Logo
Logo
×

শেষ পাতা

আবু সাঈদের ময়নাতদন্ত

শরীরে স্প্লিন্টার ও মাথার গভীর ক্ষত রক্তক্ষরণে মৃত্যু

Icon

রংপুর ব্যুরো

প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

শরীরে স্প্লিন্টার ও মাথার গভীর ক্ষত রক্তক্ষরণে মৃত্যু

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনে বহু আলোচিত রংপুরে নিহত শিক্ষার্থী আবু সাঈদের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে শরীরে শটগানের গুলির স্প্লিন্টার ও মাথার খুলিতে আঘাতজনিত ক্ষতের গভীরতার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণেই তার মৃত্যু হয়েছে। এটি একটি হত্যাকাণ্ড বলেও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। মৃত্যুর আড়াই মাস পর পাওয়া ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আবু সাঈদের কানের উপরের দিকে মাথার খুলিতে দৈর্ঘ্যে ৩ ইঞ্চি ও প্রস্থে দেড় ইঞ্চি আকারের আঘাতজনিত গর্ত ছিল, যেখান থেকে রক্তক্ষরণ হয়েছে এবং রক্ত জমাট বাঁধা ছিল। এ ছাড়া বুক, পেট, পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ছোট ছোট শটগানের স্প্লিন্টারের গর্ত ছিল। সেখান থেকেও প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। মাথার আঘাত, শরীরের রক্তক্ষরণের কারণে আবু সাঈদ শকে চলে যায়। এতে তার মৃত্যু হয়। আবু সাঈদের মৃত্যু আগ্নেয়াস্ত্রের বুলেটের কারণে তা নিশ্চিত করে বলা হয়নি ওই প্রতিবেদনে।

এর আগে গত ১৬ জুলাই রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আবু সাঈদের ময়নাতদন্ত করা হয়েছিল। ওই প্রতিবেদনে একে হোমিসাইডাল বা হত্যাকাণ্ড হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

এদিকে আবু সাঈদ হত্যা মামলার প্যানেল আইনজীবী রোকনুজ্জামান রোকন বলেন, মাথার আঘাতের চিহ্ন সুস্পষ্ট। শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুলির ক্ষত। সবকিছু মিলে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রমাণ করে, এটি হত্যাকাণ্ড। ফলে এ হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কেউ ছাড় পাবে না।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন অনুযায়ী আবু সাঈদের মাথায় আঘাতজনিত একটি বড় ক্ষত রয়েছে। বুলেটের আঘাতে মৃত্যু হলে বুলেট তার মাথার এক প্রান্তে লেগে অন্য প্রান্ত দিয়ে বের হয়ে যেত। যেহেতু এমনটি ময়নাতদন্তে উল্লেখ নেই। তাহলে এটি কোনো ঢিলের আঘাতে হতে পারে বা অন্য কোনো আঘাতজনিত কারণেও এমন ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে যা মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

পিবিআই পুলিশ সুপার মো. জাকির হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে পিবিআই তদন্ত করছে। তাই এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করা যাবে না। আগে আমরা তদন্ত শেষ করি তারপরে মন্তব্য করা যাবে।

ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজিবুল ইসলাম জানিয়েছেন ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে যা লেখা আছে এর বাইরে তার কোনো বক্তব্য নেই।

অভিযোগ রয়েছে ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত হন আবু সাঈদ। তিনি রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেরোবির অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন তিনি।

আবু সাঈদের মৃত্যুর ঘটনায় ১৮ আগস্ট রংপুর মেট্রোপলিটন আমলি আদালতে হত্যা মামলা করেন তার বড় ভাই রমজান আলী। ওই মামলায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও ৩০-৩৫ জনকে আসামি করা হয়।

এ মামলায় পুলিশ সদস্য এএসআই মো. আমীর আলী ও সুজন চন্দ্র রায়কে নিজেদের হেফাজতে রাখে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। পরে ৯ সেপ্টেম্বর তাদের রংপুর জেলা পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হলে তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে পুলিশ চার দিনের রিমান্ডে নেয় পিবিআই পুলিশ। আবু সাঈদ হত্যা মামলায় নতুন করে আর কোনো আসামি গ্রেফতার হয়নি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম