চট্টগ্রাম নগরীর ৬ আসন
শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় প্রতিশ্রুতির বন্যা
মজুমদার নাজিম উদ্দিন, চট্টগ্রাম
প্রকাশ: ০৩ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় সরগরম চট্টগ্রাম। হেভিওয়েট থেকে শুরু করে তূলনামূলক কম পরিচিত প্রার্থী-সবাই নিজ নিজ প্রতীক নিয়ে সাধ্যমতো প্রচারণার মাঠে ব্যস্ত সময় পার করছেন। নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা ভোটারের মন জয়ে তুলে ধরছেন সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি। স্বতন্ত্র ও অন্য দলের প্রার্থীরা এলাকার সমস্যার কথা তুলে ধরে নির্বাচিত হলে সমাধানের আশ্বাস দিচ্ছেন।
প্রচারণার কৌশলে ভিন্নতা থাকলেও সব প্রার্থী একটি জায়গায় এসে একাট্টা। তা হলো-কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো। তাই কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে ভোট দিতে উৎসাহিত করছেন ভোটারদের।
চট্টগ্রামের ১৬টি আসনের মধ্যে নগরীর ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান ছয়টির। বিএনপি নির্বাচনে না থাকায় ভোটের ইমেজে এসব আসনে কিছুটা ভাটা পড়েছে। তবে অনেক আসনে নৌকার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সেটি পুষিয়ে দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীও আছেন মাঠে।
চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুন্ড ও নগরীর একাংশ) আওয়ামী লীগের প্রার্থী এসএম আল মামুন। এখানে দলীয় স্বতন্ত্র না থাকায় তিনি অনেকটাই নির্ভার। নৌকার এ প্রার্থী নির্বাচিত হলে বিভিন্ন ওয়ার্ডে ফায়ার স্টেশন স্থাপনের চেষ্টা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এছাড়া সীতাকুন্ড হতে নগরীতে কমিউটার ট্রেন ও বাস সার্ভিস চালু, দুটি ইউনিয়নে শিল্পজোন, শিপব্রেকিং শিল্পকে গ্রিনজোন, ছলিমপুরে প্রকৃত ভূমিহীনদের আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী ও নগরীর একাংশ) আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়ায় এখানে নৌকা প্রতীক নেই। জাতীয় পার্টির প্রার্থী (লাঙল) বর্তমান এমপি আনিসুল ইসলাম মাহমুদ প্রচারণায় সরব। তিনি বলেন, আমি হাটহাজারীকে একটি উন্নত উপজেলায় রূপান্তরের চেষ্টা করেছি সবসময়। ভবিষ্যতেও করব। লাঙলের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মুহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরীও (কেটলি) জোর প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলছেন, আসনটিতে দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের সংসদ-সদস্য ছিল না। তাই এখানে প্রত্যাশিত উন্নয়ন হয়নি। তিনি নির্বাচিত হলে অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে হাটহাজারীতে বেশি উন্নয়ন হবে বলে আশ্বাস দিচ্ছেন ভোটারদের।
চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) আসনটিও সমঝোতার ভিত্তিতে জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এখানে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সোলায়মান আলম শেঠ (লাঙল)। তার সঙ্গে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন দুই স্বতন্ত্র প্রার্থী নগর আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক আবদুচ ছালাম (কেটলি) ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিজয় কুমার চৌধুরী (ফুলকপি)।
চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিবুল হাসান চৌধুরীর (নৌকা) বিপক্ষে নেই নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী। তবে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সানজিদ রশিদ চৌধুরী লাঙ্গল নিয়ে এ আসনে লড়ছেন। তার তেমন প্রচার-প্রচারণা নেই। তাই নওফেলকে তেমন কোনো চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে না।
চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-হালিশহর) আসনে নৌকার প্রার্থী বর্তমান এমপি মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু। এ আসনে তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী ভাবা হচ্ছে স্বতন্ত্র প্রার্থী চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ মনজুর আলমকে (ফুলকপি)। নৌকার প্রার্থী বলছেন, তিনি এলাকার সমস্যাগুলো সম্পর্কে অবগত আছেন। নির্বাচিত হলে সেসব সমস্যার সমাধান করবেন। মনজুর আলম এলাকায় স্কুল, কলেজ, দাতব্য চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা ও রাস্তাঘাট সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী ফরিদ মাহমুদও (কেটলি) প্রচারণায় আছেন।
চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনে নৌকার প্রার্থী এম আবদুল লতিফের সঙ্গে আওয়ামী লীগ দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক সুমনের (কেটলি) হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে।