Logo
Logo
×

শেষ পাতা

উপজেলা নির্বাচনে বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ-গুলি ভাঙচুর, আহত ৩৩

নির্বাচনি অফিস ও যানবাহন ভাঙচুর, গ্রেফতার ৮

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

উপজেলা নির্বাচনে বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ-গুলি ভাঙচুর, আহত ৩৩

দেশের বিভিন্ন স্থানে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতায় ৩৩ জন আহত হয়েছেন। এসব ঘটনায় পুলিশ আটজনকে গ্রেফতার করেছে। পাবনার সুজানগরে দুই চেয়ারম্যানপ্রার্থীর সমর্থক ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষে ৪ পুলিশসহ ১২ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২ জন গুলিবিদ্ধ।

মাদারীপুরে প্রতিপক্ষের দুই কর্মীকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। মাগুরার শ্রীপুরে দুই চেয়ারম্যানপ্রার্থীর সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন। এ সময় নির্বাচনি অফিস ও যানবাহন ভাঙচুর করা হয়। নাটোরের বাগাতিপাড়ায় চেয়ারম্যানপ্রার্থী বিএনপি নেতার ওপর হামলায় ৫ জন আহত হয়েছেন। বরিশালে নির্বাচনি সহিংসতার খবর সংগ্রহে গিয়ে তিন সাংবাদিক মারধরের শিকার হন।

এছাড়া দিনাজপুরের বিরামপুর ও গাজীপুরের কালীগঞ্জে সহিংতায় একজন আহত এবং প্রতিপক্ষের পোস্টার ছেঁড়া, প্রচারে বাধা ও নেতাকর্মীদের হুমকিদমকির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

পাবনা : জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে সুজানগরে সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর ওহাব এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীনের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। এবারের উপজেলা নির্বাচনে ওহাব ও শাহীন দুজনই চেয়ারম্যানপ্রার্থী।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় ভায়না ইউনিয়নের কালির মোড়ে শাহীনের সমর্থকদের সঙ্গে ওহাব গ্রুপের আমিন চেয়ারম্যানের সমর্থকদের সংঘর্ষ বাধে। এ সময় প্রতিপক্ষের ওপর গুলিও ছোড়া হয়।

খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেখানে পুলিশ গেলে পুলিশের সঙ্গেও শাহীনের সমর্থকদের সংঘর্ষ শুরু হয়। ত্রিমুখী সংঘর্ষে পুলিশসহ ১২ জন আহত হয়েছেন। তাদের ১০ জনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে ভায়না ইউনিয়নের ভায়না এলাকার রশিদ প্রামাণিকের ছেলে বাদশা প্রামাণিক, শেকেল শেখের ছেলে মতিন শেখ ও মৃত আজগর আলীর ছেলে আব্দুল আওয়ালের অবস্থা গুরুতর।

এছাড়া সুজানগর থানার উপপরিদর্শক মনসুরসহ ৪ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দেশীয় অস্ত্রসহ ৩ জনকে আটক করেছে। শাহিনুজ্জামান শাহিন বলেন, আমিন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আমার লোকজনের ওপর গুলি চালানো হয়েছে। অন্যদিকে ভায়না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমিন উদ্দিন বলেন, আমার বাড়ির ওপরে শাহিনুজ্জামান শাহীনের লোকজন হামলা করেছে।

টেকেরহাট (মাদারীপুর) : ভুক্তভোগীরা জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মাদারীপুর শহর থেকে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী আসিবুর রহমান আসিব খানের নির্বাচনি পোস্টার নিয়ে ইজিবাইকে নিজগ্রামে যাচ্ছিলেন মানিক সরকার। সঙ্গে ছিলেন সহযোগী সুকদেব সরকার। তালতলায় পৌঁছলে অপর চেয়ারম্যানপ্রার্থী পাভেলুর রহমান শফিক খানের সমর্থক দত্ত কেন্দুয়া গ্রামের জালাল হাওলাদারের ছেলে স্বপন হাওলাদার ইজিবাইকের গতিরোধ করেন।

এ সময় মানিক ও সুকদেবকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করা হয়। মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এএইচএম সালাউদ্দিন বলেন, আহতদের উদ্ধারের পর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় বুধবার থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী মানিক সরকার।

মাগুরা : বুধবার রাতে শ্রীপুর উপজেলার গয়েশপুর ইউনিয়নের নবগ্রাম বাজারে চেয়ারম্যানপ্রার্থী শরিয়াত উল্লাহ রাজনের একটি নির্বাচনি অফিস চালু করা হয়। এ সময় অপর চেয়ারম্যানপ্রার্থী মুতাসিম বিল্লাহ সংগ্রামের কর্মীরা ওই বাজারে উপস্থিত হয়ে মিছিল শুরু করে। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

এ সময় ১২টি মোটরসাইকেল ও নির্বাচনি অফিস ভাঙচুর করা হয়। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ তাসমীম আলম বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পাশাপাশি সংঘর্ষে জড়িত ৪ জনকে আটক করা হয়েছে।

নাটোর : হামলার স্বীকার বাগাতিপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যানপ্রার্থী উপজেলা বিএনপির যুগ্মসম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন মানিক বলেন, বুধবার সন্ধ্যায় সোনাপুর বাজারে স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় প্রতিপক্ষ প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শরিফুল ইসলাম শরিফের সমর্থক সাবেক ইউপি সদস্য আবুল কালাম আজাদ ও তার লোকজন আমার ওপর চড়াও হয়।

এরপর তারা লোহার রড ও চেয়ার দিয়ে মারধর শুরু করে। এ সময় হামলাকারীদের হাত থেকে আমাকে বাঁচাতে গিয়ে ৪-৫ সমর্থক আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় রাতেই মানিকের ভাই এসএম লেলিন বাদী হয়ে ৯ জনের বিরুদ্ধে বাগাতিপাড়া মডেল থানায় মামলা করেছেন।

তবে শরিফুল ইসলাম শরীফ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এমন কোনো হামলার ঘটনা তার জানা নেই।

বরিশাল : সদর উপজেলায় বুধবার রাতে নির্বাচনি সহিংতায় মোটরসাইকেল প্রতীকের চেয়ারম্যানপ্রার্থী এসএম জাকির হোসেনের এক কর্মী আহত হন। এ খবর সংগ্রহে গিয়ে আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যানপ্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় তিন সংবাদকর্মী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় মামলার পর বরিশাল সদর উপজেলার জাগুয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য সুজন হাওলাদারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

আহত সংবাদকর্মীরা হলেন বেলাল হোসেন, এইচএম সোহেল ও আব্দুর রহমান। তাদের বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বিরামপুর (দিনাজপুর) : উপজেলার জোতবানী ইউনিয়নের কেটরাহাটে বুধবার রাতে ঘোড়া প্রতীকের চেয়ারম্যানপ্রার্থী পারভেজ কবীরের নির্বাচনি অফিস ভাঙচুর করা হয়েছে। প্রতিপক্ষ আনারস প্রতীকের প্রার্থী মতিয়ার রহমানের কর্মী চকশুলবান গ্রামের শাহজাহান আলী, সামছুজ্জোহা রুবেল, তৈয়ব আলী, সাগাইহাটা গ্রামের আবুল খায়ের মুকুল, আবু তারেক রুবেল, শাকিল হোসেন এ হামলা চালায়। এ সময় লোহার রড, বাঁশ দিয়ে ঘোড়া সমর্থক নুরুন্নবী মণ্ডল নয়নকে বেধড়ক মারধর করা হয়। বিরামপুর থানার ওসি সুব্রত কুমার সরকার জানান, এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) : কালীগঞ্জে ভাইস চেয়ারম্যান (উড়োজাহাজ) প্রার্থী এমএএ সাদ্দাম হোসেন রুবেলের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা, প্রচারে বাধা ও নেতাকর্মীদের হুমকিদমকির অভিযোগ উঠেছে প্রতিপক্ষ টিয়া প্রতীকের প্রার্থী মোজাম্মেল হক ও তার কর্মী-সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় রামীম শেখ বাদী হয়ে টিয়া প্রতীকের কর্মী ফয়সাল শেখের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন।

এছাড়া প্রার্থী রুবেল বুধবার বিকালে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম