শরীয়তপুরে এইচএসসি পরীক্ষা
ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়ার সোয়া ঘণ্টা পর দৃষ্টিগোচর
শরীয়তপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
শরীয়তপুরের একটি কেন্দ্রে ভুল প্রশ্নপত্রে ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়ার পর বিষয়টি ধরা পরে। এরপর সঠিক প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া হয়। মঙ্গলবার সদর উপজেলার ডোমসার জগৎচন্দ্র ইনস্টিটিউশন অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে। অর্ধেকের কম সময়ে সব প্রশ্নের উত্তর লিখতে না পারায় ফল খারাপ হওয়ার আশঙ্কায় ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী। তারা সবাই নড়িয়া উপজেলার ইসমাইল হোসেন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় দুই শিক্ষককে পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, মঙ্গলবার রসায়ন, ইতিহাস (প্রথম পত্র), ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি (প্রথম পত্র), ব্যবস্থাপনা ও বিপণন (প্রথম পত্র), গৃহ ব্যবস্থাপনা ও পারিবারিক জীবন (প্রথম পত্র) বিষয়ে পরীক্ষা ছিল। ডোমসার জগৎচন্দ্র ইনস্টিটিউশন অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ৪২ জন শিক্ষার্থীর ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ে পরীক্ষা ছিল। ইউএনওর খুদে বার্তা অনুযায়ী ২ নম্বর সেটের প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভুল করে ৪ নম্বর সেটের প্রশ্নপত্র শিক্ষার্থীদের সরবরাহ করা হয়। এ ভুলটি পরীক্ষা শুরু হওয়ার ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট পর শিক্ষকদের নজরে আসে। তখন পরীক্ষার্থীদের পুনরায় ২ নম্বর সেটের প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা হয়। ওই প্রশ্ন অনুযায়ী পরীক্ষা দিতে বলা হয়। ভুল প্রশ্নপত্র সরবরাহ করায় পরীক্ষার্থীদের ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট সময় অপচয় হয়। কিন্তু পরে আর সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়নি। এর ফলে অনেক শিক্ষার্থী ৭০ নম্বরের পুরো উত্তর লিখতে পারেনি। এমনকি ভুলের কথা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকরা এড়িয়ে যান। বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও শিক্ষা বিভাগকেও জানানো হয়নি।
পরীক্ষা শেষে শিক্ষার্থীরা ঘটনাটি তাদের প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের জানান। তাই ইসমাইল হোসেন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষকরা মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে যান। আর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। বিষয়টি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তাদেরও জানানো হয়েছে।
ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থী জান্নাত আক্তার ও নিশি আক্তার জানান, সঠিক সেটে তাদের ১ ঘণ্টা ১০ মিনিটে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। সংক্ষিপ্ত এ সময়ে তারা সব প্রশ্নের উত্তর লিখতে পারেনি। এখন পরীক্ষার ফল খারাপ হলে এর দায় কে নেবে?
ইসমাইল হোসেন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের প্রভাষক জিএম সামিউল ইসলাম বলেন, ‘৪২ জন শিক্ষার্থীর ভালো রেজাল্ট পাওয়ার সম্ভাবনা তো নেই, উলটো তাদের ফল খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
এ প্রসঙ্গে ডোমসার জগৎচন্দ্র ইনস্টিটিউশন অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের হল সুপার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘ভুল করে এমন ঘটনা ঘটেছে। বুঝতে পেরে আমরা সঠিক প্রশ্নের সেট সরবরাহ করি। পরীক্ষার্থীদের সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।’
এ বিষয়ে ইউএনও জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র সাংবাদিকদের বলেন, কেন্দ্র সচিব ও হল সুপারের ভুলে এ ঘটনা ঘটে। এ ভুলের কথা তারা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরও জানাননি। এ ঘটনায় জড়িত শিক্ষক মনিরুল ইসলাম ও রতন চন্দ্র দাসকে পরীক্ষার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।