লোহাগাড়ায় হাসনাত আব্দুল্লাহ
চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখতে হবে
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ঘুস ও নিয়োগবাণিজ্যের বিরুদ্ধে ছাত্র-নাগরিকদের প্রতিবাদ অব্যাহত রাখতে বলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। বুধবার বেলা ৩টায় চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় গ্র্যান্ড মাসাবি রেস্টুরেন্টের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এদিন বান্দরবানেও মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও নাটোরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সভা হয়েছে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) : হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, রাষ্ট্র গভীর সংকটের মধ্যে আছে। গত ১৬ বছরে ১১ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। যতদিন পর্যন্ত না আমরা দুর্নীতি বন্ধ করতে পারছি ততদিন পর্যন্ত আমাদের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। যেখানে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ঘুসবাণিজ্য, নিয়োগবাণিজ্য ঠিক সেখানেই ছাত্র-নাগরিক থেকে প্রতিবাদ অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি বলেন, বিদায়ি ফ্যাসিস্ট সরকার দেশটাকে জগাখিচুড়ি বানিয়ে দিয়ে গেছে। স্বৈরাচার সরকার শিক্ষাব্যবস্থাকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়ে গেছে। ছাত্রদের রক্তের বিনিময়ে ৫ আগস্ট এই দেশ নতুন করে স্বাধীন হয়েছে। ছাত্ররাই এই দেশ পরিচালনায় রোডম্যাপ দেবে। সভায় চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র চৌধুরী ইমাদ উদ্দীন ধীমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সায়েমা রহমান পায়েলসহ লোহাগাড়ার সাধারণ ছাত্ররা উপস্থিত ছিলেন।
বান্দরবান : জেলা সদরের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট অডিটরিয়ামে বেলা সাড়ে ১১টায় মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, বান্দরবানের শিক্ষাব্যবস্থা, যাতায়াত, স্বাস্থ্যব্যবস্থা, পাহাড়ে চাঁদাবাজিসহ সব বিষয় নিয়ে আমরা ঢাকায় গিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলব। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একটার সঙ্গে আরেকটার বিভেদ তৈরি করেছে বিদায়ি ফ্যাসিস্ট সরকার। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আহ্বান জানাব সমতল ও পাহাড়ে যেন একইরকম শিক্ষাব্যবস্থা চালু করা হয়। হাসনাত বলেন, সবাইকে সজাগ থাকতে হবে, যেন দেশটাকে নিয়ে নতুন করে কোনো ষড়যন্ত্র করতে না পারে। সভায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রামের সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র চৌধুরী ইমাদ উদ্দীন ধীমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সায়েমা রহমান পায়েলসহ বান্দরবানের সাধারণ ছাত্ররা উপস্থিত ছিলেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া : শহরের জাতীয় বীর আব্দুল কুদ্দস মাখন পৌর মুক্তমঞ্চে বুধবার বিকালে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক আব্দুল কাদের। তিনি বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হঠানো গেলেও তাদের সাঙ্গোপাঙ্গরা এখনো নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আন্দোলনের গতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পাঁয়তারা করে বেড়াচ্ছে। কাদের বলেন, সংখ্যালঘুদের দুর্গা পূজাকে ঘিরে একটি মহল ছাত্রসমাজকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চেষ্টা করবে। তাই দূর্গাপূজাকে নির্বিঘ্ন ও সফল করতে ছাত্র-জনতাকে পাশে থাকতে আহ্বান জানান তিনি। অপর কেন্দ্রীয় সম্বয়ক জিয়াউদ্দিন আয়ান বলেন, শেখ হাসিনা যে গর্তেই লুকিয়ে থাকুক না কেন, তাকে বের করে এনে ফাঁসি দিতে হবে। এজন্য সরকারকে চাপ দিতে হবে। সভায় কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক হামযা মাহবুবের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন সহসমন্বয়ক আতিক মুন্সী, খালিদ হাসান, মো. মহিউদ্দিন, আলী আহমেদ আরাফ. মো. ইব্রাহিম। এছাড়াও সভায় বিভিন্ন শহিদ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সাইদুর রহমান, শাহজাহান মোল্লা ও ইসরাত জাহান।
নাটোর : নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজ মাঠে বিকালে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বক্তারা বলেন, অনেক রক্ত-ত্যাগের বিনিময়ে আমরা যে নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি তা সবার জন্য কাজে লাগাতে হবে। দেশকে উন্নয়ন ও অগ্রগতির দিকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখতে হবে। অনুষ্ঠানে কিছু বিশৃঙ্খলা হওয়ায় দুঃখ প্রকাশ করেন নেতারা। এর আগে দুপুর ১টার দিকে শহরের অনিমা চৌধুরী অডিটরিয়ামে নাটোরের ছাত্র আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীদের মতবিনিময় সভায় দুপক্ষের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মো. মাহিন সরকার, কুররাতুল আইন কানিজ, ইফতেখার আলম, ফয়সাল আহমেদ প্রমুখ।