হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ১১ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর বাসায় ফিরলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় গুলশানের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’য় পৌঁছান তিনি। মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে বাসায় নেওয়া হয়।
চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, অত্যন্ত সংকটাবস্থায় ছিলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। পেসমেকার বসানোর পর এখন তার শারীরিক অবস্থা অনেকটা স্থিতিশীল। সে কারণে তাকে হাসপাতাল থেকে বাসায় নেওয়া হয়। বাসায় রেখেই তাকে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দেবেন মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকরা।
তিনি আরও বলেন, ‘ম্যাডাম মানসিকভাবে অত্যন্ত সবল ও সুস্থ আছেন। কিন্তু শারীরিকভাবে অত্যন্ত অসুস্থ। হার্টে তিনটি ব্লক ছিল, একটিতে রিং বসানো হয়েছিল। বাকি দুটিতে যে কোনো ধরনের শঙ্কা তৈরি করতে পারে। লিভার প্রতিস্থাপনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। পরিবার ও দলের পক্ষ থেকে তার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার জন্য ছয়বার আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কোনো এক অজানা কারণে বিদেশে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। অথচ অনেক মানুষের কোনো ধরনের অনুমতিরও প্রয়োজন হয় না, তাদের বিদেশের চিকিৎসার জন্য যেতে দেওয়া হয়। শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। একটি মিথ্যা মামলায় তাকে সাজা দিয়ে সাড়ে ছয় বছর ধরে কারান্তরীণ করে রেখেছে। আর দেশ লুটপাটকারীরা দেশে দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে, দেশের বাইরে যেতেও তাদের বাধা দেওয়া হচ্ছে না।’ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন বলে জানান ডা. জাহিদ হোসেন।
এর আগে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে হাসপাতাল থেকে বাসার উদ্দেশে রওনা হন খালেদা জিয়া। এ সময় গাড়ির চারপাশে অবস্থান নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়। সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় পৌঁছান তিনি। এর আগে হাসপাতাল এলাকায় বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী জমায়েত হন। এসব নেতাকর্মী খালেদা জিয়ার গাড়িবহরের সঙ্গে বাসা পর্যন্ত যান। এ সময় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান নেতাদের মধ্যে ছিলেন-অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরী, নিলোফার চৌধুরী মনি, রফিকুল আলম মজনু, নুরুল ইসলাম নয়ন, এসএম জাহাঙ্গীর, আব্দুল মোনায়েম মুন্না, মামুন হাসান, আকরামুল হাসান, সাইফ মাহমুদ জুয়েল, নাছির উদ্দিন নাছিরসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী। বাসভবন ফিরোজায় ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, সহ-স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আমিনুল হক প্রমুখ।
গত ২১ জুন দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর দ্রুত তাকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নেওয়া হয়। সবকিছু পর্যালোচনা করে বিদেশী চিকিৎসক ও মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শে গত ২৩ জুন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর হৃদযন্ত্রে স্থায়ী পেসমেকার বসানো হয় বলে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা জানান।