Logo
Logo
×

শেষ পাতা

ড. ইউনূসকে জেলে পাঠানোর চক্রান্ত হচ্ছে: মির্জা ফখরুল

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ড. ইউনূসকে জেলে পাঠানোর চক্রান্ত হচ্ছে: মির্জা ফখরুল

সরকার নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জেলে পাঠানোর চক্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, সরকার ব্যক্তিগতভাবে প্রতিহিংসার কারণে, শত্রুতার কারণে ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানোর চেষ্টা করছে। এ সময় নিজের একটি মামলার বিচারের কার্যক্রম তড়িঘড়ি করে শেষ করার কথা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, কয়েক দিন আগে আমার নামে একটি মিথ্যা মামলার ট্রায়াল শুরু হয়েছে। আমার ধারণা, এক-দেড় মাসের মধ্যে আমাকেও ভেতরে (কারাগারে) চলে যেতে হবে। তাদের উদ্দেশ্যটা একদম পরিষ্কার-কাউকে বাইরে রাখবে না।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। নব্বইয়ে ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের উদ্যোগে ‘নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান ও কিছু কথা’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন উপলক্ষ্যে এ সভা হয়। নব্বইয়ের ডাকসুর ভিপি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমানের লেখা এই গ্রন্থটির প্রকাশক শাহজী প্রকাশনী সংস্থা।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার এমন এক সরকার যারা ন্যূনতম সম্মানবোধ করতে জানে না গুণী মানুষকে। ড. ইউনূস একজন নোবেল বিজয়ী। বাংলাদেশে একমাত্র ব্যক্তি যিনি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। এখন উনার বিরুদ্ধে এমনভাবে লেগেছে, তাকে জেলে ঢুকিয়েই ছাড়বে-একটা অবস্থা তৈরি করেছে। বুধবার একজন মন্ত্রী বলছেন, আমেরিকার প্রেসিডেন্টকেও তো জেলে যেতে হয়। কিন্তু আমেরিকার প্রেসিডেন্টকে যে কারণে জেলে যেতে হয় সে কারণ তো ড. ইউনূসের জন্য নয়।

তিনি বলেন, আমরা (বিএনপি) নাকি ড. ইউনূসের ওপর ভর করেছি। ড. ইউনূসের ওপর ভর করার আমাদের কোনো কারণ নেই। আমরা পুরোপুরিভাবে এদেশের জনগণের ওপর ভর করেছি। বিশ্বাস করি, এদেশের জনগণ হচ্ছে সব শক্তির উৎস। এদেশের জনগণই এদেশে জনগণের সরকার তৈরি করবে এবং ভাগ্য পরিবর্তন করবে। সেই কারণে মানুষের কাছে গিয়েছি। আপনারা কেন নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে চান না। কারণ আপনারা জানেন যে ওইটা করলে ১০টা আসনও পাবেন না।

ক্ষমতাসীনরা বিরোধী নেতাদের দ্রুত জেলে দিতে চায় এমন অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তাদের (সরকার) উদ্দেশ্যটা পরিষ্কার। যারা এই সরকারের বিরোধিতা করছে, যারা সরকারের পক্ষে নয়, যারা এই বলছে, তুমি অনেক খারাপ কাজ করছ সরে যাও-তাদের সবাইকে কারাগারে ঢুকিয়ে দিতে চায়। এমনকি তারা এ কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিচ্ছে।

তিনি বলেন, আইন মন্ত্রণালয় একটা সেল তৈরি করে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, অতি দ্রুত সেই সব মামলাগুলোকে চিহ্নিত করবে যেগুলো তাদের ভাষায় চাঞ্চল্যকর মামলা এবং রাষ্ট্রবিরোধী মামলা। সেসব মামলাগুলোয় অতি দ্রুত যেন রায় দেওয়া যায় তার ব্যবস্থা করবে। কিছুদিন আগে আইন মন্ত্রণালয় একই ধরনের আইন করেছে। এভাবে তারা গোটা দেশের আশা-আকাঙ্ক্ষা-স্বপ্নকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য পুরোপুরি একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, প্রতিদিনই হাজার হাজার বিএনপির নেতাকর্মী কোর্টের বারান্দায় ঘোরাঘুরি করছেন, বিভিন্ন আদালতে ঢুকছেন। এই দৃশ্য কোনো গণতান্ত্রিক দেশের দৃশ্য হতে পারে না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দারের সভাপতিত্বে এবং ডাকসুর সাবেক এজিএস নাজিম উদ্দিন আলমের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন-আমানউল্লাহ আমান, সাবেক ছাত্রনেতা খায়রুল কবির খোকন, জহির উদ্দিন স্বপন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, ফজলুল হক মিলন, খন্দকার লুৎফর রহমান, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আসাদুর রহমান খান, কামরুজ্জামান রতন প্রমুখ।

রাজনীতির ময়দান শূন্য করার চক্রান্ত হচ্ছে : বৃহস্পতিবার বিকালে নয়াপল্টন কার্যালয়ের নিচতলায় এক দোয়া মাহফিলে বিএনপি মহাসচিব ফখরুল বলেন, নির্বাচনের আগে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে রাজনীতির ময়দান থেকে সরিয়ে দিয়ে মাঠ শূন্য করার চক্রান্ত করছে সরকার।

এ উদ্দেশ্যে ইতোমধ্যে খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, ডা. জোবাইদা রহমানসহ বিভিন্ন শীর্ষনেতাদের সাজা দেওয়া হয়েছে। সিরাজগঞ্জ, পাবনাসহ বিভিন্ন জেলা নেতাদের বিরুদ্ধেও পুরোনো মামলা সচল করে দ্রুত নিষ্পত্তি করে নেতাদের সাজা দেওয়া হচ্ছে। কয়েকজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশও দেওয়া হয়েছে। দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুর সুস্থতা কামনাসহ কারামুক্তির জন্য দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন-বিএনপির খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, মীর সারাফত আলী সপু, ঢাকা মহানগরের ইউনুস মৃধা, মোশাররফ হোসেন খোকন, আব্দুস সাত্তার, আ ন ম সাইফুল ইসলাম, লিটন মাহমুদ, সেকেন্দার কাদির, হাজী মনির হোসেন, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ছাত্রদলের রাশেদ ইকবাল খান প্রমুখ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম