তৃণমূলে আ.লীগের রাজনীতি
ঈদের আমেজ বাড়াবে উপজেলা নির্বাচন
ঈদ প্রার্থীদের প্রচারকাজ সহজ করেছে -ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন * দেশে নির্বাচনের সুন্দর পরিবেশ রয়েছে -মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আসন্ন ঈদুল ফিতরের পরেই শুরু হচ্ছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। ফলে ঈদ কেন্দ্র করে এবার দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ ভোটারের কাছেও ছুটছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে টানিয়েছেন পোস্টার-ব্যানার-ফেস্টুন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ অনলাইনেও ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী সাধারণ মানুষের পাশে থেকে মন জয় করার চেষ্টা করছেন। প্রার্থী ও সমর্থকদের পদচারণায় ইতোমধ্যেই তৈরি হয়েছে ভিন্ন আমেজ।
এছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর প্রথম ঈদ হওয়ায় স্ব স্ব এলাকায় ছুটছেন স্থানীয় এমপি-মন্ত্রীরাও। নির্বাচনি এলাকায় অবস্থানকালে তারাও গুরুত্ব দিচ্ছেন উপজেলা নির্বাচনকে। দলের হাইকমান্ডের নিষেধ থাকলেও পছন্দের প্রার্থীদের নানাভাবে সামনে রাখার চেষ্টা চালাচ্ছেন তারাও। সব মিলিয়ে এবারের ঈদের আমেজ বাড়িয়ে দিয়েছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন যুগান্তরকে বলেন, দেশের সব রাজনৈতিক দলের জন্যই উপজেলা পরিষদ নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। এই নির্বাচনের মধ্যদিয়ে সরাসরি সাধারণ মানুষের সঙ্গে রাজনীতিবিদদের একটা সেতুবন্ধন তৈরি হয়। এবার ঠিক ঈদের পরপরই স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচন। যারা নির্বাচন করবে, যারা নির্বাচনে প্রার্থী হবে, তারা ইতোমধ্যেই নির্বাচনি প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। সাধারণ মানুষের কাছে যাচ্ছে। নিজেদের জন্য ভোট প্রার্থনা করছে।
তিনি আরও বলেন, ভোটের আগে ঈদ প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণার কাজ সহজ করে দিয়েছে। নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় কোনো প্রার্থী দিচ্ছে না। সাধারণ মানুষ যাকে যোগ্য মনে করবে তাকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এবার যোগ্যরাই নির্বাচিত হবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম যুগান্তরকে বলেন, এই মুহূর্তে দেশে নির্বাচনের সুন্দর পরিবেশ রয়েছে। কোনো ধরনের সমস্যা নেই। প্রার্থীরাও নির্বাচনের জন্য মুখিয়ে আছে। তারা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে এবার উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনেক ভালো ও সুন্দর হবে। তিনি আরও বলেন, ঈদের সাথে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। তবে ঈদ যেহেতু আমাদের বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান। ঈদের মাধ্যমে সরাসরি সাধারণ মানুষের কাছে যাওয়া যায়। সে কারণে নির্বাচনের আগে ঈদের গুরুত্ব তো থাকবেই।
আগামী মে থেকে দেশে শুরু হবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। ইতোমধ্যে দুই ধাপের জন্য নির্বাচনি তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রথম ধাপে গ্রহণ হবে ৮ মে, আর ২১ মে দ্বিতীয় ধাপ। তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই মাঠে নেমেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগের মধ্যদিয়ে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছেন। রমজানে সাধারণ ভোটারের কাছে ছুটেছেন অনেকে। চাল, ডাল, তৈলসহ নিত্যপণ্য বিতরণ করেছেন সমাজের অসহায়, দরিদ্র ও নিম্নবিত্তের মানুষের মাঝে। অনেকে শাড়ি-লুঙ্গি বিতরণ শুরু করেছেন। দিচ্ছেন নানা উন্নয়ন প্রতিশ্রুতি।
এদিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে প্রার্থী না দিলেও দলটির সংসদ-সদস্য, মন্ত্রী ও স্থানীয় নেতারা নিজেদের নিকটাত্মীয় ও স্বজনদের প্রার্থী করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে অনেকের বিরুদ্ধে। এবার ঈদে তাদের সরব উপস্থিতিতে দলীয় রাজনীতিতে বড় প্রভাব পড়বে বলেই মনে করছেন নেতাকর্মীরা।
যদিও বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণে কঠোর অবস্থানে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। ইতোমধ্যেই দলের বিভাগীয় বৈঠকগুলোতে এমপি-মন্ত্রীদের পক্ষপাতিত্ব না করার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কেউ নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করলে তাকে সাংগঠনিক শাস্তির আওতায় নিয়ে আশা হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।