Logo
Logo
×

শেষ পাতা

সংসদে রিপোর্ট উপস্থাপন

সাইবার নিরাপত্তা আইনে মিথ্যা মামলা অপরাধ

Icon

সংসদ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সাইবার নিরাপত্তা আইনে মিথ্যা মামলা অপরাধ

সাইবার নিরাপত্তা আইনে মিথ্যা মামলা করলে তা অপরাধ হিসাবে গণ্য করে সাজার বিধান যুক্ত করা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে মিথ্যা মামলার শিকার হওয়া ব্যক্তি লিখিত অভিযোগ দিলে আদালত তা আমলে নেবেন। এমন বিধান রেখে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি আইনটির রিপোর্ট সংসদে উপস্থাপন করেছে। এ ছাড়াও বিলের ৩২ নম্বর ধারা বাদ দেওয়াসহ কয়েকটি ধারায় শব্দগত পরিবর্তন আনার সুপারিশ করা হয়েছে।

রোববার জাতীয় সংসদে সাইবার নিরাপত্তা বিল-২০২৩ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন কমিটির সদস্য রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক। এর আগে গত বৃহস্পতিবার কয়েকটি সাংবাদিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে এসব সুপারিশ চূড়ান্ত করে কমিটি। বিলে নতুন একটি ধারা যুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এই ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো ব্যক্তির ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্যে এই আইনের অন্য কোনো ধারার অধীন মামলা বা অভিযোগ দায়ের করার জন্য ন্যায্য বা আইনানুগ কারণ না জেনেও মামলা বা অভিযোগ দায়ের করেন বা করান, তাহলে তা হবে একটি অপরাধ। এই অপরাধে মামলা বা অভিযোগ দায়েরকারী ব্যক্তি এবং যিনি অভিযোগ দায়ের করিয়েছেন ওই ব্যক্তি মূল অপরাধটির জন্য যে দণ্ড নির্ধারিত রয়েছে সে দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। যদি এ আইনের একাধিক ধারায় কোনো মামলা বা অভিযোগ করেন, তাহলে ওই ধারায় বর্ণিত অপরাধগুলোর মধ্যে মূল অপরাধের জন্য যে দণ্ডের পরিমাণ বেশি হয় সেটাই দণ্ডের পরিমাণ হিসাবে নির্ধারণ করা যাবে। বিলে আরও বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তির লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল এই অপরাধের অভিযোগ গ্রহণ ও মামলার বিচার করতে পারবেন।

উল্লেখ্য, বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন রহিত করে সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হচ্ছে। ৫ সেপ্টেম্বর সাইবার নিরাপত্তা বিল সংসদে তোলা হয়। এরপর বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

বিলের ২১ ধারায় শব্দগত পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রপাগান্ডা ও প্রচারণা সংক্রান্ত অপরাধের কথা বলা আছে। এখানে ‘পতাকার বিরুদ্ধে কোনো প্রকার প্রপাগান্ডা’-এর স্থলে ‘পতাকা সম্পর্কে বিদ্বেষ, বিভ্রান্তি ও কুৎসামূলক’ শব্দ প্রতিস্থাপন করা হবে। বিলের ৩২ ধারা বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই ধারায় অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট যুক্ত করা হয়েছিল। ডিজিটাল মাধ্যমে কেউ অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টভুক্ত অপরাধ করলে তার সাজার বিধান করতে এটি যুক্ত করা হয়েছিল। বিলের ৪২ ধারায় বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি ও গ্রেফতারের ক্ষমতা দেওয়া আছে পুলিশকে। এখানে সংশোধনী এনে বলা হচ্ছে, এই ধারায় সাব-ইন্সপেক্টর পর্যায়ের কর্মকর্তার জায়গায় পুলিশ পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) পর্যায়ের কর্মকর্তা বিনা পরোয়ানায় তল্লাশি ও গ্রেফতার করতে পারবেন।

বিলের ৮ ধারায়ও সংশোধনী আনা হচ্ছে। ডিজিটাল মাধ্যম থেকে তথ্য-উপাত্ত অপসারণ করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে এই ধারায়। এখানে আগে বলা ছিল যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘প্রতীয়মান’ হয় ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে প্রকাশিত বা প্রচারিত কোনো তথ্য-উপাত্ত দেশের বা এর কোনো অংশের সংহতি, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, ধর্মীয় মূল্যবোধ বা জনশৃঙ্খলা ক্ষুণ্ন করে বা জাতিগত বিদ্বেষ ও ঘৃণার সঞ্চার করে, তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ওই তথ্য-উপাত্ত অপসারণ করার জন্য মহাপরিচালকের মাধ্যমে বিটিআরসিকে অনুরোধ করতে পারবে। এখানে ‘প্রতীয়মান’ শব্দের জায়গায় ‘তথ্য-উপাত্ত বিশেষণ সাপেক্ষে, বিশ্বাস করার কারণ থাকে যে’ প্রতিস্থাপন করা হবে।

মাইক বিভ্রাট : মাইক বিভ্রাটের কারণে অধিবেশন সাময়িকভাবে স্থগিত করতে হয়। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ১০ মিনিটের জন্য স্থগিতের ঘোষণা দিলেও আধা ঘণ্টার মধ্যেও অধিবেশন শুরু করা যায়নি। পূর্বনির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী রোববার বিকাল পৌনে ৫টায় অধিবেশন শুরু হয়। এর কিছুক্ষণ পরই এ গোলযোগ দেখা দেয়। তখন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশন স্থগিত করার ঘোষণা দেন।

এর আগে অধিবেশন শুরু হলে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন বিল-২০২৩ এর রিপোর্ট উপস্থাপনের সময় অধিবেশনের মাইক বন্ধ হয়ে যায়। পরে বিকল্প ব্যবস্থায় হ্যান্ড মাইক দিয়ে রিপোর্ট উপস্থাপন করেন তিনি। এরপর হ্যান্ডমাইক দিয়েই আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি শহিদুজ্জামান সরকার বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল (সংশোধন) বিল-২০২৩ ও জাতীয় সংসদ (সংরক্ষিত মহিলা আসন) নির্বাচন (সংশোধন) বিলের রিপোর্ট উপস্থাপন করেন।

পরে রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিক সাইবার নিরাপত্তা বিলের রিপোর্ট উপস্থাপন শুরু করলে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙা স্পিকারের মনোযোগ আকর্ষণ করে বলেন, কিছু শোনা যাচ্ছে না। এ সময় বিরোধী দলের বাকি সদস্যরাও একই কথা বলেন। রেজওয়ান আহাম্মদ তৌফিকের রিপোর্ট উপস্থাপন শেষে স্পিকার সংসদের উদ্দেশে বলেন, যেহেতু কিছু শোনা যাচ্ছে না সেহেতু অধিবেশন ১০ মিনিট স্থগিত ঘোষণা করছি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম