দেশজুড়ে কর্মবিরতিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা
মিলছে না সেবা, চরম ভোগান্তিতে রোগীরা
কেউ মারা গেল নাকি বাঁচল সেটা তাদের দেখার দরকার নেই
যুগান্তর প্রতিবেদন, চট্টগ্রাম ও খুলনা ব্যুরো
প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ত্রিশ হাজার টাকা ভাতা এবং কর্মস্থলে নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ চার দফা দাবিতে একযোগে সারা দেশের প্রায় সব সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪৮ ঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করছে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ (ইচিপ)। রোববার সকাল থেকে মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালগুলোতে এই কর্মবিরতি পালন করছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এতে দেশজুড়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগীরা। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে একইদিন কর্মবিরতি পালন করেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রেখেছে পোস্টগ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসক ও ইন্টার্ন চিকিৎসকের দুটি সংগঠনের অন্তত দুশ চিকিৎসক।
এছাড়া শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সদস্যরা কর্মবিরতি পালন করছেন।
রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, চিকিৎসক না থাকায় সেবা নিতে সমস্যা হচ্ছে। রোগীদের ভোগান্তিও পোহাতে হচ্ছে। চিকিৎসকরা নানা কারণে ব্যস্ততা দেখাচ্ছেন। কেউ মারা গেল নাকি বাঁচল সেটা তাদের দেখার দরকার নেই। চিকিৎসকদের কর্মবিরতির কারণে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা না পেয়ে রোগীরা ফিরে যাচ্ছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে।
খুলনার হাফিজ নগর এলাকার বাসিন্দা জোসনা বেগম (৫০) ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে খুমেক হাসপাতালের বারান্দায় চিকিৎসা নিচ্ছন। ৬ দিন আগে ভর্তি হওয়া এ রোগীর ছেলের বউ মুসলিমা বলেন, শনিবার চিকিৎসক এসে খোঁজ নিয়েছেন। কিন্তু রোববার সকাল থেকে কোনো চিকিৎসক আসেননি।
তবে খুমেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. মো. হুসাইন শাফায়াত বলেন, ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল হলেও তিনগুণ রোগী থাকে। পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় আমরা ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ওপর নির্ভরশীল। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে খুব দ্রুতই এটার সমাধান হবে। রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে সব ধরনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আমাদের যে জনবল আছে তাই নিয়ে আমরা সেবা দিয়ে যাচ্ছি।
শনিবার আলাদা বিজ্ঞপ্তিতে এ কর্মবিরতি ঘোষণা করা হয়। চিকিৎসকদের দাবিগুলো হলো- ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাতা ৩০ হাজারে উন্নীত করা, বকেয়া ভাতা পরিশোধ, বিএসএমএমইউ-এর অধীনে ১২টি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের ভাতা চালু এবং চিকিৎসকদের সুরক্ষা আইন সংসদে পাশ ও বাস্তবায়ন।