আওয়ামী সিন্ডিকেটের মুনাফার কারণে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি: রিজভী
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আওয়ামী সিন্ডিকেটের মুনাফার জন্য সরকার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, সাধারণ মানুষের কথা বিবেচনা না করে ‘ডামি সরকার’ আবারও বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করেছে।
এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করে যখন ইচ্ছা বিদ্যুতের দাম বাড়াচ্ছে তারা। এ স্বেচ্ছাচারী আইন অনুমোদন করিয়ে জনগণকে নিপীড়ন ও ফতুর করার নীতি গ্রহণ করেছে সিন্ডিকেট সরকার। বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মঙ্গলবার বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, ১ মার্চ থেকে বিদ্যুতের দাম ইউনিটপ্রতি ৩৪ পয়সা থেকে ৭০ পয়সা বৃদ্ধি কার্যকর হবে। এ হিসাবে বিদ্যুতের দাম গড়ে ইউনিটপ্রতি ৫২ পয়সা করে বাড়বে। শতকরা হিসাবে তা ছয় শতাংশের মতো। বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম আড়াই শতাংশ থেকে ৫ দশমিক ৩৬ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। গণমানুষ, ভোক্তা অধিকার কিংবা ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর যুক্তি-অনুরোধ কোনোকিছুরই তোয়াক্কা না করে যখনই লুটেরা সরকারের টাকায় টান পড়ছে, তখনই গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট কাটছে।’
তিনি বলেন, ‘ডামি সরকার আর্থিকভাবে দেউলিয়া হয়ে সাধারণ জনগণের পকেট শূন্য করার নীতি গ্রহণ করেছে। কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার বেগমপাড়ায় দামি বাড়িগাড়ির জন্য টাকা দরকার। এজন্যই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি।’
রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী আগ্রাসী সিন্ডিকেটের মুনাফার জন্য সরকার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করেছে। গ্যাস সংকট জিইয়ে রেখে এলএনজির ব্যবসার দ্বার খুলেছে। সরকারঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ব্যবসার মাধ্যমে নিজেদের পকেট ভরছেন। এটা স্পষ্ট, বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের লোকসান আসলে সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান ও দায়িত্বশীলদের অব্যবস্থাপনা, অবহেলা আর দুর্নীতির ফল। কিন্তু এর দায় মেটাতে হচ্ছে জনগণকে।’
রিজভী বলেন, ‘আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে বলেছেন, মিথ্যা তথ্য ও মিথ্যা খবর দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি বন্ধে সংসদে আইন আনা হবে। অলরেডি একটি আইন আছে, যেটা হচ্ছে সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্ট, আরও কিছু আইন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই সংসদে আসবে। অর্থাৎ নাগরিকদের ওপর নজরদারি আরও তীব্র হবে, এটি সমগ্র জাতিকে পর্যবেক্ষণে রাখার এক নতুন কালো আইন প্রণয়নের আলামত।
মূলত সরকারের দুঃশাসন, লুটপাট ও বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ যাতে কোনো কথা বলতে না পারে, সেজন্যই একের পর এক ড্রাকোনিয়ান আইন তৈরি করছে সরকার।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচনি ব্যবস্থাকে কলুষিত করে ডামি সরকার মানুষের ন্যূনতম অধিকার দিতে রাজি নয়। তাদের কাছে জনগণ নিতান্তই গৌণ, উপেক্ষিত, তাচ্ছিল্যের একটি বিষয়। ১৯৭৫ সালে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে সরকার নিয়ন্ত্রিত ৪টি পত্রিকা ছাড়া সব পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।’
রিজভী বলেন, ‘অবৈধ সরকার আবারও নতুন করে গ্রেফতার শুরু করেছে। সভা-সমাবেশে পুলিশ ও সন্ত্রাসী দিয়ে হামলা পরিচালনা করছে। গণতন্ত্রমনা নেতাকর্মীদের রাস্তায় ফেলে শারীরিক অত্যাচার করা হচ্ছে। সরকারি এই নিষ্ঠুর জাঁতাকলে দেশে মানবাধিকার, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও আশা-আকাঙ্ক্ষাকে অবরুদ্ধ করা হয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. মো. আবদুল কুদ্দুস, অধ্যাপক ড. শাহিদা রফিক, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, আমিনুল ইসলাম, তরিকুল আলম তেনজিং প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।