সিলগালা ডায়াগনস্টিক খুলে অস্ত্রোপচার
নবীগঞ্জে খতনায় ভুল, সংকটে শিশুর জীবন
হবিগঞ্জ ও নবীগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে সিলগালা করা একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে খতনার সময় তামিম আহমেদ (১২) নামে এক শিশুর পুরুষাঙ্গ আংশিক কেটে ফেলা হয়েছে। শিশুটিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় নবীগঞ্জের আউশকান্দি বাজারে কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। ১৫ দিন আগে ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি সিলগালা করে দিয়েছিল প্রশাসন।
এ ঘটনায় রাতে কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক, চিকিৎসকসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন আহত শিশুর চাচা হারুন মিয়া।
নবীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহীন দেলোয়ার যুগান্তরকে বলেন, ১৫ দিন আগে কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি সিলগালা করা হয়েছিল। সিলগালা করা ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি কেন খোলা হলো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
হারুন মিয়া যুগান্তরকে বলেন, ভুল অপারেশন করে আমার ভাতিজার পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলা হয়েছে। এতে অনেক রক্তক্ষরণ হয়। সে ব্যথায় চিৎকার শুরু করলে চিকিৎসক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক তাকে উলটো মারধর করে। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়, বুধবার বিকালে নবীগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর গ্রামের আব্দুস শহীদের ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র তামিম আহমেদকে খতনা করানোর জন্য কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক সুহুল আমিন ও চিকিৎসক ডা. জহিরুল ইসলাম চৌধুরী জয় সিলগালা করা তালা খুলে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে তাকে খতনা শুরু করেন। এর আগে তাদের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা নেওয়া হয়। হঠাৎ তামিম চিৎকার শুরু করলে তার বাবা-মা ও আত্মীয়স্বজন অপারেশন থিয়েটারে প্রবেশ করে দেখতে পান, মালিক ও চিকিৎসক তামিমকে চড়থাপ্পড় মারছেন। এ সময় তামিমের বাবা-মা প্রতিবাদ করলে তাদেরকে ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে বের করে দেওয়া হয়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় জনতা ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি ঘেরাও করে রাখেন।
এদিকে খবর পেয়ে নবীগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি এমএ আহমদ আজাদসহ সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টি জানতে চান এবং লাইভে প্রচার করেন। এ সময় ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক সুহুল আমিন সাংবাদিকদের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেন। পরে উপস্থিত জনতা শিশুটিকে উদ্ধার করে সিলেটের একটি হাসপাতালে পাঠায়।
নবীগঞ্জ উপজেলা টিএইচও ডা. আব্দুস ছামাদ বলেন, অনুমোদনহীন কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার সিলগালা করা হয়েছিল। কারা এটি খুলছে, আমরা জানি না। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসুক আলী বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমরা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।