কাজী জাফরউল্লাহ ও এমএ মান্নান গ্রেফতার
যুগান্তর প্রতিবেদন ও সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
এমএ মান্নান-কাজী জাফরউল্লাহ
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বুধবার রাতে গুলশানের বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার ওবায়দুর রহমান। তিনি বলেন, পল্টন থানায় করা একটি হত্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অসুস্থ থাকায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলা সদরের হিজলকরচ নামক বাসভবন থেকে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় তাকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গ্রেফতারের পর এমএ মান্নানকে সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।
পুলিশ সুপার আফম আনোয়ার হোসেন খান গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। গ্রেফতারের করে ডিবি কার্যালয়ে নেওয়ার পর জাফরউল্লাহ অসুস্থবোধ করেন। তাই তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ জন্য তাকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়নি।
গণআন্দোলনের মুখে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনে একে একে গ্রেফতার হতে থাকেন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ শীর্ষ পর্যায়ের নেতা ও প্রভাবশালী সংসদ-সদস্যরা। এরই ধারাবাহিকতায় এবার গ্রেফতার হলেন কাজী জাফরউল্লাহ।
কাজী জাফরউল্লাহ গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ফরিদপুর-৪ (ভাঙ্গা-সদরপুর-চরভদ্রাসন) আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য।
এ আসন থেকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছিলেন। এর আগে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনেও কাজী জাফরউল্লাহ ফরিদপুর-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী হিসাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী নিক্সন চৌধুরীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান। তবে ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন কাজী জাফরউল্লাহর স্ত্রী নিলুফা জাফরউল্লাহ।
এমএ মান্নানকে গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে সুনামগঞ্জ সেনাবাহিনীর অধিনায়ক লে. কর্নেল নাফিজ ইমতিয়াজ বলেন, পুলিশ একজনকে আজ রাতে গ্রেফতার করেছে বলে জানতে পেরেছি। এটা পুলিশ প্রশাসনের নিয়মিত মামলার আসামি গ্রেফতারের অংশ হিসাবেই করা হয়েছে।
সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানসহ সুনামগঞ্জের সাবেক চার এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সম্পাদকসহ ৯৯ জনকে আসামি করে সুনামগঞ্জে রোববার দ্রুত বিচার আইনে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট নির্জন কুমার মিত্র’র আদালতে একটি মামলা করেন জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের এরোয়াখাই গ্রামের মো. হাফিজ আহমদ। তিনি ওই গ্রামের মো. নাজির আহমদের ছেলে।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ৪ আগস্ট সুনামগঞ্জ শহরের পুরাতন বাস স্ট্যান্ডে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বাদীর ভাই জহুর আলী ও রিপন মিয়াকে গুলি করে রামদা দিয়ে কুপিয়ে আহত করেছেন। তারা কেউবা সশরীরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন, কেউবা হুকুম দিয়েছেন। মামলা দায়েরকারী মো. হাফিজ আহমদ ঘটনার সুষ্ঠ বিচার দাবি করেছেন।
বেলকুচি-চৌহালী (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় কলেজছাত্র শিহাব, সিয়াম হোসেন ও ইয়াহিয়া হত্যা মামলার অন্যতম আসামি সিরাজগঞ্জ-৬ (বেলকুচি-চৌহালী-এনায়েতপুর) আসনের সাবেক সংসদ-সদস্য ও মণ্ডল গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মমিন মণ্ডলের পিএস সেলিম সরকারকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-১২, সদর কোম্পানির কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার বিএনএম আবুল হাশেম সবুজ।