গাছায় চাকরিপ্রার্থীকে আটকে নির্যাতন মুক্তিপণ দাবি
প্রতারক চক্রের ১৪ জন আটক উদ্ধার ২৭
গাজীপুর ও গাছা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
গাজীপুরের গাছায় ভুয়া সিকিউরিটি এজেন্সির অফিসে চাকরিপ্রার্থীকে আটকে শারীরিক নির্যাতন করে মুক্তিপণ দাবি করে একটি চক্র। সেখানে অভিযান চালিয়ে চক্রের ১৪ জনকে আটক করেছে র্যাব। এ সময় বন্দিদশা থেকে ২৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় গাজীপুর মহানগরের গাছা থানার হারিকেন রোডের রশিদ মার্কেটে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাত ১০টায় সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় র্যাব। আটক ব্যক্তিরা হলেন-নীলফামারীর জলঢাকার শফিকুল ইসলামের ছেলে আস্তাকুল আমিন আনাম, নীলফামারী সদরের শফিকুল ইসলামের ছেলে তৌফিক, রাজশাহী বাঘমারার রনিছার রহমানের ছেলে ইমরান হোসেন, নাটোরের আব্দুল আজিজের ছেলে জুনায়েদ, ময়মনসিংহ সদরের রফিকুল ইসলামের ছেলে আজিজুল হাকিম, ভালুকার রমজান আলীর ছেলে রনি আহমেদ, একই উপজেলার হালিমুদ্দিন সরকারের ছেলে সালাউদ্দিন সরকার, ঈশ্বরদীর ছানোয়ার হোসেনের ছেলে জিসান হোসেন, কিশোরগঞ্জের রায়হান, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আতিক হাসান, বাঞ্ছারামপুরের শাহজাহান মিয়ার মেয়ে সম্পা আক্তার, শেরপুর সদরের সারোয়ার হোসেনের মেয়ে বিউটি খাতুন, যশোর কোতোয়ালির আকতারুজ্জামানের মেয়ে বর্ষা খাতুন ও বরিশাল সদরের জহিরুল ইসলামের মেয়ে তাহসিন আক্তার মীম।
র্যাব-১ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া অফিসার) সহকারী পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুর রহমান জানান, ১৯ মার্চ অনলাইনে ‘বেস্ট অ্যাকশন সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেড’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের চাকরির বিজ্ঞাপন দেখে সাকিব হোসেন ও ফারজানা আক্তার নামে দুই তরুণ-তরুণী গাছার হারিকেন এলাকায় ওই কোম্পানির অফিসে যান। পরে কোম্পানির লোকজন তাদের আটকে শারীরিক নির্যাতন করে এবং পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে ভুক্তভোগীদের পরিবার বিষয়টি র্যাব-১-এ জানায়। এরপর বুধবার দুপুরে র্যাব সেখানে অভিযান চালিয়ে সাকিব ও ফারজানাসহ ২৭ জনকে উদ্ধার ও ১৪ প্রতারককে আটক করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা জানান, তারা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র। গাছার হারিকেন রোডের রশিদ মার্কেটে ভাড়া বাসাকে তারা অস্থায়ী অফিস হিসাবে ব্যবহার করে আসছিল। ৩ মাস ধরে তারা অনলাইনে ভুয়া চাকরির বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয়। এই চক্রের সদস্য ২০ জন। অন্য সদস্যরা বিভিন্ন এলাকার চাকরিপ্রত্যাশীদের অর্থের বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার কথা বলে অফিসে নিয়ে আসত। পরে চাকরিপ্রত্যাশীদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে এমনকি আটকে রেখে নির্যাতন করে পরিবারের কাছ থেকে টাকা আদায় করত। এভাবে তারা প্রায় কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
উদ্ধার হওয়া সাকিব হোসেন জানান, তিনি বরিশাল থেকে অনলাইনে চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেখে গাজীপুরে এসেছিলেন। প্রতারক চক্রের অফিসে আসার পর তাকে একটি কক্ষে আটকে রেখে পরিবারের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। দ্রুত টাকা আনার জন্য এ চক্রের টর্চার সেলে তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। অফিসের একটি ছোট্ট প্রকোষ্ঠ টর্চার সেল হিসাবে ব্যবহার হতো। টয়লেট সদৃশ ওই প্রকোষ্ঠে কোনো জানালা বা আলো ঢোকার ব্যবস্থা নেই।
র্যাব-১-এর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের জানান, অনলাইনে ভুয়া চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিত চক্রটি।