Logo
Logo
×

শেষ পাতা

খুন ও গুম

হাসিনাসহ ১০২ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে ২ অভিযোগ

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

হাসিনাসহ ১০২ জনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে ২ অভিযোগ

সাভারে গুলির পর পুলিশের সাঁজোয়া যানে তুলে সেখান থেকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শাইখ আসহাবুল ইয়ামিন হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৭৮ জনের নামে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ করা হয়েছে। শেখ হাসিনার আমলে গুমের অভিযোগ তদন্ত চেয়ে পৃথক আবেদন করা হয়েছে একই ট্রাইব্যুনালে। 

এছাড়া নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শেখ হাসিনা, সাবেক সংসদ-সদস্য শামীম ওসমানসহ আটজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বগুড়ায় ৯১ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। গাজীপুরে মামলা হয়েছে সাবেক মন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমিসহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে। স্টাফ রিপোর্টার, ব্যুরো ও প্রতিনিধির পাঠানো খবর-

ঢাকা : শিক্ষার্থী শাইখ আসহাবুল ইয়ামিন হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৭৮ জনের নামে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বরাবর সোমবার এ অভিযোগ করেন নিহতের মামা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মুন কাদির। তার পক্ষে আইনজীবী রয়েছেন সাকিল আহমাদ। আইনজীবীর অভিযোগ, ১৮ জুলাই পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সম্মিলিতভাবে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে। তারা শাইখ আসহাবুল ইয়ামিনকে ধরে টেনে পুলিশের সাঁজোয়া যানের কাছে নিয়ে দুপুর দেড়টায় বুকে গুলি করে। 

বন্দুকের গুলিতে ইয়ামিনের বুকের বাম পাশে অসংখ্য স্প্লিন্টারবিদ্ধ হয়। এ অবস্থায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা ইয়ামিনকে টেনে পুলিশের সাঁজোয়া যানের ওপর ফেলে রেখে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে ভীতি প্রদর্শনের জন্য গাড়িটি এপাশ থেকে ওপাশ প্রদক্ষিণ করতে থাকেন। ইয়ামিনকে প্রায় মৃত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে দেন এবং সাঁজোয়া যানের ভেতর থেকে একজন পুলিশ সদস্যকে বের করে তার পায়ে পুনরায় গুলির নির্দেশ দেওয়া হয়।

ওই পুলিশ সদস্য ইয়ামিনকে মৃত ভেবে পায়ে গুলি না করে রাস্তার একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্তে টেনে নিয়ে রোড ডিভাইডারের পাশে ফেলে দেন। গুলিবিদ্ধ শাইখ ইয়ামিনকে সর্বশক্তি দিয়ে প্রচণ্ড কষ্টে নিঃশ্বাস নিতে তখনো দেখা যায়। এ অবস্থায় পুলিশ সদস্যরা ধরাধরি করে উঁচু রোড ডিভাইডারের একপাশ থেকে আরেক পাশে ছুড়ে ফেলে দেন। পরে তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান ইয়ামিন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ তার লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করতে দেয়নি।

এছাড়া ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমলে গুমের অভিযোগ তদন্ত চেয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কাছে আবেদন করা হয়েছে। একই সঙ্গে ২০১৮ সালে ১০ দিন গুম রাখার অভিযোগ এনে সোমবার প্রসিকিউশন কার্যালয়ে এ অভিযোগ করেন ব্যবসায়ী এনামুল কবির।

পরে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, এনামুল কবির নামের এক ব্যবসায়ীকে ২০১৮ সালের ১৭ নভেম্বর বাসাবোর ব্যবসায়ী কার্যালয় থেকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নেওয়া হয়। তৎকালীন ডিবির অফিসার মশিউরের নির্দেশে তাকে চোখ বন্ধ করে হাত-পা বেঁধে আটকে রাখে। পরে ২৬ নভেম্বর মামলা দেয়। হাত-পায়ের মাঝখানে লাঠি ঢুকিয়ে ঝুলিয়ে রাখে। নির্যাতন করে বিরোধী তথা জামায়াতের তথ্য জানতে চেয়েছে। তার অফিস থেকে বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়েছে মর্মে মামলা করে।

অনেক দিন কারাগারে থাকার পর তিনি জামিন পান। এ বিষয়ে অভিযোগ এনে তিনি শেখ হাসিনাসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ করেছেন। পাশাপাশি বিগত সরকারে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত গুমের ঘটনারও তদন্ত চেয়েছেন। আমরা এখন এটি যাচাই-বাছাই করে দেখব।

সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) : সিদ্ধিরগঞ্জে গুলিবিদ্ধ হয়ে কিশোর মো. আরাফাত হোসেন আকাশ নিহত হওয়ার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে আটজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে। সোমবার মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন। এর আগে নিহত আরাফাতের বাবা মো. আকরাম বাদী হয়ে রোববার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা করেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাবেক সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক সংসদ-সদস্য একেএম শামীম ওসমান। 

বগুড়া : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গুলিতে জাবেদ মিয়া নামে নির্মাণ শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ-সদস্য এসএম কামাল হোসেনসহ ৯১ জনের নাম উল্লেখ করে ২১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। বগুড়া শহরের চকলোকমান এলাকার ফজলুল হকের ছেলে চাঁন মিয়া রোববার বিকালে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা করেন। বিচারক সুকান্ত সাহা তদন্ত করে ২৪ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে সদর থানা পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন। সোমবার বিকালে আদালতের পরিদর্শক মোসাদ্দেক হোসেন এ মামলার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মামলার অন্যতম আসামিরা হলেন বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক সংসদ-সদস্য মজিবর রহমান মজনু, সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ-সদস্য রাগেবুল আহসান রিপু, সাবেক সংসদ-সদস্য ডা. মোস্তফা আলম নান্নু, আওয়ামী লীগ নেতা একেএম আসাদুর রহমান দুলু প্রমুখ।

গাজীপুর : কাপাসিয়া উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়ন বিএনপি নেতা সফিউদ্দিন মাস্টার খুনের ঘটনায় সাবেক শিশু ও মহিলাবিষয়কমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সিমিন হোসেন রিমিসহ ৪৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন নিহতের ছেলে মো. সোহেল রানা। সোমবার গাজীপুরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ৫ম আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম আঁখি আক্তারের আদালতে এ মামলাটি করা হয়। ম্যাজিস্ট্রেট আঁখি আক্তার সাংবাদিকদের জানান, ঘটনাটির তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম