দোয়ারাবাজারে প্রেমিককে বেঁধে প্রেমিকাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সুনামগঞ্জে প্রেমিককে বেঁধে রেখে প্রেমিকাকে সংঘদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার মান্নারগাঁও ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয় থানায় মামলা হয়েছে।
জানা যায়, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পলাশ গ্রামের এক যুবক হবিগঞ্জের মাধবপুরে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। বেশ কিছু দিন ওখানে অবস্থান করার সুবাদে এক কিশোরীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক হয়। বিয়ে করে ঘর বাঁধার আশায় শুক্রবার দোয়ারা বাজারের কামারগাঁওয়ে বন্ধু আফাজ উদ্দিনের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন তারা। সন্ধ্যায় দোয়ারাবাজারের আজমপুর খেয়াঘাটে একই গ্রামের সিএনজিচালক আব্দুল করিমের সঙ্গে তাদের কথা হয়। আব্দুল করিম তাদের আফাজ উদ্দিনের বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে সিএনজিতে তোলে। রাতে জালালপুর গ্রামের ভেতরে গিয়ে সিএনজিতে গ্যাস নেই জানিয়ে দুজনকে নামিয়ে দেয় চালক। এরপর জালালপুরের মান্নারগাঁও ইউনিয়নের চার নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি আফছর উদ্দিনকে (৩৫) ডেকে এনে দুজনকে তুলে দেয়। আফছর উদ্দিন দুজনকে চর থাপ্পড় দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে বলে, তোমাদের কাছে কোনো কাবিননামা নেই। তোমরা একসঙ্গে কীভাবে থাকবে। তোমাদের পুলিশে দেওয়া হবে। ভয়ে যুবক তার বন্ধুর বাবা মিয়াজান আলীকে ফোন দেয়। মিয়াজান আলী ঘটনাস্থলে গেলে আফছর আলী জানায়, রাতের বেলা এদেরকে এভাবে দেওয়া যাবে না। সকালে পুলিশে দেওয়া হবে জানিয়ে মিয়াজান আলীকে বিদায় করে দেয় আফছর।
পরে রাত ১টার দিকে দুজনকে জালালপুরের ফয়জুল বারীর মানুষশূন্য বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে যুবককে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে আফছর উদ্দিন, ফয়জুল বারী, কামারগাঁওয়ের ইদ্রিছ আলীর ছেলে আব্দুল করিম ও জালালপুরের হায়াত আলীর ছেলে ছয়ফুল ইসলাম পালাক্রমে কিশোরীকে ধর্ষণ করে। ঘটনার পর অসুস্থ কিশোরী ও তার প্রেমিককে সিএনজিতে তুলে সুনামগঞ্জের উদ্দেশে রওনা দেয় চালক আব্দুল করিম। ভোর সাড়ে ৪টায় কাটাখালি বাজারের পাশে পৌঁছে স্টার্ট বন্ধ হয়ে গেছে জানিয়ে দুজনকে নেমে পেছন দিকে ধাক্কা দিতে বলে চালক। চালকের কথা মতো দুজন নেমে পেছন দিকে ধাক্কা দিয়ে যেতেই দ্রুত সিএনজি নিয়ে সটকে পড়ে চালক করিম। শেষে সকাল পর্যন্ত একটি বাড়িতে আশ্রয় নেয় ওই যুবক ও কিশোরী।
সকালে স্থানীয় সিকান্দার আলীর (অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য) সহযোগিতা চায় নির্যাতিতা কিশোরী ও তার প্রেমিক। সিকান্দার আলী শনিবার দুপুরে দুজন ইউপি সদস্যকে খবর দিয়ে বিষয়টি জানান এবং পুলিশকে খবর দেন। বিকালে পুলিশ এসে নির্যাতিতা মেয়ে ও তার প্রেমিককে হেফাজতে নিয়ে যায়।
জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল খালেক বলেন, আওয়ামী লীগের কেউ এ ধরনের ঘৃণ্য ঘটনায় যুক্ত থাকলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) রাজন কুমার দাস বলেন, এ ঘটনায় থানায় সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলা হয়েছে। পুলিশ অভিযুক্তদের গ্রেফতারে কাজ করছে।