Logo
Logo
×

শেষ পাতা

বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ

Icon

পার্বতীপুর ও দিনাজপুর প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ

দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রায় আড়াই লাখ মেট্রিক টন কয়লা মজুত থাকলেও বন্ধ হয়ে গেছে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন। সোমবার থেকে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতাসম্পন্ন এই কেন্দ্রের উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এটি চালু করতে অন্তত দুই সপ্তাহ সময় লাগতে পারে বলে প্রধান প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিক ইঙ্গিত দিয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পাশের বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কয়লার ওপর ভিত্তি করে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে পর্যায়ক্রমে মোট তিনটি ইউনিট স্থাপন করা হয়। এ তিনটি ইউনিটের মোট বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা ৫২৫ মেগাওয়াট। এর মধ্যে ১২৫ মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষমতাসম্পন্ন ১নং ইউনিট, অনুরূপ ১২৫ মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষমতাসম্পন্ন ২নং ইউনিট এবং ২৭৫ মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষমতাসম্পন্ন ৩নং ইউনিট। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ৭ সেপ্টেম্বর বন্ধ হয়ে যায় প্রথম ইউনিটটি। এর আগে ২০২০ সাল থেকেই বন্ধ ছিল দ্বিতীয় ইউনিট।

বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ইলেকট্রো হাইড্রলিক ওয়েল পাম্প (টারবাইন জেনারেল) নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সোমবার থেকে ২৭৫ মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষমতাসম্পন্ন তৃতীয় ইউনিটটিও বন্ধ হয়ে যায়। এর ফলে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন।

বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিক জানিয়েছেন, চুক্তিবদ্ধ চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের (হারবিন) সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। তবে তারা জানিয়েছে যন্ত্রাংশ পাঠাতে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ সময় লাগবে।

তিনি আরও জানান, ঠিকাদারি ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৫ বছরের চুক্তি আছে যে, তারা সব খুচরা যন্ত্রাংশ সরবরাহ করবে। কিন্তু ৫ বছরে তারা একটি যন্ত্রাংশও সরবরাহ করেনি। তাদের বারবার চিঠি দিয়েও কোনো সাড়া মেলেনি। চুক্তির কারণে ওই খুচরা যন্ত্রাংশ আমরাও কিনতে পারছি না।

তিনি বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি টারবাইন চালাতে দুটি ইলেকট্রো হাইড্রলিক ওয়েল পাম্প লাগে। ২০২২ সালে একটি ইলেকট্রো হাইড্রলিক ওয়েল পাম্প নষ্ট হয়ে যায়। তখন থেকে চুক্তিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেওয়া হলেও তারা যন্ত্রাংশ সরবরাহ করেনি। ফলে একটি পাম্প দিয়েই এতদিন ইউনিট চালু ছিল। সেই একটি পাম্পও সোমবার নষ্ট হওয়ায় পুরো প্ল্যান্ট বন্ধ হয়ে গেছে।

প্রধান প্রকৌশলী জানান, আমরা চুক্তিবদ্ধ চীনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছি। তারা জানিয়েছে, চীন থেকে যন্ত্রাংশ সরবরাহে দুই সপ্তাহ সময় লাগবে। বাংলাদেশে এই যন্ত্রাংশ পাওয়া যায় না। ফলে তা কেনাও যাচ্ছে না।

এদিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংশ্লিষ্টরা জানান, তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের তিনটি ইউনিট চালাতে দৈনিক ৫ হাজার ২শ টন কয়লার প্রয়োজন। বর্তমানে বিদ্যুৎকেন্দ্রে মজুত রয়েছে প্রায় আড়াই লাখ মেট্রিক টন কয়লা। কিন্তু কয়লাখনিতে কখনোই তিনটি ইউনিট একসঙ্গে চালানো হয়নি।

উল্লেখ্য, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কয়লার ওপর ভিত্তি করে ২০০৬ সালে চীনের কারিগরি সহায়তায় দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ১ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। প্রত্যাশা ছিল, দেশের উত্তরাঞ্চলে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো। মোট ৫২৫ মেগাওয়াট উৎপাদনক্ষমতাসম্পন্ন এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি কখনোই পুরোপুরি উৎপাদনে যেতে পারেনি। শুরু থেকেই এটি একের পর এক যান্ত্রিক ত্রুটির মধ্যে রয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম