নিষেধাজ্ঞা এলে বাংলাদেশের পাশে থাকবে রাশিয়া: আলেকজান্ডার ভি মান্তিৎস্কি
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
রাশিয়া পশ্চিমা বা অন্য কোনো দেশের ‘অবৈধ নিষেধাজ্ঞা’কে স্বীকৃতি দেয় না। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হলে রাশিয়া পাশে থাকবে।
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে স্বাধীনতা সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত ‘টকস উইথ দ্য অ্যাম্বাসেডর’ অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মান্তিৎস্কি এসব কথা বলেন।
পশ্চিমা বিশ্ব বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে আলেকজান্ডার মিন্তিৎস্কি বলেন, অবশ্যই করছে। মুখপাত্র (রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের) মারিয়া জাখারোভা বিবৃতিতে সম্প্রতি হস্তক্ষেপের বিষয়ে বলেছেন।
তিনি বলেন, পশ্চিমা বিশ্বের এককভাবে নিষেধাজ্ঞাকে স্বীকৃতি দেয় না রাশিয়া। আমরা শুধু জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের নিষেধাজ্ঞাকে মেনে চলি। এখানে (বাংলাদেশে) যে কোনো নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে রাশিয়া অবস্থান নেবে। দেখা যাক কী হয়! তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নতুন করে কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে না।
রাষ্ট্রদূত বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে জ্বালানি ও খাবার-দাবারের জন্য রাশিয়ার জাহাজ এসেছিল। আমরা যে কোনো নিষেধাজ্ঞার বিরোধী। পশ্চিমারা রাশিয়াকে প্রায় ১৭ হাজার নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তারপরও রাশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়ন থেমে নেই।
তিনি বলেন, আমরা দেখছি যে বাংলাদেশের ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুকে যে কোনো ধরনের জোটের বিরোধী অবস্থান। এতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে।
বাংলাদেশের নীতি হচ্ছে ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে বৈরিতা নয়’ এবং এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের এটি অব্যাহত রাখা উচিত।
রাষ্ট্রদূত বলেন, রাশিয়ার কোম্পানিগুলো বাংলাদেশকে ১০ লাখ টন শস্য এবং ৫ লাখ টন পটাশিয়াম ক্লোরাইড সরবরাহ করতে তৈরি আছে। রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত জানান, রূপপুরের কারণে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ২ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে। ৮০ জনের বেশি বাংলাদেশি নিউক্লিয়ার স্টাডিজ সম্পন্ন করেছেন। এছাড়া রোসাটম কোম্পানি বাংলাদেশে একটি রিসার্চ রিঅ্যাক্টর স্থাপন করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, গত জুনে জাহাজ তৈরি ও নির্মাণশিল্পে কাজ করার জন্য প্রথম ব্যাচের বাংলাদেশিরা রাশিয়ায় গেছে। আমরা আরও বাংলাদেশি শ্রমিক নেওয়ার জন্য তৈরি।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, স্যাটেলাইট স্থাপনে বাংলাদেশ সরকার যে দেশকে ভালো অংশীদার মনে করবে, তাকেই বেছে নেবে। এ ক্ষেত্রে আমাদের কিছু বলার নেই।
অনুষ্ঠানে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে রাশিয়া যে অবদান রেখেছিল, সেই অবদান কোনোভাবেই পরিশোধ করা যাবে না। বর্তমান ভূরাজনীতিতে আমাদের পক্ষে রাশিয়াকে প্রয়োজন।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলা ট্রিবিউনের কূটনৈতিক রিপোর্টার শেখ শাহরিয়ার জামান। এ সময় স্বাধীনতা সাংবাদিক ফোরামের অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।