মসিক নির্বাচন
জমজমাট প্রচার ত্রিমুখী লড়াইয়ের আভাস
অমিত রায়, ময়মনসিংহ
প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন (মসিক) নির্বাচনে জমে উঠেছে প্রচার। ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থী এবং তাদের কর্মী-সমর্থকরা। পোস্টারে ছেয়ে গেছে নগরীর অলিগলি ও সড়ক। গান এবং নানা কথার ছন্দে চলছে মাইকিং।
প্রার্থীরা কর্মীদের নিয়ে ছুটছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। নগরীর উন্নয়নে দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। গভীর রাত পর্যন্ত চলছে উঠান বৈঠক। এদিকে ভোটারদের মাঝেও চলছে নানা জল্পনাকল্পনা, হিসাবনিকাশ।
২০১৮ সালে ৩৩টি ওয়ার্ড নিয়ে ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশন গঠনের পর ৯ মার্চ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দ্বিতীয় নির্বাচন। এবার মেয়র পদে পাঁচজন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৪৯ জন এবং ১১টি সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদে ৬৯ জন নারী প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
মেয়র পদে প্রার্থীরা হলেন ‘টেবিল ঘড়ি’ প্রতীকের সাবেক মেয়র মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকরামুল হক টিটু, ‘হাতি’ প্রতীকের মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সাদেকুল হক খান (সাদেক খান মিল্কী টজু), ‘ঘোড়া’ প্রতীকের জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এহতেশামুল আলম, ‘লাঙ্গল’ প্রতীকের জাতীয় পার্টির শহিদুল ইসলাম ও ‘হরিণ’ প্রতীকের কেন্দ্রীয় কৃষক লীগ নেতা রেজাউল হক। ভোটারদের ধারণা, তাদের মধ্যে প্রথম তিনজনের মধ্যেই মূলত লড়াই হবে।
ইকরামুল হক টিটু ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর থেকে তৎকালীন পৌরসভার প্যানেল চেয়ারম্যান, এরপর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, তারপর পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে মসিক গঠনের পর প্রশাসক হিসাবেও দায়িত্ব পান টিটু। এরপর মসিকের প্রথম নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র নির্বাচিত হন। প্রায় ১৫ বছর জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করায় তিনি বেশ অভিজ্ঞ হিসাবে নগরবাসীর নজর কেড়েছেন।
তার নির্বাচনি প্রচারে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুলসহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের একটি বড় অংশ নাঠে নেমেছে। টিটু যুগান্তরকে বলেন, নগরবাসীর সেবা অব্যাহত রাখতে চাই। অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করতে চাই। পরিকল্পনাবিদদের পরিকল্পনা অনুযায়ী নগরীর রাস্তাঘাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন অনেকাংশে হয়েছে। যানজট নিরসন ও নাগরিক সুবিধা বাড়াতে আবারও মেয়র হিসাবে ভোটারদের রায় চান তিনি।
আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতা হিসাবে সাদেকুল হক খান টজুর ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী মোহিত উর রহমান শান্তর পক্ষে নির্বাচনি প্রধান সমন্বয়ক হিসাবে কাজ করেন তিনি। আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের বড় একটি অংশ তার পক্ষে প্রচারে নেমেছেন। আশীর্বাদ রয়েছে সংসদ-সদস্য মোহিত উর রহমান শান্তরও। নগরবাসীর ধারণা, টিটুর শক্ত প্রতিপক্ষ টজু। টজু যুগান্তরকে বলেন, নগরীর উন্নয়ন আর নগরবাসীর সেবার ১৫ দফা ইশতেহার নিয়ে ভোটারদের কাছে যাচ্ছি। আশা করি, নগরবাসী আমাকে বিজয়ী করবে।
এহতেশামুল আলমও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শান্তর পাশে ছিলেন। ফলে তাকেও টিটুর শক্ত প্রতিপক্ষ হিসাবে মনে করছেন নগরবাসী। তিনিও জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। এহতেশামুল আলম যুগান্তরকে বলেন, আমি বিজয়ী হলে নগরবাসীকে সঙ্গে নিয়ে নগরীর সব সমস্যার সমাধানে কাজ করব। সিটি করপোরেশনের ৩৩টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার তিন লাখ ৩৬ হাজার ৪৯৬ জন। ৯ মার্চ ইভিএমের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে মসিক নির্বাচন।