একদফা দাবিসহ আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলন চলবে: ১২ দলীয় জোট
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সরকারের পদত্যাগের একদফাসহ বিদেশি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা। তারা বলেন, ভারতের ভূমিকা স্বাধীন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের শামিল। ভারত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে নানা কূটকৌশলের মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখলে রাখতে সহযোগিতা করছে। তাদেরকে তাঁবেদার সরকার বানিয়ে রেখে ১৬ বছর ধরে আধিপত্যবাদী শোষণ ও বহুমুখি সুবিধা ভোগ করে যাচ্ছে। এই বিদেশি আগ্রাসন ও সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যার প্রতিবাদে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে।
রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশে জোটের শীর্ষ নেতারা এই আহ্বান জানান। ‘ভারতীয় আগ্রাসন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দির মুক্তি, সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি’ শীর্ষক এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে জোট। সমাবেশ শেষে প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে মিছিল বের করেন জোটের নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীরা এ সময় গায়ে প্রতিবেশী দেশ ভারতের আগ্রাসন বন্ধ ও পণ্য বর্জনের লেখা সংবলিত রঙিন টিশার্ট পরেন।
১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, ভারত আমাদের বাংলাদেশকে করদ রাজ্যে পরিণত করেছে। সিকিম বানানোর চক্রান্ত চলছে। সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের পাখির মতো গুলি করে হত্যা করছে। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ তাদের বিরুদ্ধে বয়কটের ডাক দিয়েছে। তারা কখনও বাংলাদেশকে সিকিম হতে দেবে না। আমরা সবাইকে নিয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে আগ্রাসন প্রতিরোধ করব। আমাদের আন্দোলন চলছে এবং অব্যাহত থাকবে।
জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছরে প্রতিবেশী দেশের আগ্রাসনে বাংলাদেশের বৃহৎ শিল্প, চিনি শিল্প, চামড়া শিল্প ধ্বংস হয়ে গেছে। গার্মেন্ট শিল্প ধ্বংস হওয়ার উপক্রম। আমি সবাইকে আহ্বান জানাবো তাদের পণ্য বর্জনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে গণজাগরণ সৃষ্টি করুন। সে সঙ্গে সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যার বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, আমরা রক্ত দিয়ে কেনা স্বাধীনতা কারও হাতে তুলে দিতে পারি না। প্রতিবেশী দেশের সরকার আমাদের প্রিয় বাংলাদেশে গণতন্ত্রবিহীন সরকার ব্যবস্থা কায়েম করেছে। এই চক্রান্তের বিরুদ্ধে আমরা সবাই রুখে দাঁড়াবো। তাদের পণ্য কিনবো না।
জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহিউদ্দিন ইকরাম বলেন, কোনো ভিন দেশের তাঁবেদারি আমরা মানি না। মানবো না। সে সঙ্গে রোজার আগে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম না কমালে রমজান মাসেও আন্দোলন চলবে, ঠেকানো যাবে না। খালেদা জিয়াসহ গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তি দিয়ে ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচন বাতিল করে নতুন নির্বাচন দিতে হবে। তা না হলে আন্দোলন আরও জোরদার করা হবে।
জাগপার রাশেদ প্রধান বলেন, আন্দোলন শেষ হয় নাই। নতুনভাবে সূচনা হয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ ভারতীয় আগ্রাসন মানবে না। এই সরকার বাংলাদেশের জনগণের কাঁধের ওপর দিয়ে ভারতকে দিচ্ছে ইলিশ মাছ ও শাড়ি। বিনিময়ে তারা বাংলাদেশের জনগণের কাঁধে তুলে দিচ্ছে লাশের কফিন। এই হলো কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলার নমুনা।
এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন লেবার পার্টির (একাংশ) চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, কল্যাণ পার্টি একাংশের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. শামসুদ্দিন পারভেজ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের জাকির হোসেন, কল্যাণ পার্টির আবু হানিফ, লেবার পার্টির শরিফুল ইসলাম, জাতীয় দলের আবুল মনসুর ভূঁইয়া, ছাত্র জমিয়তের আল-আদনান প্রমুখ।