দুদকের মামলা
আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ জনগণ বিবেচনা করবে: ড. মুহাম্মদ ইউনূস
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে আমি অর্থ আত্মসাৎ করেছি। অর্থ পাচার করেছি। আমি সুদখোর। এ অপরাধগুলো আমার গায়ে লাগানোর মতো কিনা সেটা আপনারাই বিবেচনা করবেন।
আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেশের জনগণ বিবেচনা করবে। বৃহস্পতিবার গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের সংরক্ষিত ফান্ডের লভ্যাংশের ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের মামলায় ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানি শেষে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
এদিন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেনের আদালতে মামলাটি চার্জ শুনানির জন্য ছিল। এদিন আত্মসমর্পণ করে পূর্ব শর্তে জামিন আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে আদালত আগামী ধার্য তারিখ পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন। তবে সার্টিফিকেট কপি সংগ্রহ, শুনানির জন্য প্রস্তুত নন ও প্রথম ধার্য তারিখ হওয়ায় শুনানির পেছানোর আবেদন করা হয়। আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে ২ জুন চার্জ শুনানির পরবর্তী তারিখ ঠিক করেন।
আদালত থেকে বের হয়ে ড. ইউনূস বলেন, দুদক আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছে দুর্নীতির। আমি জালিয়াতি করেছি, অর্থ আত্মসাৎ করেছি, অর্থ পাচার করেছি। আমাকে বলা হয়েছে সুদখোর। বহুবার বলা হয়েছে। আপনারা এটা গ্রহণ করেননি। কারণ গ্রামীণ ব্যাংকের মালিক আমি নই। সুদ যদি নিয়ে থাকে মালিকরাই নিয়েছেন। আমাকে যখন গ্রামীণ ব্যাংক থেকে বের করে দেওয়া হয় তখন ৯৭ শতাংশের মালিক ছিলেন তারা। আমি একজন কর্মচারী মাত্র। আমি কখনো গ্রামীণ ব্যাংকের মালিক ছিলাম না।
তিনি বলেন, বলা হয়েছে-আমি পদ্মা সেতু বানচালে বিশ্বব্যাংকের টাকা বন্ধ করে দিয়েছি। আমাকে পদ্মা নদীতে চুবানো দরকার, বহুবার বলা হয়েছে। বড় বড় অনুষ্ঠানে বলা হয়েছে। আপনারা সেটা গ্রহণ করেননি। আজ যে অভিযোগ এনেছে, সেগুলো একই নিয়মের, একই কাহিনীর অন্তর্ভুক্ত। কাজেই আপনাদের বিবেচনার ওপর ছেড়ে দিলাম। আমি আপনাদের বিবেচনায় বিশ্বাসী।
এর আগে ২ এপ্রিল ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আস সামছ জগলুল হোসেন। তিনি পরবর্তী বিচারের জন্য ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এ বদলির আদেশ দেন। চার্জশিট দাখিলের পর ৩ মার্চ আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করলে আদালত মঞ্জুর করেন। ১ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় এ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান।
চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন-গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম, এসএম হুজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, আইনজীবী ইউসুফ আলী ও জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান, ইউনিয়নের প্রতিনিধি মাইনুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক কামরুল হাসান।
গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বছরের ৩০ মে দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থার উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান মামলা করেন।