বরিশালে ভিডিও ভাইরাল
ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ শিক্ষার্থীদের কোপাল ছাত্রলীগ
আকতার ফারুক শাহিন, বরিশাল
প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ শিক্ষার্থীদের কোপাল ছাত্রলীগ
বরিশালে সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ছাত্রলীগ নামধারীদের হামলায় কলেজ হোস্টেলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের আহত হওয়ার একটি সিসি ক্যামেরা ফুটেজ ভাইরাল হয়েছে। তাতে দেখা যায়, ছাত্রলীগ নামধারীরা ধারালো দা আর লাঠি দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের। সোমবার রাতে বরিশাল সদর উপজেলার সাহেবের হাট এলাকায় ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রাবাসে এই হামলার ঘটনায় ১৫ শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের মধ্যে গুরুতর ৩ জন বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহতদের অভিযোগ, ঘটনার দিন বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল উদ্বোধন করতে ক্যাম্পাসে যান বরিশাল সদর আসনের এমপি পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামিম। সেই অনুষ্ঠানে সবাইকে উপস্থিত থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছিল ছাত্রলীগ নামধারী সাকিব ভূঁইয়ার নেতৃত্বাধীন আশরাফুল, আনাস, মাহীন, তাসিন, হিমো, রাকিব, তানভীর এবং সিফাতসহ প্রতিমন্ত্রীর অনুসারী দাবি করা ১৫-২০ জন। অনুষ্ঠানে না যাওয়ায় এরাই রাতে কুপিয়ে ও পিটিয়ে শিক্ষার্থীদের আহত করে। তবে হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া সাকিব এই অভিযোগ স্বীকার করেননি।
সাকিব জানান, ক্যাম্পাসে স্থাপিত ম্যুরাল ভাঙচুরের চেষ্টা চালায় জামায়াত-বিএনপির সমর্থকরা। বাধা দিতে গেলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় তাদের। এতে কয়েকজন সামান্য ব্যথা পেয়েছে।
তবে ভাইরাল হওয়া সিসি ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনার দিন রাত ৮টায় ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে আবাসিক হলে প্রবেশ করছে হামলাকারীরা। হলের ভেতরে ঢুকে আবাসিক শিক্ষার্থীদের বেধরক মারধর ও কুপিয়ে জখম করছে। প্রায় ১০ মিনিটব্যাপী তাণ্ডব শেষে নির্বিঘ্নে চলে যায় তারা। হামলা, কুপিয়ে জখম এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ভাইরাল হওয়ার পর দায়ীদের বিরুদ্ধে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এআর মুকুল (পিপিএম সেবা) জানান, কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে একটি চিঠি দিয়ে দোষীদের শাস্তি এবং ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদারের অনুরোধ করেছে। তবে তারা কোনো মামলা কিংবা নির্দিষ্ট করে কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ দেয়নি। বিবদমান দুপক্ষের কাছ থেকেও কোনো অভিযোগ পাইনি। যে কারণে এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।
ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ খলিল উদ্দিন বলেন, আইনগত বিষয়গুলো তো তারা (থানা পুলিশ) ভালো জানে। আমরা থানায় অভিযোগ দিয়েছি। সেখানে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। এখন তারা কিভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেবে সেটা তাদের ব্যাপার। ভাইরাল হওয়া সিসি ফুটেজের ব্যাপারে কলেজ কর্তৃপক্ষ কি ব্যবস্থা নিচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেব আমরা। হামলার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামিমের ফোনে বেশ কয়েকবার কল করা হলেও তিনি তা ধরেননি।