তথ্য চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি দেবে তদন্ত কমিটি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ছবি: সংগৃহীত
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্যে ছয়জন নিহতের ঘটনায় গঠিত বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। ১৬ জুলাই সংঘর্ষের ঘটনাগুলোর বিষয়ে জানতে গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সাধারণের কাছে তথ্য চাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিটি। কমিটির একমাত্র সদস্য বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান বুধবার সুপ্রিমকোর্টে মেডিয়েশন সেন্টারে প্রথম বৈঠক শেষে এ বিষয়ে কথা বলেন। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত এ বৈঠক চলে।
এই বিচারক বলেন, আমরা আজ প্রথম মিটিং করেছি। দেশের সাধারণ মানুষ যাদের কাছে এ সংক্রান্ত তথ্যাদি রয়েছে, সেগুলো আমরা গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আহ্বান করব। আমার ওপর যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তা আমি সম্পূর্ণ সততা, নিষ্ঠা ও স্বচ্ছতার সঙ্গে পালন করব।
কোটা সংস্কার আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নিলে ১৬ জুলাই দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ বাধে। এর মধ্যে ঢাকায় দুজন, চট্টগ্রামে তিনজন এবং রংপুরে একজনের মৃত্যু হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ১৬ জুলাই এবং পরবর্তী সময়ে ঘটে যাওয়া সহিংসতা ও প্রাণহানির তদন্তে বৃহস্পতিবার এক সদস্যের এ বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
এ সম্পর্কিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ১৬ জুলাই দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত ঘটনায় নিহত হওয়া এবং সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত সহিংসতা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনা তদন্ত করবে এ কমিটি। তদন্ত শেষে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সরকারকে প্রতিবেদন দিতে হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার বিভাগ কমিটির সাচিবিক দায়িত্ব পালন করবে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামান বলেন, ‘৬ আগস্টের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে পারব। এ সময়ের ভেতরে তদন্ত কমিশনের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে পারবেন। ওই ছয়জনের বিষয়ে এ কমিশন গঠিত হয়েছে, এটার তদন্ত করব। পরবর্তী ঘটনার বিষয়ে পরে দেখা হবে। আমি আমার এখতিয়ারের ভেতরে সীমাবদ্ধ থাকব।’
কমিশনের তদন্ত ১৬ জুলাইয়ের ঘটনা নিয়েই হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার যে টার্মস অব প্রেফারেন্স আছে, সে অনুযায়ীই হবে। সে অনুযায়ী কমিশনের কার্যক্রম চলবে। এখন পর্যন্ত এ ছয়জনের মৃত্যুর ব্যাপারেই প্রজ্ঞাপনে বলা আছে।’
পরিস্থিতি আরেকটু স্বাভাবিক হলে এবং কমিশনের কার্যক্রম আরেকটু গুছিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হবে বলে আরেক প্রশ্নে জানান বিচারপতি দিলীরুজ্জামান।
ঘটনাস্থলগুলো পরিষ্কার করে ফেলা হয়েছে। এখন ঘটনাস্থান পরিদর্শনে প্রকৃত অবস্থা জানা যাবে কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে দিলীরুজ্জামান বলেন, ‘একটা অস্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছিল। কারফিউ ছিল, সাধারণ ছুটি ছিল। যে কারণে তাৎক্ষণিকভাবে সেখানে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। আমরা চেষ্টা করব সব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করার। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কমিশন কাজ শেষ করতে পারবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আশা করি শেষ করতে পারব।’
এর আগে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মাহমুদুল হোসাইন খান, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (আইন অনুবিভাগ) জাহেদা পারভীন, সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার শেখ মোহা. আমীনুল ইসলাম, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব তানভীর আহমেদ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব (জেলা ম্যাজিস্ট্রেসি নীতি অধিশাখা) মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন।