Logo
Logo
×

শেষ পাতা

জুলাই-আগস্ট গণহত্যা প্রসঙ্গে তথ্য উপদেষ্টা

সাংবাদিকদের সম্পৃক্ততা পাওয়া না গেলে মামলা থেকে বাদ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সাংবাদিকদের সম্পৃক্ততা পাওয়া না গেলে মামলা থেকে বাদ

ছবি: সংগৃহীত

সাংবাদিকদের আসামি করে গণহত্যার মামলা পর্যালোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেছেন, মামলাগুলো সরকার করছে না; জনগণ তাদের জায়গা থেকে করছে। অনেক ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত শত্রুতার জায়গা থেকেও মামলা করা হচ্ছে। সেই জায়গা থেকে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি এবং আশ্বস্ত করেছি যে, এই মামলাগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে পর্যালোচনা করা হবে। তদন্ত করে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত না হলে তাকে মামলা থেকে রেহাই দেওয়া হবে। বুধবার সচিবালয়ের তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

এর আগে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের সঙ্গে ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড’ এবং জুড়ি বোর্ডের নবনির্বাচিত কমিটির সদস্যরা মতবিনিময় করেন। সেখানে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, সেন্সর শব্দ বাদ দিয়ে সার্টিফিকেশন বোর্ড করা হবে। ওই মতবিনিময় সভার পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। 

তথ্য উপদেষ্টা বলেন, গণহত্যায় উসকানিদাতাদের বিচার হবে। কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে যারা ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িত ছিলেন কিংবা গণহত্যায় উসকানি দিয়েছেন তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা হবে। উপদেষ্টা জানান, মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাব ও সচিবালয় সাংবাদিক ফোরামের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। আমি তাদের বলেছি, যদি কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয় বা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয় থাকে; তাহলে তার ব্যাপারে তথ্য মন্ত্রণালয়ে বিস্তারিত পাঠাবেন। আমরা তার বিষয়টি দেখব।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঠিক হয়ে যায়; জননিরাপত্তা যাতে নিশ্চিত হয়; আমরা যেহেতু একটি জরুরি পরিস্থিতিতে আছি; দেশ পুনর্গঠন করতে হচ্ছে; সেহেতু সেনাবাহিনীকে এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। আগামী ২ মাসের জন্য এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এই সময়ের মধ্যে পুলিশ বাহিনীকে সম্পূর্ণ সংস্কার করে আরও শক্তিশালী ও আস্থার জায়গায় নিয়ে এসে তাদের মাঠে ফিরিয়ে আনা হবে। এ কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তথ্য মন্ত্রণালয়ের ‘গুজব শনাক্তকরণ সেল’ সম্পর্কে জানতে চাইলে নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা ফ্যাক্ট চেকিং নিয়ে বিভিন্ন অংশীজন ও মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলছি। কিভাবে ফ্যাক্ট চেকিং বিষয়টি আরও শক্তিশালী করা যায়; সেটা নিয়ে ভাবছি। একটি ফ্যাক্ট চেকিং সেল করার পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে তথ্য উপদেষ্টা বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যাতে এ ধরনের গুজবের সত্যতা যাচাই করে মানুষের কাছে সত্য তুলে ধরা যায়; মানুষ যাতে গুজব ও মিথ্যায় প্রভাবিত না হন; সে জন্য আমরা ফ্যাক্ট চেকিং নিয়ে ভাবছি।

সার্টিফিকেশন বোর্ড করা হবে : সেন্সর বোর্ডকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ড নামকরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, আইন ও বিধি নিয়ে পর্যালোচনা করা হবে। সেন্সর বোর্ড নিয়ে একটি গেজেট হয়েছিল। কিন্তু তার বিধিমালা ছিল না। এক্ষেত্রে এখন সেন্সর শব্দ বাদ দিয়ে ২০২৩ সালের আইন দ্রুততম সময়ে প্রজ্ঞাপন দিয়ে কার্যকর করা হবে। তিনি আরও বলেন, প্রচুর সিনেমা এখনো রিলিজ দেওয়া বাকি আছে। সিনেমা রিলিজের সুবিধার্থে দ্রুততম সময়ে আইন নিয়ে কাজ করা হবে, যা প্রজ্ঞাপনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না। 

উপদেষ্টা বলেন, এ আইনটি করার সময় অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা-পর্যালোচনা করে সার্বিক প্রস্তাবনা নিয়ে নতুনভাবে কাজ করা হবে। ২০২৩ সালের আইনের বিধি দিয়েই সার্টিফিকেশন বোর্ড তৈরি করা হবে। এ সময় বাংলাদেশ সেন্সর বোর্ড এবং জুরি বোর্ডের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

বেসরকারি টেলিভিশনে বিটিভির সংবাদ সম্প্রচার বাধ্যতামূলক নয় : বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) দুপুর ২টার সংবাদ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে সম্প্রচার করার প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালককে (ডিজি) গতকাল চিঠি পাঠিয়েছে তথ্য অধিদপ্তর। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ টেলিভিশনের দুপুর ২টার সংবাদ বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে সম্প্রচার করার প্রয়োজন নেই বলে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা অভিমত ব্যক্ত করেছেন। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবহিত করা হলো।

বাংলালিংককে মেয়াদবিহীন ইন্টারনেট প্যাকেজ চালুর অনুরোধ তথ্য উপদেষ্টার : সাধারণ মানুষের চাহিদা বিবেচনা করে মেয়াদবিহীন ইন্টারনেট প্যাকেজ চালু করতে বেসরকারি মোবাইল অপারেটর বাংলালিংক কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম। বুধবার ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অফিসকক্ষে উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলালিংক কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করতে গেলে উপদেষ্টা এ অনুরোধ করেন। বাংলালিংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এরিক এস প্রধান করপোরেট ও নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা তাইমুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। 

সাক্ষাৎকালে নাহিদ ইসলাম বলেন, তরুণ প্রজন্মের চাহিদার প্রেক্ষিতে ইন্টারনেটের মূল্য কমানোর পাশাপাশি সব মোবাইল অপারেটরদের মেয়াদবিহীন ইন্টারনেট প্যাকেজ চালুর চেষ্টা করতে হবে। বাংলালিংকের চিফ লিগ্যাল অফিসার জাহারাত আদিব চৌধুরী জনপ্রিয় অ্যাপ্লিকেশন টফির ব্যবহারে বিভিন্ন বাধার কথা উল্লেখ করলে উপদেষ্টা বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। ভেওন লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কান টার্জিওগ্লু বাংলাদেশে সিম কার্ডের ওপর ট্যাক্স কমানোর কথা বললে উপদেষ্টা বলেন, ট্যাক্সের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পৃক্ত। তাই এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।


Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম