Logo
Logo
×

শেষ পাতা

কিউইদের জয়রথ থামিয়ে ভারতের পাঁচে পাঁচ

Icon

ক্রীড়া ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কিউইদের জয়রথ থামিয়ে ভারতের পাঁচে পাঁচ

জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন তখন পাঁচ রান, বিরাট কোহলি ব্যাট করছিলেন ৯৫ রানে। আগের ম্যাচের মতো দলের জয় ও নিজের সেঞ্চুরির সমীকরণ একসঙ্গে মেলানোর চেষ্টায় ম্যাট হেনরিকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে গ্লেন ফিলিপসের হাতে ক্যাচ তুলে দিলেন কোহলি। মুহূর্তের জন্য স্তব্ধ পুরো গ্যালারি। খুব কাছে গিয়েও ওয়ানডেতে শচীন টেন্ডুলকারের ৪৯ সেঞ্চুরির বিশ্বরেকর্ড এ যাত্রায় ছোঁয়া হলো না কোহলির। তবে কোহলি পাঁচ রানের আক্ষেপে পুড়লেও এবারের বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের জয়রথ থামিয়ে ভারত ঠিকই তুলে নিয়েছে টানা পঞ্চম জয়। রোববার ধর্মশালায় রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে কিউইদের চার উইকেটে হারিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে গেছে স্বাগতিকরা। পাঁচ ম্যাচে এটি নিউজিল্যান্ডের প্রথম হার। ২০০৩ সালের পর এই প্রথম আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টে ভারতের কাছে হারল কিউইরা।

দুদলই নিজেদের প্রথম চার ম্যাচ জেতায় ভারত-নিউজিল্যান্ড মহারণকে বলা হচ্ছিল এবারের বিশ্বকাপের লিগপর্বের অন্যতম সেরা ম্যাচ। ক্রিকেটপ্রেমীদের হতাশ করেনি আগুনে ফর্মে থাকা দুই দল। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে মন্থর শুরুর পর ড্যারিল মিচেলের (১৩০) সেঞ্চুরি ও রাচিন রবীন্দ্রর (৭৫) ফিফটিতে তিনশ ছাড়ানো সংগ্রহের আশা জাগিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। কিন্তু এবারের আসরে প্রথম খেলতে নামা মোহাম্মদ শামির আগুনে বোলিংয়ে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে নিউজিল্যান্ডকে ২৭৩ রানে গুটিয়ে দেয় ভারত। ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতের প্রথম বোলার হিসাবে দুবার পাঁচ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়েন ম্যাচসেরা শামি। এরপর রান তাড়ায় অধিনায়ক রোহিত শর্মা (৪০ বলে ৪৬) ও শুবমান গিলের (৩১ বলে ২৬) ৭১ রানের উদ্বোধনী জুটিতে ভারতের শুরুটা দুর্দান্ত হলেও পাঁচ রানের ব্যবধানে দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে ঘুরে দাঁড়ায় নিউজিল্যান্ড। 
ওয়ানডেতে দ্রুততম দুই হাজার রানের রেকর্ড গড়লেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি গিল। শ্রেয়াস আয়ার (৩৩) ও লোকেশ রাহুলও (২৭) থিতু হয়ে ফেরেন। সূর্যকুমার যাদব কাটা পড়েন রানআউটে। তবে একপ্রান্ত আগলে রাখা কোহলির চওড়া ব্যাট কক্ষচ্যুত হতে দেয়নি ভারতকে। ষষ্ঠ উইকেটে রবীন্দ্র জাদেজাকে নিয়ে ৭৮ রানের জুটিতে কিউইদের ম্যাচ থেকে ছিটকে দেন কোহলি। ১০৪ বলে ৯৫ রান তার ট্র্যাজিক বিদায়ের পর চার মেরে ১২ বল বাকি থাকতেই দলকে জয়ের ঠিকানায় পৌঁছে দেন জাদেজা (৩৯*)। ৬৩ রানে দুই উইকেট নেন লকি ফার্গুসন। কাল ভারতের ইনিংসের শুরুতে তীব্র কুয়াশার কারণে ১৪ মিনিট খেলা বন্ধ ছিল। 

এরআগে প্রথম ১০ ওভারে ভারতীয় বোলাররা বেঁধে রাখতে সক্ষম হন কিউই ব্যাটারদের। তবে উইকেটে কার্যত স্পিনারদের জন্য কিছুই ছিল না। বল ঈষৎ পুরোনো হওয়ার পর ব্যাটিং করাটা সহজ হয়ে যায়। তবে নিউজিল্যান্ড যেভাবে শুরুটা করেছিল, শেষটা তাদের সেরকম হয়নি। এক সময় কিউইদের সংগ্রহ ছিল চার উইকেটে ২৪৩ রান। সেখান থেকে তারা ২৭৩ রানে অলআউট। ইনিংস আরও স্ফীত করতে না পারায় লাথামরা নিশ্চয় হতাশ হবেন। তৃতীয় উইকেটে রাচিন রবীন্দ্র ও ড্যারিল মিচেলের ১৫৯ রানের জুটির পর আর কেউ তেমন জমাটি ব্যাটিং করতে পারেননি।

৩৪তম ওভারে রবীন্দ্র-মিচেলের জুটি ভাঙার পর নিউজিল্যান্ডের ইনিংস এগোয় শম্বুকগতিতে। এরপর ৫২ বল ও ৪৮ রানের ব্যবধানে তারা দুই উইকেট হারায়। ৪০ বলে কোনো বাউন্ডারি হয়নি। এরআগে চারে ব্যাট করতে নামা ড্যারিল মিচেল স্পর্শ করেন তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার। বাংলাদেশের বিপক্ষে হার না-মানা ৮৯ রানের ইনিংস খেলার পর হোটেলে ফিরে গিয়ে রাগবি বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ড-আয়ারল্যান্ড কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ দেখেন। কাল মিচেল ওডিআইতে নিজের পঞ্চম সেঞ্চুরি তুলে নেন। ১২৭ বলে ১৩০ রান। ৬৯ বলে ৭৫ রানে বুমরার সৌজন্যে ‘জীবন’ পান মিচেল। বোলার ছিলেন কুলদীপ যাদব।

১৯ রানে দুই উইকেট হারানো নিউজিল্যান্ড ১৭৮/৩-এ পৌঁছে মিচেল ও রবীন্দ্রর ব্যাটে ভর করে। ২৩ বছরের ভারতীয় বংশোদ্ভূত অলরাউন্ডার রাচিন রবীন্দ্র ৮৭ বলে ৭৫ রান করে শামির শিকারে পরিণত হন। অভিষেক বিশ্বকাপে পাঁচ ইনিংসে রবীন্দ্রর রান হলো ২৫৭। যা এ বছর ওডিআইতে কোনো কিউই ব্যাটারের সর্বোচ্চ। মিচেলের মতো রবীন্দ্রও ‘জীবন’ পেয়েছেন। তার ক্যাচ মিস করেন জাদেজা। ১৯ রানে দুই উইকেট হারানো নিউজিল্যান্ডের ইনিংসে অক্সিজেন সরবরাহ করা প্রধান দুই ব্যাটার এ দুজন।

নিউজিল্যান্ডের যেমন মিচেল ও রবীন্দ্র, ভারতের তেমনি মোহাম্মদ শামি। এবারের বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ম্যাচে ৫৪ রানে পাঁচ উইকেট নিয়ে কিউইদের ডানা কেটে দিয়েছেন এই পেসার। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এ নিয়ে মোট ৩৬ উইকেট হলো তার। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে তালিকায় জহির খান (৪৪) ও জাভাগাল শ্রীনাথের (৪৪) পর শামির স্থান তৃতীয়। শামিই প্রথম ভারতীয় বোলার, যিনি বিশ্বকাপে এ নিয়ে দুবার ম্যাচে পাঁচ উইকেট পেলেন। শেষ ১০ ওভারে শামির বোলিংয়েই নিউজিল্যান্ড ৫৪ রানে ছয় উইকেট হারায়। 
(স্কোর কার্ড খেলার পাতায়)
 

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম