Logo
Logo
×

শেষ পাতা

শীতে ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের ৭০ ভাগই শিশু

Icon

জাহিদ হাসান

প্রকাশ: ১৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

শীতে ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের ৭০ ভাগই শিশু

পৌষের প্রকৃতিতে হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় বাড়ছে রোটাভাইরাসসহ বিভিন্ন ব্যাক্টেরিয়া ও ভাইরাসজনিত ডায়রিয়ার সংক্রমণ। এ সময়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্তদের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশই পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশু।

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র (আইসিডিআরবি) সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, হাসপাতালে দৈনিক গড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ জন ডায়রিয়া রোগী আসছে। তবে এই সংখ্যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় স্বাভাবিক।

চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা যুগান্তরকে বলছেন, দেশে সাধারণত প্রি-মনসুন তথা বর্ষার আগে (গ্রীষ্মকাল) ও শীত মৌসুমে রোটাভাইরাসজনিত ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ে। এখন পৌষের শেষ দিকে শৈত্যপ্রবাহ ও উত্তরের হিমেল হাওয়ার কারণে প্রকৃতিতে ঠান্ডা জেঁকে বসেছে। যেহেতু শীতকালে শিশুদের ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার জন্য দায়ী সংক্রামক ভাইরাস ‘রোটা’। ফলে পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুরা এই ভাইরাসজনিত ডায়ারিয়ায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।

শিশু বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ডায়রিয়া রোগ সাধারণত রোটা, সিজেলা, ডিসেন্ট্রি, ই-টেক ও কলেরাসহ বিভিন্ন ধরনের জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হয়। তবে শীতকালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের ৭০ থেকে ৮০ ভাগই রোটাভাইরাসের সংক্রমণের শিকার হয়।

আইসিডিডিআরবি হাসপাতাল শাখার পরিচালক ডা. বাহারুল আলম যুগান্তরকে বলেন, নভেম্বরে প্রথম সপ্তাহ থেকে ডিসেম্বর মাস ধরে রোটাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছিল। এক পর্যায়ে দৈনিক ৮০০’র কাছাকাছি রোগী আসছিল। গত এক সপ্তাহ ধরে সেটা ৫৫০ থেকে ৬০০’র ঘরে নেমে এসেছে।

তিনি বলেন, রোটাভাইরাস মুখ দিয়েই শিশুদের পাকস্থলিতে প্রবেশ করে। বড়দের ক্ষেত্রে রোটা খুব একটা দুর্বল করতে পারে না। রোটাভাইরাস রোধ করতে শিশু কী খাচ্ছে সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, রোটাভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শরীরে এর প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। আক্রান্তদের উপসর্গ হিসাবে প্রথমে শুরু হয় বমি। এরপর খুব কম সময়ের মধ্যে ডায়রিয়া তীব্র আকার ধারণ করে এবং পানিশূন্যতা এত বেশি হয় যে, সময়মতো চিকিৎসা দেওয়া না গেলে প্রাণহানির আশঙ্কাও দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া সঙ্গে জ্বর ও পেট ব্যথাও থাকতে পারে।

তবে ভাইরাসজনিত রোগ হওয়ায় রোটাভাইরাস রোগের চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয় না। তাই আক্রান্তকে ওরাল স্যালাইনই খাওয়াতে হবে।

ঢাকার বাইরের পরিস্থিতি : চাঁদপুরের মতলব আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে রোটাভাইরাসজনিত ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। সেখানে দৈনিক গড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ রোগী ভর্তি হচ্ছে। তবে, অভিভাবকদের আতঙ্কিত না হয়ে রোগীদের স্থানীয় সরকারি হাসপাতাল বা মতলব হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ডিসেম্বরে রোটাভাইরাসে আক্রান্ত ৯ হাজার ৩৩ জন শিশু চিকিৎসা নিয়েছে চাঁদপুরের মতলব আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে। এর আগের বছর একই সময় চিকিৎসা নিয়েছিল সাত হাজার ৫৫১ শিশু। নতুন বছরের প্রথম ১০ দিনে ভর্তি হয়েছে দুই হাজার ৩৮০ শিশু। চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ফেনী, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী, শরীয়তপুর ও মুন্সীগঞ্জ থেকে প্রতিনিয়ত এই হাসপাতালে রোগী আসছেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম