সিটি করপোরেশন নির্বাচন: রাজশাহী
বিএনপির অঘোষিত প্রার্থী হচ্ছেন সাহিদ!
সিদ্ধান্ত হলে রোববার মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ
রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ: ০৬ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আসন্ন রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে বিএনপির কেউ অংশ নেবেন না বলে দল থেকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে। তবে প্রাথমিকভাবে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার কথা ঘোষণা করেছেন ছাত্রদলের সাবেক নেতা সাহিদ হাসান। তার অনুসারীরা ইতোমধ্যে নগরীতে গণসংযোগও শুরু করে দিয়েছেন।
সাহিদ হাসান রাজশাহী জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও রাজশাহী-৫ (দুর্গাপুর-পুঠিয়া) আসনের বিএনপি দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য নাদিম মোস্তফার ছোট ভাই। তিনি বলেন, আসন্ন সিটি নির্বাচন কেমন হবে-সেটা আগে ভাবছেন। এখন তিনি সার্বিক পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। খুব শিগগির চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। সিদ্ধান্ত হলে রোববার তিনি মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করবেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি ক্ষমতায় ছিল, তখন নগরীর পাঠানপাড়ার বাসিন্দা সাহিদ হাসানের ব্যাপক দাপট ছিল। বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ভেতরে এখনো তার অনুসারীরা সক্রিয় আছেন। তারাই মূলত সিটি নির্বাচনে তাকে প্রার্থী হতে ক্রমাগত চাপ দিচ্ছেন। তবে রাজশাহী মহানগর ও জেলা বিএনপিসহ কেন্দ্রীয় নেতারা সাহিদকে সিটি নির্বাচনে অংশ না নিতেও চাপ অব্যাহত রেখেছেন।
নেতাকর্মীরা বলছেন, যদিও বিএনপি এই নির্বাচনে কোনো প্রার্থী দেবে না বলে সিদ্ধান্তে অটল আছে, তারপরও সাহিদ হাসান প্রার্থী হলে, তিনি বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীর প্রকাশ্য ও নীরব সমর্থন পাবেন। আর নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু হলে বা ভোটাররা নিজের ভোট দেওয়ার সুযোগ পেলে সাহিদ হাসান বিপুল ভোটে মেয়র নির্বাচিত হবেন।
এদিকে রাজশাহী সিটি নির্বাচনে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও জাতীয় পার্টি তাদের দলীয় মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত করেছেন। অন্যদিকে বিএনপির অঘোষিত প্রার্থী সাহিদ হাসান মেয়র পদে ভোট করলে নির্বাচন তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বীপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে মনে করছেন নগরবাসী।
আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাহিদ বিএনপির অঘোষিত প্রার্থী হলে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়বেন বর্তমান মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
বিএনপির নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা মধ্যে নির্বাচন করার বিষয়ে জানতে চাইলে সাহিদ হাসান বলেন, হঠাৎ করেই এ সিদ্ধান্ত নয়। এর আগেও আমি মেয়র পদে ভোট করার চেষ্টা করেছি। ২০০২ সালে মিজানুর রহমান মিনুকে যখন দ্বিতীয়বার মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়, তখন আমি প্রার্থী হতে চেয়েছিলাম। দোয়া চেয়ে নগরীতে পোস্টার দিয়েছিলাম। তবে আমি দলীয় মনোনয়ন পাইনি। এবার ভোট করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দল হয়তো চাইবে না আমি ভোট করি। কিন্তু তাদেরকেও আমি বোঝানোর চেষ্টা করব। পরিবেশ পরিস্থিতির আলোকেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। তবে এখন পর্যন্ত বলতে পারেন আমি মেয়র পদে প্রার্থী হচ্ছি।
সাহিদ হাসানের প্রার্থী হওয়ার ঘোষণার বিষয়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান বলেন, কয়েকদিন আগে কেউ কেউ রটিয়ে দিল সাবেক ছাত্র ও যুবদল নেতা আবুল কালাম আজাদ সুইট মেয়র প্রার্থী হচ্ছেন। সাহিদের বিষয়েও একই ধরনের কথা ছড়ানো হচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি না সাহিদ সিটি নির্বাচনে অংশ নেবেন। কারণ আমরা এই সরকারের আমলে আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেব না। এটাই দলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
এদিকে সাহিদ হাসানের প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের কারও কাছ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির এক সদস্য বলেন, রাজশাহীতে ১০ বছর আগের বিএনপি আর এখনকার বিএনপির মধ্যে আকাশ পাতাল ফারাক। রাজশাহীতে লিটনের বিরুদ্ধে ভোট করে কেউ সুবিধা করতে পারবেন না। দিনশেষে লিটন আবারও মেয়র হবেন।