ইবিতে আবার র্যাগিংয়ের অভিযোগ
ইবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ছাত্রী নির্যাতনের ঘটনার সুরাহা হতে না হতেই সিনিয়র কয়েকজন ছাত্রের বিরুদ্ধে নবীন ছাত্রকে র্যাগিং করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে লিখিত অভিযোগ করেছেন। শনিবার পাঁচ সিনিয়র শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করে তিনি অভিযোগপত্রের কপি রেজিস্ট্রার, ছাত্র উপদেষ্টা, প্রক্টর ও বিভাগীয় সভাপতি বরাবর জমা দিয়েছেন। নবীনবরণের দিনে এমন ঘটনার সম্মুখীন হয়ে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এ ঘটনায় রোববার পাঁচ সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর ছয় পাতার অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে-২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে নাজেহাল করেছেন। দুই দফায় নানাভাবে তাকে মানসিক হেনস্তা ও গালিগালাজ করা হয়েছে। তাদের কথা না শুনলে ‘ব্যাচ আউট’ করে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়। এছাড়া বিভাগের সব সুবিধা থেকে তাকে বঞ্চিত করার ভয় দেখানো হয়। অভিযুক্তরা হলেন-একই বিভাগের হিশাম নাজির শুভ, মিজানুর রহমান ইমন, পুলক, আকিব ও সাকিব। এর আগে ওই শিক্ষার্থীর বাবা ই-মেইলে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রারকে অভিযোগ জানান।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়-২ সেপ্টেম্বর ওরিয়েন্টেশন ক্লাসের পর তাকে কয়েকজন সিনিয়র ছাত্র বিভিন্নভাবে হয়রানি করেন। ওরিয়েন্টেশন ক্লাসের পর জিমনেশিয়ামের পেছনে নিয়ে এবং সন্ধ্যায় সাদ্দাম হোসেন হলের পাশে নিয়ে দুই দফায় তাকে ম্যানার শেখানোর নামে র্যাগিং করা হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ওইদিন দুপুরে তাকে যখন র্যাগ দেওয়া হচ্ছিল তখন ক্যাম্পাসে ‘র্যাগিং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে’ বলে মাইকিং চলছিল। পরদিন বিকালে বিভাগের খেলায় অংশ নিতে দেরি করায় তার সঙ্গে বাজে ব্যবহার করেন তারা। সিনিয়রদের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট না পাঠানোর কারণেও তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়। এ সময় বলা হয়-তারা যখন ডাকবে তখনই আসতে হবে। কথা না শুনলে ‘ব্যাচ আউট’ ও বিভাগের সব ধরনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত করাসহ নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হয়।
অভিযোগ তদন্তে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর সাইফুল ইসলামকে আহ্বায়ক এবং ডেপুটি রেজিস্ট্রার আলীবুদ্দীন খানকে সদস্য সচিব করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন-ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. শেলীনা নাসরীন, আইন প্রশাসক প্রফেসর ড. আনিচুর রহমান ও সহকারী প্রক্টর মিঠুন বৈরাগী। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি এখনো চিঠি পাইনি। সোমবার চিঠি পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। প্রক্টর ও অ্যান্টি র্যাগিং ভিজিলেন্স কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, বিভাগের সভাপতিকে চিঠি পাঠিয়েছি। একজন সহকারী প্রক্টরকে তার সার্বিক নিরাপত্তার খোঁজখবর রাখতে বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার (দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য) প্রফেসর ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।