জবিতে যৌন নিপীড়ন
চেয়ারম্যানকে অব্যাহতি শিক্ষক ইমন বরখাস্ত
জবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের দায়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের প্রভাষক আবু শাহেদ ইমনকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। অপরদিকে শিক্ষার্থীকে অসহযোগিতা করায় বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জুনায়েদ হালিমকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিন্ডিকেট সভা শেষে জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম বলেন, যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ সেলের দেওয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সিন্ডিকেট দুজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। তিনি বলেন, যৌন নিপীড়নের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আশা করি-খুব শিগগিরই ওই কমিটির প্রতিবেদন পাব। তিনি আরও বলেন, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী অবন্তিকার মৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আম্মান সিদ্দিকী ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ নিয়ে সিন্ডিকেটে আলোচনা হয়েছে।
সিন্ডিকেট সভার আগে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী যুগান্তরকে বলেন, তাকে যৌন নিপীড়নের ঘটনার বিচারকাজে বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জুনায়েদ হালিম প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। অভিযুক্ত প্রভাষক আবু শাহেদ ইমনকে তিনি সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন। যৌন নিপীড়ন ও বুলিংয়ের বিচার চেয়ে মঙ্গলবার ওই ছাত্রী রাষ্ট্রপতি ও জবি আচার্য বরাবর আবেদন করেন। ২০১৯ সালের ৮ নভেম্বর জবি ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষক আবু শাহেদ ইমনের বিরুদ্ধে ওই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়ে অভিযোগ দিলেও বিচার হয়নি। এ ঘটনায় সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে ২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ওই ছাত্রী জবি শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে একাই প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রতিকার দাবি করেন। সম্প্রতি জবি শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় সোচ্চার হন তিনি।
পাঁচ দফা দাবিতে জবি উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি : ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার মৃত্যুসহ আগের ঘটে যাওয়া যৌন নিপীড়নের অভিযোগের ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। বৃহস্পতিবার উপাচার্য ও প্রক্টর বরাবর শিক্ষার্থীরা পাঁচ দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি দেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের উপাচার্য এ আশ্বাস দেন। তবে স্বাভাবিক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। স্মারকলিপি প্রদান শেষে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষার্থী শাহ্ সাকিব সোহবান বলেন, জবিকে শিক্ষার্থীবান্ধব ও ক্যাম্পাসকে নিরাপদ করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। আগের অভিযোগ আমলে না নিলেও এখন থেকে তা গুরুত্বের সঙ্গে দেখার ঘোষণাও দিয়েছেন প্রশাসন। ২০২২ সালের ৮ মার্চ অংকন বিশ্বাসের রহস্যজনক মৃত্যুর বিষয়ে প্রশাসনকে সুষ্ঠু তদন্তেরও দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। অংকনের মৃত্যুর জন্য দায়ীদের বিচারের দাবিতে আগামী রোববার গণস্বাক্ষর কর্মসূচির ঘোষণা করা হয়। এ দিন নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।