিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন। নির্বাচনের সময় শাহাদাত চট্টগ্রাম নগর বিএনপির আহ্বায়কের দায়িত্বে ছিলেন। এর আগে তিনি বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (চট্টগ্রাম বিভাগ) হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেন।

২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী (নৌকা) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২৪৮ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী শাহাদাত হোসেন পান ৫২ হাজার ৪৮৯ ভোট। নির্বাচনে ভোট পড়ে ২২ দশমিক ৫২ শতাংশ।

ভোটকেন্দ্র দখল, জাল ভোট, ভোটারদের ওপর হামলা, ফলাফলে ডিজিটাল কারচুপিসহ নানা অভিযোগ এনে ওই সময় ফল প্রত্যাখ্যান করেন শাহাদাত। আর তার অনুসারীরা তাকে ‘জনতার মেয়র’ আখ্যা দেন। এরপর ২০২১ সালের মার্চে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে নয়জনকে বিবাদী করে মামলা করেন বিএনপির প্রার্থী শাহাদাত হোসেন।

বিবাদীরা হলেন-আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনের সচিব, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচনি কর্মকর্তা, সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা, মেয়রপ্রার্থী আবুল মনসুর, এমএ মতিন, খোকন চৌধুরী, ওয়াহেদ মুরাদ ও জান্নাতুল ইসলাম। মামলার এজাহারে বলা হয়, নির্বাচনি ফলাফল তথা ইভিএমের প্রিন্ট করা (ছাপা) কপি দেওয়ার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু তা দেওয়া হয়নি। হাতে লেখা ফলাফল দেওয়া হয়। এতে বোঝা যায়, নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। বিবাদীরা পরস্পর যোগসাজশে বিএনপির মেয়রপ্রার্থীকে হারিয়ে দিয়েছেন। ভোটের দিন ভোটকেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি না থাকলেও আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থীকে বিপুল ভোটে জয়ী দেখানো হয়।

আদালত প্রাঙ্গণে রোববার ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না করে ভোট ডাকাতির মাধ্যমে ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারির নির্বাচনে এম রেজাউল করিমকে মেয়র ঘোষণা করেছিল। আজকের এ রায়ের মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা মনে করি, খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ বিএনপি ও সব বিরোধী দলের নেতাকমর্মীর বিরুদ্ধে বিগত সরকার যেসব রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা দিয়েছে, সেগুলো নির্বাহী আদেশে প্রত্যাহার হোক। কারণ, এসব মামলা অবৈধ, ভুয়া। আমি আদালত, আইনজীবী, বিএনপি নেতাকর্মী, পেশাজীবী এবং অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বে যারা আছেন, সবার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর থেকে আর চসিকে আসছেন না তিন বছরেরও বেশি সময় দায়িত্ব পালন করা মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। ১৯ আগস্ট তাকে অপসারণ করে প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম চালানোর জন্য বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল ইসলামকে প্রশাসক হিসাবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম