Logo
Logo
×

শেষ পাতা

মনিরামপুরে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষিকাকে পেটালেন যুবলীগ নেতা

থানায় মামলা

Icon

মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৪ আগস্ট ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

মনিরামপুরে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষিকাকে পেটালেন যুবলীগ নেতা

শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের সামনেই চুলের মুঠি ধরে শিক্ষিকাকে বেধড়ক পিটিয়েছেন এক অভিভাবক। মঙ্গলবার দুপুরে যশোরের মনিরামপুর পৌর এলাকার দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। ওই অভিভাবকের নাম মিজানুর রহমান। তিনি পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতির ভাইপো এবং স্থানীয় ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি। নিজের ছেলেকে শিক্ষকদের বেসিনে হাত ধুতে নিষেধ করায় এ ঘটনা ঘটান মিজান। শুধু শ্রেণিকক্ষে নয়, ওই শিক্ষিকাকে চুলের মুঠি ধরে জুতা দিয়ে পেটাতে পেটাতে স্থানীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠ চত্বরে নিয়ে যান তিনি। এ ঘটনায় মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে শিক্ষা অফিসে অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষিকার বাবা। এছাড়া থানায় মামলা করছেন তিনি।

ঘটনার পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন শিক্ষিকা। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ঘটনার দিন পরীক্ষা চলছিল। আমি একটি কক্ষে দায়িত্ব পালন করছিলাম। এ সময় দুর্গাপুর গ্রামের মিজানুর রহমানের ছেলে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র রাকিবুল ইসলাম শিক্ষকদের জন্য নির্ধারিত বেসিনের ট্যাপ খোলার চেষ্টা করছিল। দেখতে পেয়ে নিষেধ করি। এ কারণে ওই শিক্ষার্থী ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে তুই-তোকারি করে গালাগাল করে। তাই তাকে শাসন করি। শিক্ষার্থী বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি বাবা-মাকে বলে। এরপরই শিক্ষার্থীর বাবা মিজানুর রহমান পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আমজাদ হোসেনকে নিয়ে আসে বিদ্যালয়ে। তার সামনেই আমাকে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের সামনে কিল-ঘুসি মারতে শুরু করে। একপর্যায় চুলের মুঠি ধরে পেটাতে পেটাতে টেনে-হিঁচড়ে বিদ্যালয়ের মাঠ চত্বরে নিয়ে যায়। এ দৃশ্য দেখে বিদ্যালয়সংলগ্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এগিয়ে এসে আমাকে রক্ষা করেন। খবর পেয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ইসমত আরা পারভীনসহ অন্য অফিসাররা বিদ্যালয়ে আসেন।’

তবে মারধরের ঘটনা অস্বীকার করেছেন মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, ‘তাকে (শিক্ষিকা) মারধর করা হয়নি। তার সঙ্গে মুখ কালাকালি হয়েছে।’

জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ইসমত আরা পারভীন বলেন, ‘এমন ন্যক্কারজনক ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে। এছাড়া বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে ৩ কর্মদিবসের মধ্যে ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’ এ ব্যাপারে সরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আহম্মেদ শফি বলেন, ‘ঘটনাটি নিন্দনীয় ও দুঃখজনক। ঘটনার সুষ্ঠু বিচার এবং জড়িতদের শাস্তির দাবিতে আমরা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে যাব। ন্যায়বিচার না পেলে কঠোর সিদ্ধান্ত নেবে শিক্ষক সমিতি। মনিরামপুর থানার ওসি শেখ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আসামিকে গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।’ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন বলেন, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক। ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম